আইন-ই সার! কলকাতার বিভিন্ন বাজারে সিঙ্গল ইউজ প্লাসটিকের রমরমা ব্যবহার! দেশ জুড়ে নিষিদ্ধ সিঙ্গল ইউজ বা এক বার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের তৈরি সামগ্রীর ব্যবহার। ১লা জুলাই থেকেই যা কার্যকর হয়েছে। কিন্তু, শহরের বাজরগুলিতে ঘুরে দেখা গেল একেবারেই একেবারে অন্য ছবি। রমরমিয়ে বাজারে ব্যবহার করা হচ্ছে সিঙ্গল ইউজ প্লাস্টিক। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণে নিয়ম ভাঙার একই চিত্র।
তবে শুধু খাস কলকাতা নয়। জেলার ছবিও মোটামুটি একই রকম। এদিন সকালে কলকাতা পুর সভার নাকের ডগায় নিউমার্কেট চত্ত্বর ঘুরে চোখে পড়ল সিঙ্গল ইউজ প্লাসটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার। উদাসীন ক্রেতা ও বিক্রেতা। প্রশ্ন উঠছে তাহলে কী নজর দারির অভাবেই রমরমিয়ে বাড়ছে বিভিন্ন বাজারে সিঙ্গল ইউজ প্লাসটিকের ব্যবহার?
সিঙ্গল ইউজ প্লাসটিক ধীরে ধীরে ক্ষুদ্র থেকে অতি ক্ষুদ্র খণ্ডে ভেঙে গিয়ে পরিবেশের মারাত্মক দূষণ ঘটায় বলে দাবি বিজ্ঞানীদের। যা নিয়ে সচেতনতামূলক প্রচারও চলেছে। কিন্তু, তাতেও হুঁশ ফিরছে না সাধারণ মানুষের। সেই সঙ্গে শহর জুড়ে বাড়ছে ডেঙ্গির প্রকোপও। বিক্রেতাদের মত উদাসীন ক্রেতারাও। এদিন অন্তত সকাল থেকে কলকাতার একাধিক বাজারে ঘুরে প্রশাসনের তেমন সক্রিয়তা নজরে পড়েনি। অবাধে হাসি মুখে চলছে সিঙ্গল ইউজ প্লাসটিকেই বিকিকিনি।
আরও পড়ুন: < মিঠাইকে কপি করছে গৌরী-ঈশান! জুটির নতুন লুকে চরম কটাক্ষ দর্শকদের >
নিউমার্কেট চত্ত্বরে এক সবজী বিক্রেতা প্রশান্ত বর্মণকে এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে অবাক যুক্তি, “ তিনি দাবি করেন ক্রেতারা খালি হাতে বাজারে আসছেন, সবজি-মাছ কিনছেন। প্লাস্টিক চাইছেন। কিন্তু সরকার যে প্লাস্টিক ব্যবহার করতে বলেছে তার জন্য সর্বনিন্ম মূল্য ২ টাকা গ্রাহকদের থেকে নিতে হবে না হলে আমাদেরই ক্ষতি। ক্রেতারা সেই ২ টাকা দিতে চাইছেন না। ফলে আমাদের ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে”। পরিবেশবান্ধব সামগ্রী ব্যবহারে কবে সচেতন হবেন তিলোত্তমার মানুষ? এই প্রশ্নই এখন সবচেয়ে বড় হয়ে উঠেছে।
রাস্তার পাশের ফলের দোকান থেকে বাজারে মাছের বাজার, সর্বত্রই রমরমিয়ে চলছে স্বচ্ছ বা কালো রঙের পাতলা প্লাস্টিকের প্যাকেটের ব্যবহার। এই প্লাস্টিক ব্যবহারে জরিমানার হুশিয়ারিও রয়েছে তবে প্রশাসনের সেই হুশিয়ারিকে কার্যত বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে খাস কলকাতা পুরসভার সামনেই রাস্তার পাশের ফলের দোকান থেকে বাজারে মাছের দোকান, সর্বত্রই রমরমিয়ে চলছে স্বচ্ছ বা কালো রঙের পাতলা প্লাস্টিকের প্যাকেটের ব্যবহার।
শহরের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গিয়েছে, বহু ফল, মাছ, মুরগির মাংসের দোকানে স্বচ্ছ বা কালো প্লাস্টিকের প্যাকেট ব্যবহার করা হচ্ছে। ওই সব ব্যবসায়ীদের দাবি, শপিংমলে প্লাস্টিকের জন্য মূল্য দেন গ্রাহকেরা। বড় দোকানে সামগ্রীর সঙ্গে প্লাস্টিকের দাম জুড়ে নেওয়া হয়। কিন্তু তাঁদের মতো ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা প্যাকেটের জন্য দাম চাইলে ক্রেতারা আসতে চান না। তাই ব্যবসার খাতিরে এই পথ নিতে বাধ্য হচ্ছি।
কালো রঙের পাতলা প্লাস্টিকের প্যাকেটে ফল কিনে যাচ্ছিলেন এক ক্রেতা, প্রশ্ন করতেই সটান জবাব, “ মোবাইলের মত প্লাস্টিকও আমাদের জীবনের একটা অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। এত কম সময়ে এতদিনে অভ্যাস বদল সম্ভব নয়। এর জন্য আরও বেশি সময় দরকার”। তবে প্রশ্ন হচ্ছে যেভাবে গত কয়েক বছরে বর্ষায় শহরের বেশ কিছু এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বা এই পাতলা প্লাস্টিক পরিবেশকে যেভাবে দূষিত করে চলেছে তাতে আর কবে হুঁশ ফিরবে সাধারণের! অভিযানে ভাটা পড়ল কেন, সদুত্তর মেলেনি পুর কর্তৃপক্ষের কাছে। তবে পুরসভার তরফে আশ্বাস, দ্রুত এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।