কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতনকে হেরিটেজের তালিকায় স্থান দিল ইউনেস্কো। আগেই একথা জানিয়েছিল iebangla.com। লিখেছিল যে সেপ্টেম্বরে এই স্বীকৃতির কথা ঘোষণা করা হবে। সেই মত রবিবার সন্ধে ৬টা ১৭ নাগাদ ইউনেস্কো তাদের সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ বার্তায় এই ঘোষণা করেছে। যাতে খুশি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
রবীন্দ্রজয়ন্তীর দিনই শান্তিনিকেতন যে ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে চলেছে সেকথা সোশ্যাল মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জি কিষাণ রেড্ডি। তখনই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন যে এই ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ হিসেবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হবে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে। সেই সময় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী লিখেছিলেন, ‘গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মজয়ন্তীতে ভারতের জন্য দারুণ খবর। শান্তিনিকেতন, পশ্চিমবঙ্গকে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সেন্টারের উপদেষ্টা সংস্থা ICOMOS দ্বারা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় লিপিবদ্ধ করার জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি আরবের রিয়াদে অনুষ্ঠিত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ কমিটির সভায় এটি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।’
তারও আগে ফেব্রুয়ারিতে বিশ্বভারতীর তরফে এক আধিকারিকও বলেছিলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়কে হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা করা হচ্ছে। এটি হবে বিশ্বের প্রথম হেরিটেজ বিশ্ববিদ্যালয়। আনুষ্ঠানিক বৈঠক ছাড়া বাকি সব কিছুই করা হয়েছে। ওই বৈঠক সম্ভবত এপ্রিল বা মে মাসে হবে। সাধারণত একটি স্মৃতিস্তম্ভকে হেরিটেজ ট্যাগ দেওয়া হয়। বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো, একটি চলছে এমন বিশ্ববিদ্যালয়কে ইউনেস্কো থেকে হেরিটেজ স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বভারতীর মত পৃথিবীতে আর কোনও বিশ্ববিদ্যালয় নেই যেখানে ধারাবাহিকভাবে সাংস্কৃতিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।’
১৯২১ সালে ১১৩০ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠা হয় বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের। ১৯২২ সালের মে মাসে বিশ্বভারতী সোসাইটি একটি সংস্থা হিসেবে নথিবদ্ধ না-হওয়া পর্যন্ত এটি নোবেলজয়ী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নামেই চলত। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁর বেশ কিছু সম্পত্তি, জমি এবং একটি বাংলো সেই সময়ে বিশ্বভারতী সোসাইটিকে দান করেছিলেন। স্বাধীনতার আগে পর্যন্ত এটি ছিল একটি কলেজ। ১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠানটিকে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মর্যাদা দেওয়া হয়। সেই সময় বিশ্বভারতীর প্রথম উপাচার্য হন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছেলে রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর।
আরও পড়ুন- UNESCO-র ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ তালিকায় রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন, বড় ঘোষণা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর
আরও পড়ুন- বিশ্বসেরা বিশ্বভারতী, UNESCO হেরিটেজ ‘মুকুট’ পরতে চলেছে বিশ্বকবির স্মৃতিধন্য বিশ্ববিদ্যালয়
ইউনেস্কোর ওয়েবসাইট অনুযায়ী, '১৯২২ সালে বিশ্বভারতী শিল্প, ভাষা, মানবিক, সঙ্গীতের অন্বেষণের সঙ্গে সংস্কৃতির কেন্দ্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিল। এখানে হিন্দি শেখার প্রতিষ্ঠান (হিন্দি ভবন), চিন-এশীয় সংস্কৃতির অধ্যয়ন (চিনা ভবন), মানবিক শিক্ষাকেন্দ্র (বিদ্যা ভবন), চারুকলা প্রতিষ্ঠান (কলা ভবন) এবং সংগীত শিক্ষার জন্য (সংগীত ভবন) আছে।'