এবার পুলিশের বিরুদ্ধে জাতীয় মহিলা কমিশন এবং তপশিলি জাতি বা এসটি কমিশনে অভিযোগ দায়ের করলেন মালদহের দুই আদিবাসী মহিলা। ইতিমধ্যেই এই দুই কমিশন ওই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
এদিকে মালদহ-কাণ্ডে শোরগোল পড়তেই অবশেষে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে কড়া অ্যাকশন শুরু হল। বামনগোলা থানার আইসি-সহ ৪ পুলিশ আধিকারিককে ক্লোজ করা হল। ৪ পুলিশ আধিকারিককে পাঠানো হয়েছে পুলিশ লাইনে। তাঁদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। হাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়ে চোর অপবাদ জোটে ২ মহিলার। আদিবাসী ২ মহিলাকে বিবস্ত্র করে জুতোপেটা করা হয়। পুলিশ জেনেও প্রথমে হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ। উল্টে নিগৃহীত ২ মহিলাকেই পুলিশ গ্রেফতার করে। তীব্র সমালোচনার মুখে ঘটনার ৯ দিন পর অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন জেলা পুলিশ সুপার।
ইতিমধ্যেই পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদবকে এই ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তা জানতে চেয়ে দু'সপ্তাহের সময় দিয়ে চিঠি করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। এই বিষয়ে শুক্রবার মালদা শহরের বাঁধ রোড এলাকায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে উত্তর মালদা কেন্দ্রের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, 'পুলিশ এই ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। তার জন্যই তো ঘটনা ঘটার ৫ দিন পর তদন্ত শুরু করেছিল।'
গত সপ্তাহের মঙ্গলবার মালদার একটি হাটে লেবু বিক্রি করতে গিয়েছিলেন দুই আদিবাসী মহিলা। সেখানেই ওই দুই মহিলাকে আচমকা কিছু মানুষ চোর বলে ধাওয়া করে। এরপরই ভরা বাজারে ওই দুই মহিলাকে ধরে বিবস্ত্র করে ব্যাপক মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। জুতো দিয়ে পেটানোর পাশাপাশি কিল, ঘুঁষি চড়-থাপ্পড় মারা হয়। বিবস্ত্র অবস্থায় ওই দুই মহিলাকে মারধরের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে থাকে।
সিভিক ভলেন্টিয়ারদের উপস্থিতিতে এলাকার বেশ কিছু পুরুষ ও মহিলারা বিবস্ত্র অবস্থায় ওই দুই মধ্য বয়স্ক মহিলাকে গণপিটুনি দিতে থাকে। এদিকে, ওই দুই নির্যাতিতাকেই পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের দাবি, ফাঁড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় তাদের গ্রেফতার করা হয়েছিল। যদিও পরে ওই দুই নির্যাতিতাকে জামিনে মুক্তি দেয় মালদ জেলা আদালত।
নির্যাতিতা দুই মহিলাকে গ্রেফতারের পর থেকেই পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল। অবশেষে অভিযুক্ত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিল মালদা জেলা পুলিশ। ক্লোজ করা হল বামনগোলা থানার আইসি-সহ ৪ পুলিশ আধিকারিককে। তাঁদের পুলিশ লাইনে পাঠানো হল।