দলবিরোধী কাজের জন্য একঝাঁক দলীয় নেতা-নেত্রীকে রীতিমতো বহিষ্কার করল মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। পাশাপাশি আরও বেশ কয়েকজন সংখ্যালঘু তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধেও দলবিরোধী কাজের অভিযোগ রাজ্য নেতৃত্বকে জানিয়েছেন মালদা জেলা তৃণমূলের নেতারা। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মুখে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলতে দলেরই নেতা-নেত্রীদের একাংশ বিরোধীদের সঙ্গে তলে তলে সম্পর্ক রেখে গোঁজ প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে আগেই অভিযোগ করেছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি। সেইমতো দলীয় নেতৃত্ব তথা বিভিন্ন এলাকার ব্লক কমিটি, বুথ কমিটি, অঞ্চল কমিটির নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করার পর অবশেষে দলেরই বেশ কিছু নেতা-নেত্রীকে বহিষ্কার করার সিদ্ধান্ত নিলেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
রবিবার দুপুরে মালদা শহরের স্টেশন রোড সংলগ্ন এলাকায় তৃণমূলের জেলা কার্যালয়ে বৈঠক করেন দলের জেলা সভাপতি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন জেলায় দলের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক সমর মুখার্জি। সেখানেই দলবিরোধী কাজের জন্য বেশ কিছু নেতাকে বহিষ্কারের কথা জানিয়ে দেওয়া হয়।
এদিন মানিকচকের মালদা জেলা পরিষদের তৃণমূলের বিদায়ী সদস্যা সাবিনা ইয়াসমিনকেও দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি ইংরেজবাজার ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি চন্দন ঘোষকেও একই অভিযোগে বহিষ্কার করা হয়েছে। হবিবপুর ব্লক তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক সৌগত সরকারকেও দলবিরোধী কাজের জন্য বহিষ্কার করেছেন মালদা জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে দলের সংখ্যালঘু সেলের জেলা সভাপতি মোশারফ হোসেন ও সংখ্যালঘু সেলের জেলা চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামকে দল থেকে বহিষ্কারের জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে আবেদন জানানো হয়েছে।
রবিবার সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূলের জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সি জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এইসব নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধে দলে থেকে দলের বিরোধিতা করার অভিযোগ উঠে আসছিল। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি সম্পন্ন এবং এলাকায় সুনাম রয়েছে, এমনই নেতা-নেত্রীদের প্রার্থী করেছেন রাজ্য তৃণমূল নেতৃত্ব। কিন্তু, পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হতেই বিভিন্ন এলাকায় এইসব অভিযুক্ত নেতা-নেত্রীরা দলবিরোধী কাজকর্ম চালিয়ে আসছিলেন। বিরোধীদের সঙ্গে গোপন সম্পর্ক রেখে তৃণমূলকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন- বিরোধীদের জবাবে মাস্টারপ্ল্যান রেডি! উত্তর-দক্ষিণ ভাগাভাগি করে প্রচারে মমতা-অভিষেক
এনিয়ে জেলার সমস্তস্তরের সংগঠনের সঙ্গে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব আলোচনা করে একটি তালিকা রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠায়। তারপরেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ওইসব নেতা-নেত্রীদের বহিষ্কার করা হল। আরও বেশ কয়েকজনের নাম ইতিমধ্যে বহিষ্কারের জন্য রাজ্য নেতৃত্বের কাছে পাঠানো হয়েছে। রহিম বক্সি জানিয়েছেন, রাজ্য নেতৃত্বের সিদ্ধান্তের কথা জানার পর তাঁরা আবার সাংবাদিক বৈঠক করে দলবিরোধী কাজের জন্য ওইসব নেতা-নেত্রীদের বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করবেন। যদিও, রবিবার যাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হল, তাঁরা সকলে আগেই তৃণমূল ত্যাগ করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।