Advertisment

প্রকৃত উপভোক্তা নয়, সরকারি বাড়ির টাকা সদস্যার স্বামীকে, কাঠগড়ায় তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত

বাংলা আবাস যোজনায় বড়সড় 'দুর্নীতি'র পর্দাফাঁস করলেন উপভোক্তারাই। অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছে প্রশাসন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tmc run panchayat in Kalna, East Burdwan, accused of giving government house money to someone else instead of actual consumer

বাংলা আবাস যোজনায় বাড়ি তৈরির টাকা না পেয়ে বিডিও-র দ্বারস্থ প্রকৃত উপভোক্তারা। ছবি- প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়।

বাংলা আবাস যোজনার প্রকৃত উপভোক্তার ভাগ্যে জোটেনি বাড়ি তৈরির টাকা। অথচ সেই টাকা পাইয়ে দেওয়া হয়েছে উপভোক্তা নন এমন ব্যক্তিকে। চাঞ্চল্যকর এই অভিযোগ এনে একের পর এক উপভোক্তা দ্বারস্থ হয়েছেন পূর্ব বর্ধমানের
কালনা ১ নং ব্লক প্রশাসনের। তাঁদের মধ্যে এক বিশেষ চাহিদসম্পন্ন উপভোক্তাও রয়েছেন। এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় পড়ে গিয়েছে কালনার প্রশাসনিক মহলে। নিন্দায় সরব বিরোধীরাও। সরকারি বাড়ি তৈরির টাকা নিয়ে এই দুর্নীতির জন্য তৃণমূল পরিচালিত কালনার নান্দাই পঞ্চায়েতকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধীরা।

Advertisment

বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে কালনা ১ নং ব্লকের বিডিও অফিসে হাজির হয়েছিলেন মহসীন মণ্ডল নামে এক বিশেষ চাহিদসম্পন্ন উপভোক্তা। তিনি জানিয়েছেন, তাঁর বাড়ি নান্দাই পঞ্চায়েতের দুপসা গ্রামে। প্রশাসনকে অভিযোগে তিনি বলেন, ''কাগজে-কলমে আমিই বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে ঘর পেয়েছি। তবে ঘরের টাকা আমি পাইনি।'' অন্যায়ভাবে তাঁকে প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ মহসীনের। অন্যায়ভাবে তাঁর নামে থাকা বাংলা আবাস যোজনার ঘরের 'আই ডি' ব্যবহার করে অন্য ব্যক্তিকে সেই ঘর পাইয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।

নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রধান ও গ্রাম সদস্যা মিলে এই প্রতারণা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ বিশেষ চাহিদসম্পন্ন মহসীন মণ্ডলের। তিনি আরও বলেন, ''বিডিও-র কাছে অভিযোগ জানাতে এসেছি বলে আমায় ফোন করে হুমকি দেওয়া হয়েছে। যিনি ফোন করেছিলেন, তিনিই ঘরের টাকা আমায় ফেরত দেবেন বলে জানিয়েছেন। আমি কোনও কথার গুরুত্ব না দিয়ে বিডিও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়ে ঘটনার বিহিত চেয়েছি।''

মহসীন মণ্ডলের মতোই বুলু দেবনাথ নামে আরও এক ব্যক্তিও বাংলা আবাস যোজনা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ জানাতে বিডিও-র দ্বারস্থ হয়েছিলেন। বুলু দেবনাথ নামে ওই ব্যক্তি জানান, নান্দাই পঞ্চায়েতের আশ্রম পাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ি। সরকারি বাড়ি তৈরির টাকা না পেয়ে তিনিও বিডিও-কে অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, বাংলা আবাস যোজনায় তাঁর নামেই ঘর অনুমোদন হয়। কিন্তু তিনিও বাড়ি তৈরির টাকা পাননি। পরে খোঁজ নিয়ে তিনি জানতে পারেন বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে তাঁর 'আই ডি' নম্বর ব্যবহার করে আশ্রম পাড়ার সদস্যার স্বামী ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা তুলে নিয়েছেন। অভিযোগের যাবতীয় 'তথ্য'-সহ বিষয়টি তিনি বিডিও-কে জানিয়েছেন।

আরও পড়ুন- অসহ্য গরম থেকে রেহাই আজই, দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টির পূর্বাভাস

এদিকে, সরকারি বাড়ি তৈরির টাকা নিয়ে দুর্নীতির এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কালনায়। এব্যাপারে কথা বলতে নান্দাই পঞ্চায়েতের প্রধান ঝুমুর ঘোষ ও উপ-প্রধান লিয়াকত শেখকে ফোন করা হয়। যদিও দু’জনের কেউই ফোন তোলেননি। এই অভিযোগ সম্পর্কে তাঁদের প্রতিক্রিয়া এখনও মেলেনি।

যদিও কালনা ১ নং ব্লকের বিডিও সেবন্তী বিশ্বাস বলেন, ''দু’দিনে নান্দাই পঞ্চায়েতের বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পের কাজ নিয়ে ৪-৫ টি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগকারীরা দাবি করেছেন তাঁরাই প্রকৃত বেনিফিসিয়ারি (উপভোক্তা)। কিন্তু তাঁরা প্রকল্পের সুবিধা পাননি। সেই সুবিধা পঞ্চায়েত অন্য কাউকে পাইয়ে দিয়েছে বলে তাঁরা অভিযোগ করেছেন। অফিসারদের নিয়ে অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে। এই সংক্রান্ত 'ডকুমেন্টারি ফাইল' খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বেনিয়ম কিছু হয়ে থাকলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।''

East Burdwan West Bengal Kalna tmc
Advertisment