কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থাকে আগেই নিশানা করেছে তৃণমূল। শুভেন্দু অধিকারীকে রক্ষাকবচ সংক্রান্ত বিচারপতি মান্থার নির্দেশ নিয়ে প্রশ্ন তোলে রাজ্যের শাসক দল। এই বিতর্কে সোমবার নয়া মোড়। ছবি দিয়ে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার বিরুদ্ধে পোস্টার পড়েছে যোধপুর পার্ক, হাইকোর্ট পাড়ায়। তবে এই পোস্টার কারা মেরেছে তা স্পষ্ট হয়নি।
কী লেখা আছে পোস্টারে?
পোস্টারে চার জনের ছবি রয়েছে। সব পোস্টারেই বড় করে দেওয়া আছে বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার ছবি। এছাড়া একটিতে, এক ফ্রেমে অমিত শাহ, শুভেন্দু অধিকারীর ছবি, অন্যটিতে রয়েছে বিচারপতি মান্থা এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকা মেনকা গম্ভীরের ছবি।
পোস্টারে কড়া ভাষায় বিচারপতিকে আক্রমণ করা হয়েছে। লেখা রয়েছে, 'লজ্জা, বিচার ব্যবস্থার নামে কলঙ্ক। শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে ওঠা মামলায় স্থগিতাদেশ দিয়ে দেওয়া হল। এমনকী তাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ দায়ের করার ব্যাপারে জারি হল নিষেধাজ্ঞা। বিচারপতি হয়ে তিনি এটা করতে পারেন না। অথচ ইডি-র কাছে মধ্যরাতে লাঞ্ছিত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের শ্যালিকার ন্যায্য রক্ষাকবচ প্রত্যাহার করে নিলেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা।'
আরও পড়ুন- এবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার এজলাস বয়কট, আইনজীবীদের হাতাহাতি, পোস্টার যোধপুর পার্কে
যোধপুর পার্ক এলাকাতেই থাকেন বিচারপতি মান্থা। এইসব পোস্টার রাতের অন্ধকারে লাগানো হয়েছে বলে দাবি বিচারপতির বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর। যেহেতু শুভেন্দু অধিকারীর নাম ও তাঁর পক্ষে রায় এবং বিচারপতি মান্থার নির্দেশ দিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে তাই অনেকেই মনে করছেন সেগুলি শাসক দলের কোনও ঘনিষ্ঠের কাজ হতে পারে। মামলায় নির্দেশ পছন্দ না হাওয়ায় এইভাবে কোনও বিচারপতিকে নিশানা করা কী আদোতে বিচার ব্যবস্থার প্রতিই অনাস্থা প্রদর্শন নয়?
কী বললেন কুণাল ঘোষ?
জবাবে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, 'কারা কোথায় কী পোস্টার মেরেছে জানি না। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমাদের পূর্ণ সম্মান রয়েছে। তৃণমূল বিচার ব্যবস্থা, আদালত ও আইনের উপর পূর্ণ সম্মান রাখে। বিচারপতিরা আমাদের কাছে শ্রদ্ধেও। কোথাও কোনও সমস্যা হলে সাময়িক কিছু রায় বা পর্যবেক্ষণের উপর মতপার্থক্য হতে পারে। তা বলে বিচার ব্যবস্থার প্রতি শ্রদ্ধা নষ্ট হবে তেমনটা নয়। আমরা সিপিআইএম নয় যে বলব, বিচারপতি লালা বাংলা ছেড়ে পালা।'
এর আগে বিচারপতি মান্থাকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন কুণাল ঘোষ। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু আধিকারীর বিরুদ্ধে কোনও এফআইআর করা যাবে না বলে রক্ষাকবচের নির্দেশ দিয়েছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা। যার বিরুদ্ধে সরব হয়ে তৃণমূলের মুখপাত্র তথা রাজ্য সাধারাণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেছিলেন, ‘শুভেন্দু বেপরোয়া। পুলিশের বিরুদ্ধে যা নয় তাই কথা বলছেন। পুলিশকে মানছেন না। আইনশৃঙ্খলা পৈতৃক সম্পত্তি বলে মনে করছেন। তাঁর এই বেপরোয়া মনোভাবের কারণেই বুধবার সন্ধ্যায় আসানসোলে দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা (কম্বল বিতরণের অনুষ্ঠানে পদপিষ্ঠ হয়ে তিন জনের মৃত্যু) ঘটেছে। এর জন্য একমাত্র দায়ী বিচারপতি রাজশেখর মান্থা। তবে বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার সম্মান আছে।’ বিচারপতির ‘জ্যোতিষী’ কিনা তা নিয়েও কুণাল ঘোষ প্রশ্ন তুলেছিলেন।