Advertisment

সম্পত্তি বৃদ্ধির তালিকায় অধীর-সূর্য-কান্তি-অশোক, তৃণমূলের নিশানায় বিরোধীরা

বুধবার রাজ্যের ছ'জন মন্ত্রী একযোগে বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে এই ইস্যুতে 'প্রকৃত সত্য' প্রকাশের চেষ্টা করেছন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
tmc slams cpim and congress on income rise allegation issue

সম্পত্তি বৃদ্ধি ইস্যুতে আদালতের নজরে বাম আমলের একাধিক মন্ত্রী।

তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীদের সম্পত্তির পরিমাণ লাফিয়ে বাড়ছে। আয়ের উৎস খতিয়ে দেখতে ২০১৭ সালে জনস্বার্থ দায়ের হয়েছিল। সেই মামলায় সম্প্রতি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছে হাইকোর্ট। ১৯ জন নেতা, মন্ত্রীর সম্পত্তি বৃদ্ধি সংক্রান্ত মামলায় ইডি-কেও পার্টি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যা নিয়েই জোড়া-ফুলের বিরুদ্ধে সোচ্চার বিরোধী দলগুলি। কিন্তু, বুধবার রাজ্যের ছ'জন মন্ত্রী একযোগে বিধানসভায় সাংবাদিক বৈঠক করে এই ইস্যুতে 'প্রকৃত সত্য' প্রকাশের চেষ্টা করেছন। তাঁরা দাবি করেছেন সম্পত্তি বৃদ্ধি মামলায় নাম রয়েছে সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় সহ রাজ্যের একাধিক প্রাক্তন মন্ত্রী ও সিপিএম নেতাদের। এছাড়াও তালিকায় নাম রয়েছে অধীর চৌধুরীরও।

Advertisment

এ দিন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, 'আজই আদালতের নির্দেশের সম্পূর্ণ কপি আপলোড হয়েছে। সেটাই পেয়েছি। ওই কপির তালিকায় নাম রয়েছে অধীর চৌধুরী, সূর্যকান্ত মিশ্র, অশোক ভট্টাচার্য, কান্তি গাঙ্গুলি, আবু হেনা, ফণীভূষণ মাহাতো, ধীরেন বাগদি, রূপরানি মণ্ডল, চন্দন সাহা, মোহিত সেনগুপ্ত, নেপাল মাহাতো।'

ব্রাত্যর অভিযোগ, 'আদালতের পর্যবেক্ষণ নিয়ে কিছু বলার নেই। কিন্তু জনস্বার্থ মামলার রায়ের পুরো অংশ গত কয়েকদিন তুলে ধরা হল না। গত দু’দিন ধরে এই ধারণা তৈরি হল যে তৃণমূলের লোকেদেরই শুধু সম্পত্তি বেড়েছে। কেন?'

শিক্ষামন্ত্রীর দাবি, 'আদালতের রায়ে যেমন তৃণমূল নেতার নাম রয়েছে, তেমনই অন্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের নামও আছে। কিন্তু বিরোধীরা একপেশে আক্রমণ করছেন। কেবল মাত্র একটি রাজনৈতিক দলকে খাপ পঞ্চায়েত বসিয়ে আক্রমণ করা হচ্ছে।'

আরও পড়ুন- ‘পার্থ-র জন্য লজ্জিত, কিন্তু তৃণমূলের সবাই চোর নয়’, দাগিয়ে দেওয়ার বিরুদ্ধে সোচ্চার ফিরহাদ

মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, 'সম্পত্তি বাড়তেই পারে। আমি ব্যবসা করে সম্পত্তি বাড়িয়েছি। মানুষের সেবাও করি। মানুষের কাজ করার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নিজেদের সুখ শান্তি রেখে রাস্তায় নেমেছিলাম। সুযোগ পেয়েই কখনও রাজনৈতি উদ্দেশ্যে, কখনও চক্রান্ত করে আমাদের অসম্মমানিত করা হচ্ছে।'

এপ্রসঙ্গে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য বলেছেন, 'ওরা বিধানসভায় এই নিয়ে প্রশ্ন তুলছে না কেন? আমি ২০ বছর ধরে মন্ত্রী ছিলাম, সূর্য মিশ্রও তাই। আমি তারপরও বিধায়ক হয়েছি। ভোটের সময় প্রতিবার তথ্য দিয়েছি। এখ ওরা চোরের বদনাম ঘোচাতে আমাদের নাম করছে। আদালত তথ্য চাইলে সব দেব।' বাম জমানার আরেক মন্ত্রী কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, 'চোরের মায়ের বড় গলা। চোরেদের মুখে এত কথা মানায় না। কে ফিরহাদ, কে ব্রাত্য? কেন তাঁদের কথার জবাব দেব? আদালত কী বলেছে সেটা দেখুন।'

তৃণমূলের নিশানায় প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও। তিনি বলেছেন, 'কথায় বলে চোরের মায়ের বড় কথা। আমার সম্পত্তির হিসাব ভোটের সময় প্রতিবারই দেওয়া হয়। আদালত চাইলে আবার দেব। আমি চাই কেন্দ্র ও রাজ্যের গোয়েন্দারা তদন্ত করুক। বাস্তবে আমার সম্পত্তি তেমন নেই। কিন্তু তৃণমূলের খাতায় আমার সম্পত্তি বাড়ছে দেখে ভাল লাগছে।'

২০১৭ সালে বিপ্লব কুমার চৌধুরী ও অনিন্দ্য সুন্দর দাস কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। সেই মামলার মূল বিষয় ছিল, ২০১১ সালে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচনী হলফনামায় সম্পত্তির যে পরিমাণ দেখানো হয়েছিল, পরবর্তী ৫ বছরে তা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কীভাবে এই বৃদ্ধি হল? এই প্রশ্ন তুলে ২০১৭ সালে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়। তালিকায় নাম দেওয়া হয়, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, মলয় ঘটক, গৌতম দেব, ইকবাল আহমেদ, ফিরহাদ হাকিম, স্বর্ণকমল সাহা, ব্রাত্য বসু, জাভেদ খান, অরূপ রায়, আবদুর রেজ্জাক মোল্লা, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সব্যসাচী দত্ত, শিউলি সাহা ও বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের। যেহেতু বিষয়টি সম্পত্তি নিয়ে তাই এই মামলায় ইডিকে পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ।

adhir choudhury bratya basu Ashok Bhattacharya West Bengal Firhad Hakim Surykant Mishra Kanti Ganguly Income Assesment
Advertisment