Advertisment

ঝালদা পুরসভা ফের হাতছাড়া, বিষধর সাপের সঙ্গে তৃণমূলের তুলনা টেনে বিস্ফোরক কৌস্তভ

দখল নিল তৃণমূল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Jalda Municipality

কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি (বামদিকে), ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায় (মধ্যে), তৃণমূলের পতাকা তুলে নিচ্ছেন ঝালদা পুরসভার কাউন্সিলররা (ডানদিকে)।

পুরুলিয়ার ঝালদা পুরসভা কংগ্রেসের হাতছাড়া হল। তিন জন কংগ্রেস কাউন্সিলর বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করলেন। পাশাপাশি, কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন পুরবোর্ডকে সমর্থনকারী দুই নির্দল কাউন্সিলরও যোগ দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসে। তার জেরে ১২ সদস্যের ঝালদা পুরসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের কাউন্সিলরের সংখ্যা বেড়ে হল ১০। এদিন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী কাউন্সিলররা হলেন- পুরপ্রধান শীলা চট্টোপাধ্যায়, বিজয় কান্দু, মিঠুন কান্দু, পিন্টু চন্দ ও সোমনাথ কর্মকার। এর মধ্যে মিঠুন কান্দু নিহত কংগ্রেস নেতা তপন কান্দুর ভাইপো। তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে তপন কান্দুর খুনের অভিযোগে তিনি সরব ছিলেন।

Advertisment

বুধবার সেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করে মিঠুন কান্দু বলেন, 'সাধারণ মানুষ উন্নয়ন চান। আরও উন্নয়ন করার লক্ষ্যেই তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছি।' একই কথা বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী ঝালদা পুরসভার চেয়ারপার্সন শীলা চট্টোপাধ্যায়ও। ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেছেন, 'বাংলায় বিরোধী দল বলে কিছু থাকবে না। সারা বাংলায় ঝালদা একটা ছোট্ট পুরসভা। সেই পুরসভা দখল করতে তপন কান্দুকে খুন করা হয়েছিল। ১২ সদস্যের পুরসভাও দখল করতে হবে। এতটাই তৃণমূলের রাজনৈতিক খিদে।' পালটা মুখ খুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার। তিনি বলেছেন, 'ঝালদা পুরসভার নির্বাচিত সদস্যরাই ঠিক করেছেন তাঁরা কোন দিকে যাবেন। তাঁদের সেই সিদ্ধান্তকে সম্মান করা উচিত। অধীরবাবু এত রাগ করছেন কেন? অধীরবাবুর উচিত বাস্তবটাকে মেনে নেওয়া। তাহলে ওঁনার কষ্ট কম হবে।'

রাজ্য রাজনীতিতে রীতিমতো ঠোঁটকাটা বলে পরিচিত কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি এই পরিস্থিতিতে যথারীতি চুপ থাকেননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেসকে রাজ্যের শাসনক্ষমতা থেকে হঠানোর শপথ নিয়ে আগেই মস্তকমুণ্ডন করেছেন কৌস্তভ। বুধবার তিনি যথারীতি ক্ষোভ উগরে দেন। কৌস্তভ বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে ঘর করা, বিষধর সাপের সঙ্গে ঘর করা একই। আমাদের দলের নেতৃত্ব এরপরও যদি বিষয়টি না-বোঝেন, তাহলে পশ্চিমবঙ্গে কংগ্রেসের জন্য একটা অন্ধকার ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে। আমি আজ অত্যন্ত বেদনাহত, মর্মাহত। আমি আজও চিৎকার করে বলব যে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিটা কংগ্রেস কর্মী বলছে, তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে কোনওরকম সখ্যতা আমরা মানি না। আমাদের দলের যাঁরা নেতৃত্ব, এই চিৎকার যদি তাঁদের কানে পৌঁছয়, অত্যন্ত ভালো। যদি না-পৌঁছয় দলের ভবিষ্যৎ আগামী দিনে পশ্চিমবঙ্গে অত্যন্ত খারাপ।'

তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বরাবরই বিরোধী কৌস্তভ বলেন, 'তৃণমূলের সঙ্গে থাকার পরিণাম কী হতে পারে, সেটা আজকে আবারও প্রমাণিত হল।' তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করে কৌস্তভ বলেন, 'একদিকে দিল্লিতে সনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধীর সঙ্গে একসঙ্গে ছবি তোলা হবে। আর, এখানে এসে কংগ্রেসকে ভেঙে টুকরো টুকরো করা হবে। কংগ্রেসকে সাইনবোর্ডে পরিণত করা হবে। নেপাল মাহাতোর অক্লান্ত পরিশ্রম ও সংগ্রামের ফলে একমাত্র যে পুরসভা কংগ্রেস চালাচ্ছিল, সেই ঝালদা পুরসভাতেও আমাদের তিন জন কংগ্রেস কাউন্সিলর ও সমর্থক দু'জন নির্দল কাউন্সিলরকে দলে যোগদান করিয়ে সেই জায়গাটিও তাঁরা রাখলেন না।'

আরও পড়ুন- ‘বাংলায় ভুল পথে চলছে বিজেপি’, তিতিবিরক্ত নেতাজির নাতি! পদ্ম থেকে ইস্তফা চন্দ্র বসু’র

সম্প্রতি মহাজাতি সদনে কংগ্রেসের এক কর্মসূচিতে কৌস্তভকে হেনস্তার অভিযোগ উঠেছিল, দলেরই একাংশের বিরুদ্ধে। বুধবার সেই নিয়েও ক্ষোভ উগরে দেন কৌস্তভ। তিনি বলেন, 'কৌস্তভ বাগচি তো দল-বিরোধী! কৌস্তভ বাগচি যখনই তৃণমূলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছে, কৌস্তভ বাগচিকে দলের মুখপাত্রের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। দলের মধ্যে কোণঠাসা করা হবে। দলের একশ্রেণি যাঁরা তৃণমূলের সঙ্গে মাখামাখিতে খুব আগ্রহী, তাঁদেরকে দিয়ে হেনস্তা করানো হবে। আমরা যাঁরা পশ্চিমবঙ্গের দীর্ঘদিনের কংগ্রেস কর্মী, তাঁরা বৃহত্তর প্রেক্ষাপট, দেশ বাঁচানোর লড়াই নিয়ে অনেক গল্প শুনছি। শেষ পর্যন্ত যেটা দাঁড়াল, সেটা হল কংগ্রেসের কর্মীরা পশ্চিমবঙ্গে আবার ডোবায় পড়লেন, পুকুর-নদীর গল্প শুনতে গিয়ে।'

tmc CONGRESS adhir choudhury Jayprakash Majumder koustav bagchi
Advertisment