কাশ্মীরে বেড়াতে গিয়ে দুর্ঘটনার কবলে পড়ে মৃত্যু হল পূর্ব বর্ধমান জেলার দুই পর্যটকের। বৃহস্পতিবার বিকেলে দুর্ঘটনাটি ঘটে কাশ্মীরের গান্ডেরবাল জেলার কঙ্গন থানার গণ্ডুতে 'শ্রীনগর- লে' এক্সপ্রেসওয়ের ওপর। দুর্ঘটনায় পর্যটকবাহী বাসে থাকা আরও প্রায় ২৫ জন পর্যটক জখম হয়েছেন। মৃতরা হলেন পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের তোড়কোনা গ্রামের বাসিন্দা মালতি কুণ্ডু (৫৫) ও গলসির ইড়কোনা গ্রামের স্মৃতিকা হাজরা (৫২)।
কাশ্মীরের গান্ডেরবাল জেলার পুলিশ সুপার নিখিল বরকর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, 'দুর্ঘটনাস্থলে দু’জন মারা গিয়েছেন। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কয়েকজনকে চিকিৎসার জন্য শ্রীনগরের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।' খণ্ডঘোষ ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৩ মার্চ তোড়কোনা থেকে একটি টুরিস্ট বাস ছাড়ে। ওই বাসেই বর্ধমান শহর, খণ্ডঘোষ, গলসি, বাঁকুড়ার ইন্দাস, শাসপুর থানা এলাকার ৬৪ জন পর্যটক উত্তর ভারত ও কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। অমৃতসর, হরিদ্বার, বেনারস হয়ে ৪ এপ্রিল পর্যটকদের বর্ধমানে ফেরার কথা ছিল।
খণ্ডঘোষ থেকে রওনা হওয়ার পর বুদ্ধগয়া, এলাহবাদ, আগ্রা, বৃন্দাবন, কুরুক্ষেত্র হয়ে পর্যটকবাহী বাসটি মঙ্গলবার রাতে শ্রীনগরে পৌঁছয়। বুধবার শ্রীনগরে প্রকৃতিক দৃশ্য ঘুরে দেখার পর বৃহস্পতিবারও পর্যটকরা দুটি ছোট বাসে চেপে প্রাকৃতিক দৃশ্য ঘুরে দেখার জন্য রওনা হন। ওই সময়েই একটি পর্যটকবাহী বাস দুর্ঘটনার কবলে পড়ে বলে খণ্ডঘোষ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি শ্যামল দত্ত জানিয়েছেন। শ্যামলবাবু বলেন, 'শুক্রবার সকালে দুর্ঘটনার খবর তোড়কোনা গ্রামে পৌঁছয়। এরপর খোঁজ নিয়ে আমি জানতে পারি, ওই বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উলটে গিয়ে বেশ কয়েক ফুট নীচে থাকা অন্য রাস্তায় আছড়ে পড়ে। তার জরেই বয়স্ক দুই পর্যটক প্রাণ হারান।'
তোড়কোনা থেকে ছাড়া পর্যটকবাহী বাসের ‘গাইড’ ছিলেন গ্রামেরই বাসিন্দা অসীম চক্রবর্তী ওরফে খোকন। তিনি দাবি করেন, 'পর্যটকরা শ্রীনগর থেকে সেখানকার স্থানীয় বাসে চেপে আশপাশের এলাকা দেখতে বেরিয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার দুর্ঘটনায় দু’জন মারা গিয়েছেন। বাকি পর্যটকরা জখম হয়েছেন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। জখমদের উদ্ধার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করার পাশাপাশি মৃতদেহ নিয়ে বর্ধমানে ফিরে আসার ব্যাপারেও কাশ্মীরের পর্যটন বিভাগ সর্বতোভাবে সাহায্য করছে।' খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগ জানান, ময়নাতদন্তের পর দ্রুত যাতে মৃতদেহ ফিরিয়ে আনা যায়, তার চেষ্টা চলছে। শুক্রবার বিকেলে শ্রীনগরে মৃতদেহগুলির ময়নাতদন্তও হয়েছে। শনিবার সকালের বিমানে দেহগুলি কলকাতায় আনা হবে বলেই মৃতদের পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন।