দিল্লিতে পুলিশ ক্যাম্প থেকে বেরিয়েই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার ডাক দিয়েছিলেন, 'রাজভবন চলো' অভিযানের। বুধবার শহরে ফিরেই তিনি বুঝিয়ে দিলেন, আপাতত সেই কর্মসূচি সফল করে তোলাই তাঁর ধ্যান-জ্ঞান। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, 'কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি রাজ্যপাল। তিনি যবে থেকে এসেছেন, কী করা উচিত, কী উচিত নয়, অনেক কিছু বলেছেন। তিনি কাল দেখেছেন, বাংলার মানুষের ওপর কী নির্মম অত্যাচার বিজেপিশাসিত দিল্লি পুলিশ করেছে। আমরা রাজ্যপালের থেকে সময় চাইব। চিঠি পাঠানো হচ্ছে। আমরা রাজভবন চলোর ডাক দিয়েছি। আশা করব, রাজ্যপাল আমাদের সঙ্গে দেখা করবেন।'
রাজ্যপালের কাছে গিয়ে তাঁরা কী করবেন, বিমানবন্দরের বাইরে দাঁড়িয়ে তা-ও জানান অভিষেক। তিনি বলেন, 'যে চিঠিগুলো নিয়ে আমরা দিল্লির বুকে দরবার করেছিলাম, সেই চিঠিগুলো আবার আমরা কলকাতায় ফেরত নিয়ে এসেছি। আমরা দিতে চেয়েছিলাম। আপনারা ছবিতে দেখেছেন, আমরা কৃষি দফতরের টেবিলে চিঠিগুলো রেখেছিলাম। আমাদের যখন জোর করে ধরনা থেকে তুলে দেওয়া হয়, তখন চিঠিগুলোকে ছিঁড়ে দেয়, ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করে। একেকটা চিঠি বঞ্চিত মানুষের দাবি, আবেগ, আশা, আকাঙ্ক্ষা। এরা মানুষকে মানুষ বলে মনে করে না। আমরা সেই চিঠিগুলো সযত্নে ফিরিয়ে এনেছি। আগামিকাল রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে নিয়ে যাব। ৫০ লক্ষ লোকের চিঠি তুলে দেব রাজ্যপালের হাতে।'
অভিষেক বলেন, 'রাজ্যপালকে আমরা অনুরোধ করব, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে চিঠি লিখে জানতে চান, যে ২০ লক্ষ লোক যাঁরা পারিশ্রমিক পাননি, তাঁদের কাজ করিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে কেন এবং কোন আইনের কোন ধারায় এঁদের টাকা আটকানো হয়েছে। যদি কেন্দ্রীয় সরকার বলে যে এঁরা কাজ করেনি, তবে আমরা আইনত যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেব। কাজ করিয়ে কীভাবে দু'বছর ধরে টাকা আটকে রেখেছে? এ তো একেবারে জমিদারি প্রথা। এই জমিদারি তো চলতে পারে না। আমরা সেই কারণেই বলেছি, বিজেপির এই জমিদারির অবসান আগামি দিনে বাংলার মানুষই ঘটাবে। রাজ্যপাল যদি দেখা না-করেন, আমরা পরবর্তী কর্মসূচি সেখান থেকে ঘোষণা করব।'
আরও পড়ুন- ‘মিথ্যে বলছেন গিরিরাজ, সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ করুন,’ বিমানবন্দরেই গর্জে উঠলেন অভিষেক
এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যপাল মঙ্গলবারই নিজের রাজ্য কেরলে গিয়েছেন। বৃহস্পতিবার তাঁর ফেরার সম্ভাবনা নেই। তবে, বৃহস্পতিবার যাতে তৃণমূল নেতৃত্ব সমাবেশের পর স্মারকলিপি জমা দিতে পারেন, তার ব্যবস্থা রাজভবন করতে চায় বলেই খবর। প্রয়োজনে স্মারকলিপির কপি কেরলে রাজ্যপালের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হতে পারে। আর, ফিরলেও বিমানে চেপে রাজ্যপাল চলে যাবেন উত্তরবঙ্গে। সেখানে দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করতে পারেন সিভি আনন্দ বোস। যদিও অন্য একটি সূত্রের খবর, বুধবারই উত্তরবঙ্গে চলে গিয়েছেন রাজ্যপাল।