বড়দিনের আনন্দে যখন মেতে গোটা ডুয়ার্স, ঠিক তখনই শ্রমিক মালিক সমস্যার জেরে বন্ধ হয়ে গেল এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম ডুয়ার্সের চ্যাংমারি চা বাগান। এর পাশাপাশি একই সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সেরই মুজনাই চা বাগানও। জোড়া আঘাতে কাজ হারালেন আন্দাজ ৮,০০০ চা শ্রমিক। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপাকে পড়লেন অন্তত ৩০,০০০ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার।
জলপাইগুড়ির নাগরাকাটা ব্লকের চ্যাংমারি চা বাগানে ছুটির দিন ছিল রবিবার। আচমকাই তা বদল করে সোমবার করায় গত কয়েকদিন ধরে বাগানে বেশ গন্ডগোল চলছিলো। গত ২৪ তারিখ এই বিবাদ গড়ায় হাতাহাতিতে। অভিযোগ, শ্রমিকদের প্রহারের মুখে পড়েন বাগানের ম্যানেজার এবং চারজন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। এঁরা সবাই আপাতত শিলিগুড়ির এক বেসরকারী নার্সিং হোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন বলে জানা গেছে। এই ঘটনার জেরে গত মঙ্গলবার রাতে বাগান বন্ধের নোটিস জারি করে বাগান ছেড়ে পালিয়ে যান কর্তৃপক্ষ বলে দাবী করেছেন শ্রমিকরা।
প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিপন্ন ৩০,০০০ শ্রমিক ও তাঁদের পরিবার
আরও পড়ুন: ম্যানেজারকে কেটে ফেলার হুমকি, বন্ধ চেউলিবাড়ি চা বাগান
ঘটনায় টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গ শাখার সম্পাদক রাম অবতার শর্মা জানিয়েছেন, "আমরা ১৫ দিন আগে বাগানের কাজকর্ম নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক মিটিং করেছি। শ্রমিকদের কাছে বাগানের কোনো বকেয়া নেই। তারপর কেন শ্রমিকদের একাংশ বাগানের ম্যানেজারদের মারধর করলেন তা বুঝতে পারছি না। চ্যাংমারি চা বাগান কর্তৃপক্ষ নিজেদের নিরাপত্তাহীন মনে করে বাগান বন্ধ করে চলে গেছেন। প্রশাসন বিষয়টায় হস্তক্ষেপ করুক।" এই প্রসঙ্গে মালবাজারের এসডিও জানিয়েছেন, "আমরা বাগান বন্ধের নোটিস পেয়ে তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।"
অপরদিকে বড়দিনের রাতে শ্রমিক মালিক সমস্যার কারণ দেখিয়ে বন্ধ হয়ে গেল আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট ব্লকের মুজনাই চা বাগান। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ১,০০০ জন শ্রমিক নিয়ে ২০১১ সালে ফের চালু হয়েছিল এই বাগান। বর্তমানে রুগ্ন বাগানের তালিকায় ছিলো চা বাগানটি। তৃণমূলের নাগরাকাটা ব্লক সভাপতি অমরনাথ ঝা ও আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মোহন শর্মা জানিয়েছেন, "যা হয়েছে তা ঠিক নয়। দ্রুত বাগান খোলার দাবী রাখছি।"