দেশের নিরাপত্তায় বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে মোদী সরকার। সেক্ষেত্রে বাংলার সঙ্গে রয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মতো তিনটি স্পর্শকাতর আন্তর্জাতিক সীমান্ত। পাশাপাশি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের একমাত্র ‘গেটওয়ে’ এই পশ্চিমবঙ্গ। ফলে, জাতীয় নিরাপত্তার নিরিখে এ রাজ্যের গুরুত্ব অপরিসীম। যা বিবেচনা করেই শুক্রবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব অজয় ভাল্লা পশ্চিমবঙ্গের শীর্ষকর্তা ও বিএসএফ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন। বৈঠকে সীমান্ত সুরক্ষা ও আন্তর্জাতিক বাণিজ্য উন্নয়নের নানা দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তোলার বিষয়টি দ্রুত করার জন্য রাজ্যের প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দেন কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট্র সচিব।
ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ২৮৯ কিলোমিটার কাঁটাতারের বেড়া তোলার প্রয়োজনীয় হলেও রয়েছে মাত্র ১৮২ কিলোমিটার জুড়ে। সীমান্তে জমি অধিগ্রহণের বাধায় বেড়া তোলার কাজটি আটকে রয়েছে বলে সরকারি সূত্রে খবর। সমস্যা দ্রুত মিটিয়ে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া তোলার জন্য রাজ্য প্রশাসন ও বিএসএফ কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বারাষ্ট সচিব অজয় ভাল্লা। বলা হয়েছে যে, জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি রাজ্য প্রশাসন তারন্বিত করবে। যেসব জায়গায় একস্তরীয় কাঁটাকারের বেড়া রয়েছে সেখানে ত্রিস্তরীয় বেড়া হবে। এছাড়া, ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট গড়ে তোলারও কথা হয়েছে।
হিডকো ভবনে শুক্রবার প্রায় আড়াই ঘন্টার এই বৈঠকে রাজ্যের তরফে ছিলেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী, স্বারাষ্ট্র সচিব বিপি গোপালিকা, ভূমি দফতরের সচিব মনোজ পন্থ, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। এছাড়াও, রাজ্যের যে ১০ জেলার জেলায় আন্তর্জাতিক সীমান্ত রয়েছে সেইসব জেলায় পুলিশ সুপাররাও শুক্রবারের বৈঠকে অংশ নিয়েছিলেন। এই জেলাগুলি হল, দুই ২৪ পরগনা, দুই দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, নদিয়া, মালদা, মুর্শিদাবাদ।
সীমান্তে নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সম্প্রতি রাজ্যে বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এখন সীমান্ত থেকে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত দূরত্বে ভারতীয় ভূখণ্ডে তল্লাশি ও গ্রেফতার করতে সক্ষম বিএসএফ। এতদিন সীমান্ত থেকে ১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত এই ক্ষমতা ছিল বিএসএফের।
সীমান্ত সুরক্ষা বাহিনীর এই এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরুদ্ধে শুরু থেকেই সোচ্চার তৃণমূল। এবার কেন্দ্রীয় এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিধানসভায় প্রস্তাব আনতে চলেছে শাসকদল তৃণমূল। বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধিকে আদতে রাজ্যের ক্ষমতায় হস্তক্ষেপ বলে মনে করছে বাংলার শাসক দল। উল্লেখ্য, ইতিমধ্যে পঞ্জাব বিধানসভায় এই প্রস্তাব এনেছে সেরাজ্যের শাসকদল কংগ্রেস।
শুধু বিধানসভায় বিএসএফের এক্তিয়ার বৃদ্ধির বিরুদ্ধে বিধানসভায় প্রস্তাব পেশই নয়, আসন্ন সংসদ অধিবেশনেও তৃণমূল এই বিষয়টি তুলে ধরতে চলেছে বলে জানিয়েছেন দলের লোকসভার নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।
Read in English
ইন্ডিয়ানএক্সপ্রেসবাংলাএখনটেলিগ্রামে, পড়তেথাকুন