Advertisment

করোনা আক্রান্ত সন্দেহে বালিতে বৃষ্টির মধ্যে ৭ ঘণ্টা পড়ে রইল মৃতদেহ

মহিলার মৃতদেহের ধার-কাছে ঘেঁষেননি। মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে আসেননি প্রৌঢ় দম্পতির আত্মীয়-পরিজনেরাও।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
howrah dead body

এভাবেই দীর্ঘসময় ধরে পড়ে ছিল মৃতদেহ।

স্থানীয়দের বাধায় বৃষ্টির মধ্যেই প্রায় সাত ঘণ্টা মৃতদেহ পড়ে রইল রাস্তার ধারে। মৃতার স্বামীর কোনও অনুরোধই কাজে এল না। তবে শোনেনি আত্মীয়-পরিজন থেকে পাড়া-প্রতিবেশী কেউই। সকলের সন্দেহ, মাঝবয়সী মহিলার মৃ্ত্যু হয়েছে করোনায়। শুধু সন্দেহের বশেই এই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল হাওড়ার বালি। প্রাক্তন কাউন্সিলর ও পুলিশের উদ্যোগে শেষমেষ শেষকৃত্য সম্পূর্ণ হয়।

Advertisment

বালির একটি বহুতলের পাঁচতলায় পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন মৃতা। জানা যাচ্ছে, দীর্ঘদিন ধরেই ওই মহিলা অ্যাজমা রোগী। সোমবার ভোরবেলায় তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। স্বামী তখন তাঁকে নিয়ে উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। এরপরই চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। মৃতদেহ নিয়ে পরিবারটি চলে আসে বাড়িতে। তখন ওই মহিলার মৃত্যুর কথা জানাজানি হতেই এলাকাবাসী তাঁর দেহ আবাসনের ভিতরে নিয়ে যেতে বাধা দেন। ফলে রাস্তার ধারেই দেহটি ফেলে রাখতে হয়।

পরিবারসুত্রে জানা যায়, গত ১৭ জুন ওই পরিবারেরই একজন অসুস্থ হয়ে হুগলির একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হন। পরে তাঁর করোনা সংক্রমণ ধরা পড়লে কলকাতার একটি কোভিড হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এখনও সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছে আক্রান্ত। এরপর একই পরিবারের আরেক জনের মৃত্যু হওয়ায় সন্দেহের বশেই মৃতদেহটি আবাসনের ভিতরে নিয়ে যেতে দেওয়া হয়নি বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। ফলে কেউই এদিন ওই মহিলার মৃতদেহের ধার-কাছে ঘেঁষেননি। মৃতদেহ সৎকারে এগিয়ে আসেননি প্রৌঢ় দম্পতির আত্মীয়-পরিজনেরাও। এই ঘটনার জেরে প্রায় সাত ঘন্টা দেহটি পড়ে থাকে রাস্তার ধারে। মৃতার স্বামীর অভিযোগ, "দেহটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা বললেও কেউ এগিয়ে আসেননি। পরিবারের একজন করোনায় চিকিৎসাধীন বলে আমার স্ত্রীও করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে কেউ এগিয়ে আসেননি।"

অবশেষে ছুটে আসে বালি থানার পুলিশ। হাজির হন ওই ওয়ার্ডের প্রাক্তন কাউন্সিলরও। এরপর তাঁদের সঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে রীতিমত বচসা বেধে যায়। মূলত তাঁদের উদ্যোগেই পুরনিগম থেকে শববাহী গাড়ি এনে দেহটি হাওড়া জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, ওই মহিলার করোনা হয়েছিল কি না তা পরীক্ষা করা হবে। তবে করোনা আক্রান্ত ধরে নিয়ে নিয়ম মেনে তাঁর দেহ সৎকার করা হবে।

Howrah corona
Advertisment