Arabul Islam's nameplate removed: আরাবুলের ঘর দখল! ১৬ বছর পর ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে গৃহহীন আরাবুল। ১১ বছর পর ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতি থেকে সরানো হল আরাবুলের নেমপ্লেট! সভাপতির ঘরে এখন সহ-সভাপতি ও শওকত মোল্লা ঘনিষ্ঠ খাইরুল ইসলাম। জামিন পাওয়ার পর আজই জেল থেকে ফেরার সম্ভাবনা ভাঙড়ের তাজা নেতার। তিনি কি ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে যাবেন? এখন সেই প্রশ্ন ভাঙড় জুড়ে!
২০০৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতিতে বোর্ড গঠন করে তৃণমূল। সভাপতি হন আমিনা বেগম বিশ্বাস। আরাবুল তখন বিধায়ক। বিধায়ক হওয়ায় পঞ্চায়েত সমিতিতে ছিল তাঁর বসার ঘর। বিধায়ক পদ খুইয়ে ২০১৩ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হন আরাবুল। পাকাপাকি ভাবে নেমপ্লেট দিয়ে আরাবুলের নামে আধুনিক মানের ঘর তৈরি হয়। যা অক্ষয় হয়ে ছিল ২০২৪ সালের ৯ জুন পর্যন্ত। ২০১৮ সালে ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি হলেও নিজের ঘর ছাড়েননি তিনি। ২০২৩ সালে আবার সভাপতি হন আরাবুল। ঘর সেই একই রেখে দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় থাকার পরও সেই ঘর থেকেই সরলো আরাবুলের নেমপ্লেট। প্রশ্ন ভাঙড়ে কি তাহলে আরাবুলের রাজনৈতিক জীবনের সমাপ্তি!
প্রায় পাঁচ মাস জেলবন্দি থাকার পর অবশেষে জামিন পেলেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম। যদিও তার জামিন নিয়ে নিরুত্তাপ ভাঙড়। কোথাও কোনও উচ্ছ্বাস বা বিজয় মিছিল নেই। জামিনের কদিন আগেই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে খুলে নেওয়া হল আরাবুল ইসলামের নেমপ্লেট। সহ-সভাপতিকে পঞ্চায়েত সমিতির চার্জ দেওয়ায় সহ-সভাপতি সোনালি বাছাড় বসলেন আরাবুলের চেয়ারে। আর তাঁর পাশে বসে পঞ্চায়েত সমিতি পরিচালনা করলেন আরাবুল বিরোধী খাইরুল ইসলাম। এই খাইরুলকে খুন করার ছক কষেছিলেন আরাবুল ইসলাম, যা নিয়ে জনসমক্ষে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শওকত মোল্লা। আরাবুলের জামিন প্রসঙ্গে তাঁর ছেলে হাকিমুল ইসলাম-সহ আরাবুল ইসলাম ঘনিষ্ঠরা কেউ কিছুই বলতে চাইছে না প্রকাশ্যে।
আরাবুলের বিরুদ্ধে খুন-সহ ৯টি মামলা রুজু হয়। এবছর ৮ ফেব্রুয়ারি আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে উত্তর কাশীপুর থানার পুলিশ। তারপর পোলেরহাট, ভাঙড় থানা এলাকায় বেশ কয়েকটি ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে নাম জড়ায় আরাবুলের। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একাধিকবার নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ। এরপর পুলিশের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আরাবুল। এমনকি তাঁর স্ত্রী জাহানারা বিবিও আরাবুলের বিরুদ্ধে কী কী মামলা রয়েছে তা জানতে চেয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন।
এদিকে আরাবুল জেলে থাকার পর লোকসভা ভোটের আগেই তাঁকে ভাঙড় ২ ব্লক তৃণমূলের আহ্বায়কের পদ থেকে সরিয়ে দেয় দল। লোকসভা নির্বাচনে আরাবুলহীন ভাঙড়ে শওকত মোল্লার নেতৃত্বে তৃণমূল ভাল মার্জিনে জেতে। তারপরই ৯ জুন ভাঙড় ২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি সোনালি বাছাড়কে কার্যকরী সভাপতি করা হয় আরাবুল ইসলামের জায়গায়। শুধু তাই নয়, আরাবুল জামিন পাওয়ার আগেই তাঁর নামাঙ্কিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির বোর্ড খুলে ফেলা হয়। জামিন পাওয়ার আগেই কী কারণে আরাবুলের নাম লেখা সভাপতির বোর্ড খুলে ফেলা হল, তা নিয়ে জানতে চাওয়া হলে শওকত মোল্লা বলেন বিষয়টি জানেন না। খোঁজ নিয়ে দেখবেন।