TMC: বিএসএফ-র ভূমিকা এবং গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অব্যাহত রাজনৈতিক তরজা। বৃহস্পতিবার নিউ টাউনে বিএসএফ ক্যাম্প পরিদর্শন করেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অন্য বিজেপি বিধায়করা। সেখান থেকেই কেন্দ্রীয় এই আধা সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ওঠা ভাষা সন্ত্রাসের সমালোচনা করেন তিনি। পাশাপাশি শাসক দলের ভূমিকার নিন্দা করেন বিরোধী দলনেতা। এরপরেই সক্রিয় হয়ে ওঠে তৃণমূল কংগ্রেস। বিজেপিকে বিঁধে রীতিমতো প্রেস বিবৃতি জারি করে রাজ্যের শাসক দল। বিএসএফ-র প্রতি ঘাসফুল শিবিরের মনোভাব ফুটিয়ে তোলা হয়েছে সেই বিবৃতিতে। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় এই বিষয়ে এদিন সাংবাদিক সম্মেলন করেন। সেই সাংবাদিক সম্মেলনের নির্যাস তুলে দেওয়া হয় প্রেস বিবৃতিতে। তাতে উল্লেখ, ‘বিএসএফ-র কাজ সীমান্ত সুরক্ষিত করা। যাতে ভারতীয়রা নিরাপদে থাকে। ওরা না ঘুমিয়ে যে আত্মত্যাগ করে, তার জেরে আমরা রাতে নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারি। ভারতের গর্ব সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বা বিএসএফ।‘
তৃণমূলের খোঁচা, ‘যদিও বিজেপি বাহিনীকে নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে। পাশাপাশি বিএসএফ-কে, বিজেপি সিকিওরিটি ফোর্স বানাতে চাইছে। বিএসএফ-র প্রতি আমাদের সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা রয়েছে। কিন্তু আজ বিজেপি বিধায়কদের প্রতিনিধি দল কলকাতা সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর সদর দফতরে গিয়েছিলেন। যাদের নেতৃত্বে ছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এই অবস্থান থেকে স্পষ্ট বিজেপি গোটা বিষয়ে রাজনৈতিক রঙ লাগাতে চাইছে। এবং বাহিনীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করছে।‘
এখানেই থামেনি রাজ্যের শাসক দল। তাদের উদ্বেগ, ‘এই টানাপোড়েনের মধ্যে পড়ে যাতে দেশের নিরাপত্তা বিঘ্নিত না হয়। আশা করব বিজেপি, বিএসএফ-র গেরুয়াকরণ করবে না।‘ এদিকে, বৃহস্পতিবার নিউ টাউনের বিএসএফ ছাউনি পরিদর্শনে যান শুভেন্দু অধিকারী। কেন্দ্রীয় এই আধা সামরিক বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে এদিন বিএসএফ-র বিরুদ্ধে চলা ভাষা সন্ত্রাসের প্রতিবাদ করেন বিরোধী দলনেতা। এমনকি, তৃণমূল বিধায়কদের মন্তব্যের সমালোচনায় এদিন সরব হয়েছিলেন নন্দীগ্রামের বিজেপি বিধায়ক। ‘ওদের হয়ে আমরা বাহিনীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে গেলাম’, এভাবেই খোঁচা দেন শুভেন্দু অধিকারী। এদিন নিউটাউনে বিএসএফ-র ছাউনিতে বিএসএফ জওয়ানদের পদ্ম ফুল এবং মিষ্টি খাইয়ে বিজেপি বিধায়করা জওয়ানদের সংবর্ধনা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তাঁর এই কর্মসূচির প্রসঙ্গ ফেসবুকেও পোস্ট করেছেন বিরোধী দলনেতা।
তিনি আরও জানান, সীমান্ত এলাকায় অনেক জনকল্যাণমূলক কাজ করে এই বাহিনী। দুঃস্থদের বস্ত্র বিতরণ থেকে শীতবস্ত্র প্রদান, নিম্নবিত্ত পরিবারের শিশুদের শিক্ষার দায়িত্ব। এই কাজগুলো ওরা দায়িত্ব নিয়ে করে থাকে। আমরা বিজেপি বিধায়করা এসেছি ওদের অভিনন্দন জানাতে। বিএসএফ-র এক্তিয়ারের এলাকা বেড়েছে। এই সিদ্ধান্তে সীমান্ত এলাকায় অনেক বেআইনি কাজ বন্ধ হবে। মাদক, চোরাচালান, সন্ত্রাসবাদী ঢুকে বসে থাকা ইত্যাদি ইত্যাদি।
এমনকি, রাজ্যজুড়ে চলা ৫০টি গরুর হাট অবিলম্বে বন্ধের পক্ষে সুর চড়ান শুভেন্দু অধিকারী। বিএসএফ-র কাজটা ঠিক কী? এই প্রশ্নের জবাবে শুভেন্দু বলেন, ‘বিএসএফ তিনটি কাজ করে, তল্লাশি, বেআইনি পাচার আটকানো এবং অনুপ্রবেশ রোখা। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এলাকার এক্তিয়ার বাড়লেও, ক্ষমতা একই থাকছে। বাকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব রাজ্য পুলিশের। সেই ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ করা হয়নি। শুধু মিথ্যা প্রচার চলছে।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন