Jalpaiguri: জঙ্গল ছেড়ে খাওয়ারের লোভে রীতিমতো শহরে ঢুকে পড়ল হাতি। জঙ্গল ছেড়ে লোকালয়ে হাতির প্রবেশ নতুন কিছু নয়। তবে সেটা জঙ্গল লাগোয়া এলাকায়। কিন্তু সব কিছুকে ছাপিয়ে রবিবার জঙ্গল ছেড়ে শহরে ঢুকে পড়েছিল দুটি পূর্ণ বয়ষ্ক হাতি। ছুটির দিনে চোখের সামনে হাতিকে পেয়ে যারপরনাই খুশি শহরবাসী। হাতি দেখতে ভিড় জমায় উৎসুক জনতা।
করোনা আবহে সেই ভিড় সামাল দিতে প্রশাসনকে জারি করতে হয় ১৪৪ ধারা। শহরের উপকণ্ঠ ছাড়িয়ে জোড়া হাতিকে জঙ্গলে ফেরাতে নাকানিচোবানি খেতে হয় বন দফতরকে। জলপাইগুড়ি শহর থেকে কমবেশি ১৫ কিলোমিটার দূরে বৈকুন্ঠপুর জঙ্গল। এই জঙ্গল থেকেই বেড়িয়ে ১৫ কিমি পথ পেরিয়ে বিশ্বকর্মার বাহন ঢোকে শহরে।
এদিন ভোর তিনটে নাগাদ দুটি হাতি এশিয়ান হাইওয়ে পেরিয়ে প্রবেশ করে শহরের রাজবাড়ি পাড়ায়। সেখান থেকে দুলকি চালে হেঁটে হাতি দুটি চলে আসে বিশ্ববাংলা কোভিড হাসপাতাল চত্বরে। আর সেখান থেকেই হাতির উপস্থিতি দেখতে জমায়েত বাড়ে। কোভিড হাসপাতাল কর্মীদের নজরে প্রথমে আসে হাতি দুটি। খবর যায় বনদফতরে ও জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায়। ততক্ষণে চাউর হয়ে গিয়েছে হাতির খবর।
মানুষের উপস্থিতিতে ভয় পেয়ে হাতি দুটি বিশ্ববাংলা কোভিড হাসপাতালের পাঁচিল ভেঙে করলা নদী পেরিয়ে নেতাজিপাড়া হয়ে রাজ্য সড়ক ধরে জলপাইগুড়ির ২২নং ওয়ার্ডের কলেজ পাড়ায় ঢুকে পড়। করলা নদীর পাড়ে একটি ঝোপে আশ্রয় নেয় হাতি দুটি। শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে হাতি দেখতে ভিড় জমায় শয়ে শয়ে উৎসাহী জনতা। ভিড় ঠেকাতে জলপাইগুড়ির ২১ ও ২২ নম্বর ওয়ার্ডে জারি করা হয় প্রশাসনের তরফে ১৪৪ ধারা।
খবর পেয়ে ঘটনার স্থলে ছুটে আসেন বিভাগীয় বন আধিকারিক ও বন দপ্তরের কর্মীরা৷ দুটি হাতির মধ্যে একটি দাঁতাল ও একটি মাকনা হাতি রয়েছে৷ বন দপ্তরের অনুমান স্থানীয় বৈকুন্ঠ পুরের জঙ্গল থেকে খাবারের খোঁজে লোকালয়ে চলে এসেছে তারা৷ সারাদিন অপেক্ষার পর সন্ধ্যা নামতেই হাতি দু’টিকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় জঙ্গলে ফেরানোর চেষ্টা করে বন দপ্তর কর্মীরা৷ জানা গিয়েছে, স্বাভাবিক উপায়ে না হলে ঘুমপাড়ানি গুলি ছুঁড়ে ঐরাবত গাড়িতে তুলে তাদের বনে ছাড়া হবে। এমনটাই জানান অনারিয়াম ওয়াইল্ড লাইফ ওয়ার্ডেন সীমা চৌধুরী।
এই বিষয়ে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু জানান, ‘হাতি দু’টির যাতে কোন সমস্যা না হয় এবং কোনওরকম অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তার জন্য শহরের মাসকালাইবাড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজ সংলগ্ন এলাকায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন