বিরোধী দলনেতার সুস্থতা কামনা করে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের ‘গান্ধীগিরি’ কর্মসূচি ঘিরে সোমবার উত্তাল হয়েছে কাঁথি। গোলাপ আর অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি দেওয়া ‘গেট ওয়েল সুন’ কার্ড হাতে শুভেন্দু অধিকারীর বাড়ি শান্তিকুঞ্জের কাছে হাজির হয়েছিলেন শাসক দলের ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে প্রথমে ধস্তাধস্তি, পরে ধুন্ধুমার অবস্থা হয়। টিএমসিপি কর্মীদের এই জমায়েতের নেপথ্যে অভিসন্ধির গন্ধ পাচ্ছেন শুভেন্দুবাবু। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিরোধী দলনেতা। বুধবারই বিচারপতি রাজশেখর মান্থার এজলাসে এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা।
শুভেন্দু অধিকারী কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। তাঁকে ঘিরে থাকে সিআইএসএফ জওয়ানরা। বিচারপতি এই মামলায় সিআরপিএফ-কেও পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছেন এ দিন।
তৃণমহলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছেন, 'খুবই চিন্তার বিষয়। ভেভেছিলাম ফুল, অভিষেকের ছবি দেওয়া কার্ড দিলে ওনার মাথার দোষ ঠিক হবে। কিন্তু এতো মাথার ব্যামো আরও বেশি বলে মনে হচ্ছে। আসলে শুভেন্দুর লড়াই বাইরে তৃণণূলের সঙ্গে, আর ভিতরে সুকান্ত দিলীপ ঘোষদের সঙ্গে। নন্দীগ্রাম, পূর্ব মেদিনীপুরে আদি বিজেপি ধসে গিয়েছে। ওঁকে কেউ সহ্য করতে পারে না। ফলে মানসিক অবসাদে ভুগছে ও। তাঁ ভেবেছিলাম শুভেচ্ছাবার্তা পাঠালে ঠিক হবে। কিন্তু ও অভিসন্ধি দেখে সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেছে। দেখা যাক কোর্ট কী নির্দেশ দেয়।'
আরও পড়ুন- এই রাজভবনই ছিল শুভেন্দুদের আস্থাস্থল, রাজ্যপাল বদলাতেই পাল্টে গেল ছবি
তৃণমূলের এই শুভেচ্ছা কর্মসূচির সূত্রপাত অভিষেকের তিন বছরের ছেলে আয়াংশের জন্মদিন নিয়ে বিরোধী দলনেতার অভিযোগকে কেন্দ্র করে। রবিবার বিকেলে টুইট করে শুভেন্দু অভিযোগ করেছিলেন যে, কয়লা 'ভাইপো'র ছেলের জন্মদিনের পার্টি উপলক্ষে আলিপুরের একটি অভিজাত হোটেলে ৫০০ পুলিশকর্মী, বম্ব স্কোয়াড ও ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করা হয়েছে।
শুভেন্দুর টুইট-আক্রমণকে ‘মিথ্যাচার’ বলে দাবি করেছিলেন কুণাল ঘোষ। বিরোধী দলনেতার মানসিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে সুস্থতা কামনা করে তাঁর কাছে গোলাপ ও কার্ড পাঠানোর কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন।
সেই মতো সোমবার বেলা বাড়তেই কাঁথিতে শুভেন্দুবাবুর বাড়ির কাছে লাল গোলাপ ও অভিষেকের ছবি দেওয়া কার্ড হাতে পৌঁছে যায় টিএমসিপি-ক কর্মীরা। কিন্তু ওই মিছিলকে বাধা দেয় পুলিশ। যার জেরে শান্তিকুঞ্জের কাছে উত্তেজনা ছড়ায়। বাধা পেয়ে পুলিশের হাতেই কার্ড ও ফুল দিয়ে চলে যান কলেজ পড়ুয়ারা।
পরে শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেন, তিনি বাড়ি থেকে বের হওয়ার পরেই তৃণমূল তাঁর বাড়ির সামনে যায়। এতে বাড়িতে তাঁর প্রবীণ বাবা, মায়ের সমস্যা হয়েছে। আদালতে বিরোধী দলনেতার দাবি, এই জমায়েত ঘোষণার পরই পুলিশকে সব জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা তেমন কোনও পদক্ষেপ করেনি।