scorecardresearch

অপরাধ ‘ট্রান্সজেন্ডার’, দাদার মারে গুরুতর আহত যাদবপুরের গবেষক, বাঁচতে অন্যত্র আশ্রয়

শেষ পর্যন্ত অনুরাগ মৈত্রেয়ীর সহযোগিতায় যাদবপুরের আক্রান্ত গবেষক পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন।

Transgender activist Shirsho Basu beaten up by family member
শীর্ষ বসু। ছবি-সংগৃহীত

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক। কিন্তু, মারকুটে দাদার কাছে তাঁর এই পরিচয় যথেষ্ট নয়। তার চেয়েও বড় পরিচয় শীর্ষঙ্কর ওরফে শীর্ষ বসু ‘ট্রান্সজেন্ডার’ বা রূপান্তরকামী। সঙ্গে, আবার শারীরিকভাবে দুর্বল। আর, তার সাজা গালাগালি, অপমান, মারধর। কিন্তু, পরিবারের সম্মান, ‘নিজের দাদা’র প্রতি ভালোবাসা। এই সব বাধ্যবাধকতা শীর্ষঙ্করের হাত-পা বরাবর বেঁধে রেখেছিল। কিন্তু, সব সীমা পেরিয়ে গেল ১৯ মার্চ, রবিবার। শুধুমাত্র ‘ট্রান্সজেন্ডার’ হওয়ার ‘অপরাধ’-এ শীর্ষকে অমানুষের মত মারধর করেছেন তাঁর দাদা। এমনটাই অভিযোগ ওই গবেষকের। ঘটনাটি ঘটেছে পাটুলি থানা এলাকার গাঙ্গুলিবাগান মোড়ে, ১ নম্বর ডাবুর পার্কের এক ফ্ল্যাটে।

শীর্ষ বসুর মারকুটে দাদার কীর্তি। (ছবি- সংগৃহীত)

ওই গবেষকের অভিযোগ, ঘটনার দিন সকাল থেকেই তাঁর দাদা বাড়িতে সমস্যা তৈরি করছিলেন। বারবার বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছিলেন। এই নিয়ে তিনি সামান্য প্রতিবাদ করতেই তাঁকে একটানা লাথি, চড়, কিল, ঘুষি মারেন অভিযুক্ত। চুলের মুঠি ধরে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। এই সব তাণ্ডবে তিনি প্রায় আধমরা অবস্থায় পৌঁছে গেলে, বাড়ির পরিচারিকাকে দিয়ে ওই গবেষককে পাঠানো হয় কেপিসি হাসপাতালে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকের কাছে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ওই ট্রান্সজেন্ডার গবেষককে বলতে বাধ্য করানো হয়, তিনি সিঁড়ি থেকে পড়ে গিয়ে চোট পেয়েছেন। অথচ, ডাক্তারি পরীক্ষায় তাঁর হাতে-পায়ে আঁচড়ানো, শরীরে কামড়ানোর চিহ্ন স্পষ্ট ধরা পড়েছে। কাঁধের হাড়ও সরে গিয়েছে।

খবর পেয়ে ছুটে আসেন সমাজকর্মী অনুরাগ মৈত্রেয়ী। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই শীর্ষ বসুর পরিচিত। তাঁর বাড়িতেও বহুবার গিয়েছেন, পরিবারের সদস্যদের ভালো করে চেনেন। অনুরাগ মৈত্রেয়ীর অভিযোগ, ‘শীর্ষ বসুর বাড়িতে যাওয়ার জন্য আমাকেও ওঁর দাদা কম অশালীন কটাক্ষ করেননি!’ অনুরাগ মৈত্রেয়ী জানিয়েছেন, শীর্ষ বসুর মা কেন্দ্রীয় সরকারের অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। তিনি ক্যানসার-সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। যার ফলে নিজের ছোট সন্তানের প্রতি বড় সন্তান অত্যাচার করছে দেখেও তিনি প্রতিবাদ করার জোর পান না।

শেষ পর্যন্ত অনুরাগ মৈত্রেয়ীর সহযোগিতায় যাদবপুরের আক্রান্ত গবেষক পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। সেই অনুযায়ী তাঁর ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। পাশাপাশি, শীর্ষঙ্করকে নিরাপদ আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন তাঁর এক বন্ধু। যাতে পরিবারের ছত্রছায়ায় থাকার নামে তাঁকে আর নির্যাতনের শিকার হতে না-হয়। অনুরাগ মৈত্রেয়ী জানিয়েছেন, শীঘ্রই গোটা ঘটনায় সুবিচার চেয়ে তাঁরা এফআইআর দায়ের করতে চলেছেন।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Transgender activist shirsho basu beaten up by family member