বুধবার, ২৩ আগস্ট সন্ধ্যা ৬টা ৪ মিনিটে চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করবে চন্দ্রযান ৩। যা ভারতের তথা বিশ্বের মহাকাশ বিজ্ঞানের গবেষণায় এক নতুন দরজা খুলে দেবে। কারণ, চাঁদের পৃষ্ঠে অবতরণের পর সেখানে জীবন সহায়ক বায়ুমণ্ডল আছে কি না, তা খুঁজে দেখবে চন্দ্রযান। তারার আলোয় চাঁদে যে পরিবর্তনগুলো হয়, তা পরীক্ষা করবে। চাঁদে ভূমিকম্পের সম্ভাবনা নিয়ে গবেষণা চালাবে।
চন্দ্রযানের রম্ভা এবং ল্যাংমুইর প্রোব বা এলপি যন্ত্র চন্দ্রপৃষ্ঠের ভূমির প্লাজমার পরীক্ষা চালাবে। যা থেকে চাঁদের ভূবৈচিত্র্য ও গঠনতন্ত্র স্পষ্ট হবে। আর, ভবিষ্যতের চন্দ্রাভিযানের নিরাপত্তাও বাড়বে। এরই সঙ্গে চাঁদে তাপমাত্রার তারতম্যের প্রতিক্রিয়াও চন্দ্রযান খতিয়ে দেখবে। অর্থাৎ, পৃথিবীর এই উপগ্রহের থার্মো-ফিজিক্যাল প্রতিক্রিয়া খতিয়ে দেখা হবে। তা থেকে পৃথিবীর অতীতও বিজ্ঞানীদের কাছে অনেক বেশি স্পষ্ট হবে।
এরই সঙ্গে লেজার রেট্রোরেফ্লেক্টর অ্যারে চাঁদ এবং পৃথিবীর মধ্যে রিয়েল-টাইম দূরত্ব পরিমাপ করবে। যার সাহায্যে চাঁদের কক্ষপথের আচরণ এবং পৃথিবীতে তার প্রভাব সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা আরও বেশি করে জানতে পারবেন। জোয়ার-ভাটায় চাঁদের বিশেষ ভূমিকা আছে। পৃথিবীতে চাঁদের প্রভাব আরও স্পষ্ট জানা গেলে, জোয়ার-ভাটা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী আরও নিখুঁতভাবে করা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, সমুদ্রের স্রোত এবং উপকূলীয় পরিবেশ বোঝাও অনেক সহজ হবে বিজ্ঞানীদের কাছে।
চন্দ্রযানের আলফা পার্টিকেল এক্স রে স্পেকটোমিটার এবং লেজার ইনডিউসড ব্রেকডাউন স্পেকট্রোস্কোপ চাঁদের ভূমির নীচে লুকিয়ে থাকা সম্পদ সম্পর্কে ধারণা দেবে। চাঁদের বিবর্তনের ইতিহাস বিজ্ঞানীদের কাছে স্পষ্ট করবে। বিবর্তনের প্রক্রিয়াগুলো সম্পর্কেও ধারণা দেবে।
আরও পড়ুন- ‘শেষ ১৫ মিনিটের সন্ত্রাস’, চন্দ্রযানের সাফল্য নিয়ে কেন এখনও চিন্তায় ইসরো?
আর এই সব কারণে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চন্দ্রযান ৩ এবং ইসরোকে আগাম সাফল্যের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। চন্দ্রযানের সাফল্য কামনা করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, 'চন্দ্রযান-৩ অভিযান সমগ্র জাতির জন্য গর্বের বিষয়! ভারতের দ্য @ইসরোর দল, তাঁদের (মহাকাশ বিজ্ঞানীদের) কঠোর পরিশ্রম দেশের অগ্রগতির একটি প্রমাণ যা জনগণ, বিজ্ঞানী এবং অর্থনীতিবিদদের সাহায্যে হয়েছে (অগ্রগতি), কোন রাজনৈতিক কারণে নয়। বাংলা-সহ সারা দেশের বিজ্ঞানীরা এই অভিযানে ব্যাপক অবদান রেখেছেন। আমি তাঁদের সকলের প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই, যারা ভারতের চন্দ্র অন্বেষণকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার জন্য কঠোর পরিশ্রম করেছেন! চন্দ্রযান-৩ চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে পৌঁছনোর সঙ্গেই, আমাদের সকলের উঠে দাঁড়িয়ে অভিবাদন জানানো উচিত!'