দিনে-দুপুরে গ্রামে গুলি চালাচ্ছে এক যুবক। তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের দেওর তথা এলাকার শাসকদলের নেতার এই 'কীর্তি' রীতিমতো বিতর্ক তৈরি করেছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিও-য় দেখা যাচ্ছে যুবককে গুলি চালাতে উৎসাহ দিচ্ছেন এলাকারই কয়েকজন। শিখিয়ে দিচ্ছেন কেমন করে চালাতে হয় বন্দুক। যদিও ওই ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা। বিতর্ক চরমে উঠতেই ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘটনার জেরে বেজায় অস্বস্তিতে মালদহ জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ধৃত যুবক মালদহের চাঁচোলের হরিশ্চন্দ্রপুর-২ নং ব্লকের বাসিন্দা। ধৃত যুবক সম্পর্কে মালিওর-২ পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান তোরিনা খাতুনের দেওর। ভিডিও ভাইরাল হতেই অভিযুক্ত আরজাউল হককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। আরজাউল এলাকায় তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী।
দিন কয়েক আগেই ওই গ্রাম পঞ্চায়েতের কাতলামারি এলাকায় তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বিবাদ ঘিরে সংঘর্ষ চলে। আব্দুল বসির ও মহম্মদ উনসাহাক গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরে দু'জন গুলিবিদ্ধ হন। কাতলামারী এলাকার বাসিন্দা আব্দুল বসির ও মহম্মদ উনসাহাক। দীর্ঘদিন ধরেই এলাকায় এই দু'জন একে অপরের প্রতিপক্ষ বলে পরিচিত। দুই গোষ্ঠীই শাসকদলের মদতপুষ্ট বলেও অভিযোগ। পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখল ঘিরেই ওই দুই গোষ্ঠী এলাকায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর মালিওর-২ এ বাম ও কংগ্রেস বোর্ড গঠন করে। পরে প্রধান ও বাকি সদস্যরা শাসক শিবিরে নাম লেখান। প্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই একাংশ অনাস্থা পেশ করে। কিন্তু প্রধান আদালতের দ্বারস্থ হয়ে স্থগিতাদেশ পেয়েছেন। তা নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। এই আবহেই প্রধানের দেওরের বন্দুক থেকে গুলি ছোঁড়ার ভিডিও ভাইরাল হতেই হইচই পড়ে গিয়েছে। এদিকে, দলের নেতার গুলি ছোঁড়ার বিষয়টি নিয়ে বিতর্ক বাড়তেই বেজায় অস্বস্তিতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। যদিও এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র শুভময় বসু জানিয়েছেন, ঘটনা সম্পর্কে তাঁর বিশদে কিছু জানা নেই। তবে আইন কেউ নিজের হাতে তুলে নিলে তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ প্রশাসনের উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলেই তিনি মনে করেন।
আরও পড়ুন- শীতের পথে কাঁটা নিম্নচাপ? সপ্তাহের শুরুতেই বৃষ্টির সম্ভাবনা বঙ্গে
অন্যদিকে, তৃণমূলের বিরুদ্ধে হাতে-গরম এমন একটি ইস্যু পেয়ে ময়দানে বিজেপি। জেলা বিজেপি সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন, 'এটাই তৃণমূলের কালচার। এর বাইরে আর কি বলার আছে। শাসক দলের একাংশের নেতা-কর্মীরা সন্ত্রাস চালানোর চেষ্টা করে চলেছেন। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। পুলিশ ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে।' হরিশ্চন্দ্রপুর থানার আইসি সঞ্জয় কুমার দাস জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ওই যুবককে গ্রেফতার করা হয়েছে। অভিযুক্তকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখনটেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন