চতুর্থ দফার ভোটের আগের দিন রাতে কুপিয়ে বোমা মেরে খুন কেতুগ্রামের তৃণমূল কর্মীকে। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত দুজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ভুলন শেখ ও শামসুর শেখ নামে দুই গ্রামবাসীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বাংলায় লোকসভা ভোট-পর্ব অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করতে নানা পদক্ষেপ করেছিল নির্বাচন কমিশন। তবুও প্রাণহাণি রোখা গেল না। চতুর্থ দফার ভোটের আগের রাতেই হিংসার বলি পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের তৃণমূল কর্মী মিন্টু শেখ (৪৫)।
কুপিয়ে ও বোমা মেরে তাঁকে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। এই খুনের দায় সিপিএমের ঘাড়ে চাপিয়েছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম। এই প্রসঙ্গে সিপিএমের জোনাল কমিটির সদস্য অচিন্ত্য মল্লিক বলেন, "সিপিএম খুন-সন্ত্রাসের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। তৃণমূল তাদর রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে সেই অভিযোগ করতে পারে। নিহতের পরিবার কী বলছে? মিন্টু শেখ কিছুদিন ধরে তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছিল। তৃণমূলের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর তার উপর রাগ ছিল। নির্বাচনের আগেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণেই খুন হতে হল মিন্টু শেখকে। তার স্ত্রী তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি-সহ ৭-৮ জনের নাম করেছেন।"
কেতুগ্রামের তৃণমূল নেতৃত্বের কথায় জানা গিয়েছে, মিন্টু শেখ তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী । রবিবার সন্ধ্যায় দলের কাজে মিন্টু স্থানীয় সুদিপুর গ্রামে যায়। সেখান থেকে ফিরতে ফিরতে একটু রাত হয়ে যায়। মিন্টু শেখ তাঁর এক সঙ্গীকে বাইকে চাপিয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। পথে কেতুগ্রামের চেঁচুড়িতে কয়েকজন যুবক তার বাইক আটকায়৷ মিন্টু বাইক থামাতেই ধারাল অস্ত্র দিয়ে তাকে কোপানো শুরু করে তারা ৷ তারপরে বোমা মেরে মিন্টুকে খুন করে আততায়ীরা পালিয়ে যায় অভিযোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে খবর পেয়ে কেতুগ্রাম থানার আই সির নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ ও কেন্দ্রীয় বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে মৃতদেহ উদ্ধার করার পাশাপাশি উত্তেজনা সামাল দেয়। তারপরেই আততায়ীদের খোঁজে পুলিশি তৎপরতা শুরু হয় । কেতুগ্রামের বিধায়ক শেখ শাহনওয়াজ বলেন, “মিন্টু আমাদের দলের দায়িত্বশীল কর্মী ছিল। তাই ওকে টার্গেট করা হয় । খুনিদের দ্রত গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে পুলিশের কাছে"।
এদিকে কেতুগ্রামে তৃণমূল কর্মী খুনের ঘটনা নিয়ে উত্তেজনা চরমে উঠার মাঝেই রাতে বর্ধমান পূর্ব লোকসভা অধীন পূর্বস্থলী দক্ষিণ বিধানসভার নিচু চাপাহাটি এলাকায় অশান্তি ছড়ায় । এখানকার বিজেপি কর্মীদের ধারালো অস্ত্র নিয়ে ভয় দেখানো খুনের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে । বর্ধমান পূর্বের বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার। তাঁর অভিযোগ বলেন, “তৃণমূলের কিছু গুণ্ডা বাহিনী আমাদের কর্মীদের বিভিন্ন জায়গায় হুমকি দিচ্ছে। সোমবার ভোট কেন্দ্রমুখী হলে তাদের প্রাণের মেরে দেওয়ারও হুমকি দেওয়া হয়েছে"। যদিও এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন,“সব মিথ্যা অভিযোগ । বরং ওরা আমাদের কর্মীদের গালিগালাজ করেছে। ভোটে এলাকার মানুষ ওদের জবাব দেবে"।