অভিভাবকহীন মালদহের দুই বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কন্যা শিশুকে দত্তক নিলেন আমেরিকার দুই দম্পতি। ওই দুই শিশুকে সরকারি নিয়ম মেনে মার্কিন দুই দম্পতির হাতে তুলে দিয়েছে মালদহ জেলা প্রশাসন। অভিভাবকদের খোঁজ না মেলায় অনলাইনে দুই শিশুকে দত্তক নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছিল। সেই আহ্বান চোখে পড়তেই সাড়া দেন আমেরিকার দুই দম্পতি। সুদূর মার্কিন মুলুক থেকে তাঁরা ছুটে আসেন মালদহে। দুই কন্যাকে দত্তক নিয়ে বেজায় খুশি দুই পরিবার।
Advertisment
এতদিন মালদহে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অধীনে রাখা হয়েছিল দুই শিশুকন্যাকে। সেখানেই তাদের দেখভাল করা হচ্ছিল। দুটি শিশুই ছিল অভিভাবকহীন। তাদের শ্রবণজনিত সমস্যা রয়েছে। ভারত সরকারের সেন্ট্রাল অ্যাডোপসেন রিসোর্স অথরিটি ওই দুই শিশুকে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বলে ঘোষণা করে।
মালদহের 'হায়দারপুর শেল্টার অফ মালদহ' নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার যুগ্ম সম্পাদক মন্ময় মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মালদহ মেডিক্যাল কলেজ থেকে ২০১৯-এর ১৭ এপ্রিল এবং ২০ এপ্রিল ওই দুই শিশুকে হোমে পাঠানো হয়। তখন তাদের বয়স ছিল সাড়ে তিন বছর। এরপর মালদহ আদালত এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই শিশুদের সংশ্লিষ্ট হোমে রেখে তাদের দেখভাল করা হয়। এরই পাশাপাশি ৯০ দিন পর্যন্ত ওই শিশুদের অভিভাবকদের খোঁজ চালানো হয়। ওই দুই শিশুকন্যার অভিভাবকদের খোঁজ মেলেনি। শেষমেশ অনলাইন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তাদের দত্তক নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়। সেই আহ্বান চোখে পড়তেই সাড়া দেন দুই মার্কিন দম্পতি। আমেরিকার ভার্জিনিয়া শহরের ওই দুই দম্পতি মালদহের দুই কন্যাশিশুকে দত্তক নেওয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেন।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কর্তা মন্ময় মুখোপাধ্যায় আরও জানিয়েছেন, 'হায়দারপুর শেল্টার অফ মালদহ'-এর অধীনস্থ 'সুনীতি শিশু গৃহে' রাখা হয়েছিল ওই দুই কন্যা শিশুকে। আমেরিকার দুই দম্পতি দুটি শিশুকে দত্তক নেওয়ার জন্য আবেদন জানান। পরে সূদূর আমেরিকা থেকে মালদহে এসে তাঁরা যোগাযোগ করেন। ১৭ সেপ্টেম্বর আদালতের নির্দেশ মেনে এবং জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ওই বিশেষ চাহদাসম্পন্ন দুই শিশুকে আমেরিকার দম্পতিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এবার নতুন করে জীবন শুরু করতে পারবে ওই দুই শিশু কন্যা।