পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের তৃতীয় দিনেও তপ্ত বাংলা। দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়ন করাতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হলেন সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি। সোমবার সকালে দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে সোনামুখী বিডিও অফিসে মনোনয়ন জমা করতে যান সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক। অভিযোগ, বিডিও অফিসে ঢোকার ঠিক আগেই দিবাকর ঘরামি সহ বিজেপির প্রার্থীদের উপর তৃণমূল চড়াও হয়। মারধরকরা হয় বিধায়ককে ও তাঁপ নিরাপত্তারক্ষীদের। মারপিটে রক্তও ধরেছে। একাধিক বিজেপি কর্মীর মাথা ফেটেছে, শরীরের বিভিন্ন অংশ জখম হয়েছে।
মনোনয়নের সময় অশান্তি এড়াতে কেন্দ্রের এক কিলোমিটার আগে থেকেই ১৪৪ ধারা জারির নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। পুলিশের উপস্থিতিতে তারপরও কীভাবে এই অবস্থা হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিজেপির অভিযোগ, হামলা চলাকালীন পুলিশ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছিল।
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোট পিছনো নিয়ে কমিশনকে বড় প্রস্তাব হাইকোর্টের, জানানো হল দিন-তারিখ
সোনামুখীর বিজেপি বিধায়ক দিবাকর ঘরামি বলেছেন, 'সোনামুখীকে অশান্ত করে ওরা (তৃণমূল) ২০১৮ সালের পুনরাবৃত্তি করতে চেয়েছিল, কিন্তপ পুরোটা পরেনি। আচমকা জনা ৩০ ছেলে এসে আমাদের প্রথমে লাইন থেকে বের করে দেওয়ার চেষ্টা করে। প্রতিবাদকরলে আমাকেও হেনস্থা করে। আমাকে মারতে এলে প্রতিরোধ করি। তবে হাতে চোট লেগেচে আমার। আমাকে বাঁচাতে এলে আমার রক্ষীকে পিছন থেকে মারধর করা হয়েছে। একাধিক কর্মী সহ মার খেয়ে জখন ২ নম্বর মণ্ডলের সম্পাদক দেবাশিষও। পাথর ছোড়া হয়েছে। পুলিশ কিন্তু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করেছে।'
এরপরই বিজেপি বিধায়ক দিবাকরের হুঁশিয়ারি, 'আজ আমরা প্রতিরোধ করেছি। আগামিতেও করব। ফের এলে পাল্টা মারব।'
আরও পড়ুন- ‘তাজা নেতা’র হঠাৎ কী হল? পঞ্চায়েতের আগে এ কী বললেন তৃণমূলের আরাবুল!
এদিকে বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ সৌমিত্র খাঁ-র অভিযোগ, বিভিন্ন জায়গায় ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এরই প্রতিবাদে পথ অবরোধ করে গেরুয়া শিবিরের। এ দিন বাঁকুড়া থেকে বিষ্ণুপুর যাওয়ার রাস্তায় বাঘাজল মোড়ের কাছে রীতিমতো রাস্তার উপর বসে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন বিষ্ণুপুরের বিজেপি সাংসদ। তাঁর সঙ্গে ছিলেন অন্য নেতা কর্মীরা। সৌমিত্র বলেন, 'নির্বাচন কমিশনার হাবা-কানা লোক। আমাদের নমিনেশন করতে দিচ্ছে না। বিডিও-রা ভুলভাল ফর্ম দিচ্ছে।'
এদিন মনোনয়ন ঘিরে উত্তপ্ত হয় মুর্শিদাবাদের রাণিনগর থানা এলাকার শেখ পাড়া। সেখানে তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীদের মারধর করার অভিযোগ ওঠে। কাঠগড়ায় সিপিএম এবং কংগ্রেস। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে রাস্তায় তৃণমূল কর্মীরা। বাঁশ লাঠি হাতে নিয়ে মুখ বেঁধে রাস্তায় স্লোগান দিতে দেখা যায় তৃণমূল কর্মীদের।
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েতর আগে কমিশনকে কড়া চিঠি আরেক কমিশনের! মাথায় হাত তৃণমূলের?
নদিয়ার নাকাশিপাড়ায় হরনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের চণ্ডীতলায় কংগ্রেস প্রার্থীকে মনোনয়ন দিতে বাধা, Unrest across Bengal over nomination submission for panchayat pollsআত্মীয়ের বাড়িতে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। কংগ্রেস প্রার্থী জামান মণ্ডলকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর কাকা, হাত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। কংগ্রেস প্রার্থীর আত্মীয় হাসপাতালে ভর্তি। হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
পূর্ব বর্ধমানের বড়শূলেও সিপিএম বাম তৃণমূল লড়াই হয়। পুলিশের সামনেই বাঁশ, পাথর নিয়ে একে অপরকে আক্রমণ করে উভয় পক্ষ।
অন্যদিকে বীরভূমের লাভপুরের ব্রিপুটিকুড়ি অঞ্চলের গঙ্গারামপুর গ্রামের বাবু শেখ নামে বামেদের মনোনীত এক পঞ্চায়েতের প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে পুরনো একটি মামলায় গ্রেফতার করল লাভপুর থানার পুলিশ। বামেদের অভিযোগ, বাবু শেখ সেখানে দাঁড়ালে জিতে যেত, সে কারণেই তৃণমূলের অঙ্গুলি হেলনে পুরনো একটি মামলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার ঠিক আগের রাতেই তড়িঘড়ি গ্রেফতার করল পুলিশ। যদিও এই বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে অস্বীকার করা হয়েছে তৃণমূলের পক্ষ থেকে। তাদের দাবি পুলিশ পুলিশের কাজ করছে, এর সঙ্গে তৃণমূলের কোন সঙ্গ নেই।