শ্রীঘরেই মন দেওয়া-নেওয়া, শেষমেষ এক হল দুই বন্দির চারহাত, সৌজন্যে কারামন্ত্রী

মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বুধবার দায়িত্ব নিয়ে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে হাসিম ও শাহানারার চার হাত এক করাল।

মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বুধবার দায়িত্ব নিয়ে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে হাসিম ও শাহানারার চার হাত এক করাল।

IE Bangla Web Desk & Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Two prisoner

১৬ জুলাই ফের তাদের সংশোধনাগারে ফিরে যেতে হবে।

শ্রীঘরে হয়েছিল পরিচয়। শ্রীঘরেই শুরু হয় প্রেম। আর দুই কয়েদির সেই প্রেমই পরিণতি পেল বৈবাহিক সম্পর্ক। না, এটা কোনও চলচ্চিত্রের চিত্রনাট্য নয়। বাস্তবেই এটা রিয়েল লাইফের এক রিয়েল কাহিনি। বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে থাকা অন্য বন্দি ও কারাগার রক্ষীদের কেউই বন্দি আবদুল হাসিম ও শাহানারা খাতুনের প্রেমে বাধা হয়ে ওঠেননি। মানবাধিকার সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি বুধবার দায়িত্ব নিয়ে মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে হাসিম ও শাহানারার চার হাত এক করাল।

Advertisment

বন্দি আবদুল হাসিমের বাড়ি অসমের দোরাং জেলার দলগাঁও থানা এলাকার রঙ্গনগারোপাথার গ্রামে। আর তার প্রেমিকা শাহানারা খাতুন বীরভূম জেলার নানুর থানার উচকারণ-বালিগড়ির বাসিন্দা। মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিনিধিদের কথা অনুযায়ী, ধর্ষণের মামলায় হাসিম ৮ বছর ও খুনের মামলায় শাহানারা ৬ বছর ধরে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি। সেখানেই হাসিমের সঙ্গে পরিচয় হয় শাহানারার। পরিচয় গড়ায় প্রেমে। আর এদিন তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হল। দম্পতি পরিচয় পেয়ে খুশি দু‘জনেই। তবে মুক্তি না-মেলা পর্যন্ত শ্রীঘরবাসী হয়েই থাকতে হবে নবদম্পতিকে।

হাসিম ও শাহানারা জানায়, বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দিদশাতেই তাদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারপর তারা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হতে চায়। তাতে তাদের দু’জনের পরিবারের কেউই আপত্তি করেনি। বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য তারা মানবাধিকার সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। হাসিমের বাবা আবদুস সাত্তার নিজে তার বন্দি মেয়ের ইচ্ছার কথা মানবাধিকার সংগঠনকে জানান। এ বিষয়ে অনুমতি দেওয়ার জন্য তিনি গত ১৬ জুন রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির দ্বারস্থ হন।

আবেদন মঞ্জুর হতেই শুরু হয় আবদুল হাসিম ও শাহানারা খাতুনের চার হাত এক করার প্রক্রিয়া। এদিন মন্তেশ্বরের কুসুমগ্রামে আইনিভাবে তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর দাম্পত্য সুখের সন্ধানে এদিনই তারা বীরভূমের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয়। যাওয়ার সময় নবদম্পতি জানিয়ে যায়, 'কপাল দোষে শ্রীঘরবাসী হয়েছি। এখন আমরা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছি। মুক্তি পেয়ে গেলে সুখের সংসার গড়ব।'

Advertisment

আরও পড়ুন- কালনার পর এবার কাটোয়া, জিতেই সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে তিন পঞ্চায়েত সদস্য

মানবাধিকার সংগঠনের কার্যকর্তা শামসুদ্দিন শেখ বলেন, 'আবদুল ধর্ষণের মামলা ও শাহানারা খুনের মামলায় অভিযুক্ত হয়ে বর্ধমান কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে বন্দি রয়েছে। তারা দু’জন বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে চেয়েছিল। তা নিয়ে তাদের পরিবার কারামন্ত্রীর দ্বারস্থ হয়েছিল। আবেদন মঞ্জুর হলে তারা প্যারোলে মুক্তি পায়। এদিন তারা আইনিভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হল। তবে ১৬ জুলাই ফের তাদের সংশোধনাগারে ফিরে যেতে হবে।'

marriage Imprisonment Law Ministry