'রাফ অ্যান্ড টাফ', পরস্পর বিরোধী দুই শিবিরের হলেও লকেট চট্টোপাধ্যায় ও কুণাল ঘোষ সম্পর্কে এই উপমা দেওয়াই যায়। যেকোনও বিষয় এই দুই রাজনীতিবিদই চাঁচাছোলা বক্তব্য দেন। নানা যুক্তিতে তুলোধনা করেন বিরোধী দলের। এমনকী, একবছর আগেই লকেট ও কুণালের টুইট যুদ্ধ ছিল নজরকাড়া। সেই রেশ ছিল বেশ কয়েক মাস। এসবের মধ্যেই শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে আচমকা বিজেপির হুগলির সাংসদের প্রশংসা শোনা গেল তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদকের মুখে।
এ দিন তৃণমূল বিধায়ক অসিত মজুমদারের দলবদলের ইঙ্গিত দেওয়া পোস্টার ঘিরে শোরগোল পড়ে যায় হুগলির চুঁচুড়ায়। পদ্মে যাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে অসিত মজুমদার দাবি করেন, 'বিজেপি উন্মাদ না হলে মদ্যপ। আমার কাছে খবর আছে লকেটই নাকি তৃণমূলে আসবেন। আমার বিজেপিতে যাওয়ার খবর ওরা কোথা থেকে পেল?' পাল্টা লকেট বলেছেন, 'এ সব নিয়ে কিছু বলা মানে ওঁকে নম্বর দেওয়া। লাঠি নিয়ে উনি বিজেপি কর্মীদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। গুন্ডামি, দুর্নীতি ওদের দলের মজ্জাগত। ওদের কথার কোনও মূল্য আছে না কি?'
এ প্রসঙ্গ সাংবাদিক বৈঠকে উত্থাপিত হতেই কুণাল ঘোষ বলেন, 'লকেট পুরনো দিনের পরিচিত। ভাল অভিনেত্রী। একটা সময় লকেট আমার ভাল বন্ধু ছিল। ওঁর রাজনীতিতে আসাও আমার সঙ্গে। আমার সঙ্গেই ও দিদির কাছে গেছিল। পরবর্তীতে ও বিজেপিতে গিয়েছে। হতে পারে অন্য দলের, তবে ওঁর যখন যা দায়িত্ব ছিল সেটা করেছে। কিন্তু আপাতত ওকে ওখানে কোণঠাসা করতে করতে যা করেছে। ও তো পাহাড়ে ঘুরে বেড়াত। বাংলার নির্বাচনে ওঁকে দেখা যায়নি। বিধানসভা নির্বাচনে নিজে হেরেছেন, ওঁর সংসদীয় এলাকার সব বিধানসভা কেন্দ্রেরও বিজেপি হেরে গিয়েছে। তবে, ও পরিচিত।'
এগত বছর পুজোর সময় লকেটের পদ্ম-ফুল ছেড়ে ঝোড়-ফুলে আসার জল্পনা তৈরি হয়েছিল। তারপরই কুণাল-লকেট টুইট যুদ্ধ চলেছিল। শনিবাসরীয় দুপুরে লকেট প্রসঙ্গে কুণালের নরম অবস্থান ফের নয়া জল্পার ইঙ্গিতবাহী বলেই মনে করা হচ্ছে।
কেমন ছিল কুণাল-লকেট টুইট যুদ্ধ?
ভবানীপুর উপনির্বাচনের বিজেপির তারা প্রচারকের তালিকায় নাম ছিল সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের। সেই সময় কুণাল ঘোষ টুইটে লিখেছিলেন, 'ভবানীপুরে প্রচারে না আসার জন্য তারকা প্রচারক লকেট চট্টোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা। বিজেপির অনেক অনুরোধ সত্ত্বেও আপনি প্রচার করেননি। আপনি যেখানেই থাকুন বন্ধু হিসাবে আপনার সাফল্য কামনা করি। এই ছোট্ট পৃথিবীতে আপনার জীবনে রাজনীতির সেই শুরুর দিনগুলি আবার ফিরে আসুক।'
পাল্টা জবাবে লকেট চট্টোপাধ্যায় টুইটে লিখেছিলেন, 'আপনার উচিত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে ভবানীপুরের না হারেন, সে বিষয়ে মনোনিবেশ করা।'
আরও পড়ুন- রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ: এখন কী করা উচিত? যুক্তি দিলেন মমতার মন্ত্রী
কুণাল যার উত্তরে লিখেছিলেন, 'দুশ্চিন্তা করবেন না। ভবানীপুরে বড় মার্জিনে জয় পাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আপনিও মনে মনে তাই নিশ্চয় চান। কিন্তু তবু আপনাকে দলের পক্ষে লিখতে হচ্ছে। তবে তারপরেও আপনি যে বিজেপি প্রার্থীর নামটা উচ্চারণ করলেন না, সেই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কাহি পে নিগাহে কাহি পে নিশানা, ওয়েলডান।'