বাংলায় ফের শুরুর পথে করোনায় স্তব্ধ শিশু টীকাকরণ

টীকাকরণের নিয়মাবলী মেনেই ফের এই পরিষেবা শুরু করা হবে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে। জন্মের পর যে টীকাকরণ প্রক্রিয়া চলে তাও পুনরায় চালু করা হবে বলেই জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায়।

টীকাকরণের নিয়মাবলী মেনেই ফের এই পরিষেবা শুরু করা হবে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে। জন্মের পর যে টীকাকরণ প্রক্রিয়া চলে তাও পুনরায় চালু করা হবে বলেই জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

বেনজির করোনা পরিস্থিতিতে পশ্চিমবঙ্গে বন্ধ হয়েছিল শিশুদের টীকাকরণ। কিন্তু শিশুর পরিবার, ইউনিসেফ এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের উদ্বেগের মুখে শর্তসাপেক্ষে ফের টীকাকরণ শুরু করতে চলেছে রাজ্য স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ দফতর। টীকাকরণের নিয়মাবলী মেনেই ফের এই পরিষেবা শুরু করা হবে রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন জোনে। জন্মের পর যে টীকাকরণ প্রক্রিয়া চলে তাও পুনরায় চালু করা হবে বলেই জানানো হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশিকায়। তবে কনটেনমেন্ট এলাকার ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা আঁটসাঁট করা হয়েছে নিয়ম।

Advertisment

এক নজরে দেখে নেওয়া যাক টীকাকরণের নিয়মাবলীঃ-

হটস্পট জেলা (রেড জোন) এবং নন-হটস্পট জোন (অরেঞ্জ জোন):

যে জেলাগুলি এই জোনের অন্তর্ভুক্ত থাকবে, তাঁদের অবশ্যই টীকাকরণের ক্ষেত্রে মানতে হবে একাধিক নিয়ম, যেমন-

Advertisment

* কনটেন্টমেন্ট জোন এবং বাফার জোনে শিশুদের জন্মের পর যে টীকাকরণ প্রক্রিয়া আছে তা চালু থাকবে। তবে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যে পরিষেবা দেওয়া হয় পঞ্চায়েত বা পুরসভা থেকে তা বন্ধই থাকবে। বাইরে কোথাও নিয়ে গিয়েও টীকাকরণ করানো যাবে না।

* বাফার জোনের বাইরে যারা থাকবেন তাদের ক্ষেত্রে জন্মের পর টীকাকরণ প্রক্রিয়া চালু থাকার পাশপাশি স্বাস্থ্য সুবিধা যেখানে দেওয়া হয় সেটিও পাওয়া যাবে। তবে বাইরে গিয়ে টীকাকরণের বিষয়টিতে একাধিক নিয়ম মানতে বলা হয়েছে।

* কনটেন্টমেন্ট জোন এবং বাফার জোনের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের থেকে পরিষেবা পেতে গেলে টীকাকরণের বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনকে জানালে তাঁরা সে ব্যবস্থা পৃথক করে দিতে পারবে।

* বাফার জোনে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে টীকাকরণের সময় মেনে চলতে হবে কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম, যেমন-

-একটি সেশনে আসতে পারবেন ১০ থেকে ১৫ জন।

-ভিড় হতে দেওয়া যাবে না।

-একটি নির্দিষ্ট সময়ে ৫ জনের বেশি লাইনে দাঁড়াতে পারবেন না। মাঝে দূরত্ব রাখতে হবে অন্তত ১ মিটার।

-কীভাবে এই টীকাকরণ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে তা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে পরিকল্পনা করে করতে হবে সংস্থাগুলিকে।

নন জোন-ইনফেকটেড জোন (গ্রিন জোন):

এই জোনে যারা রয়েছে তাঁদের ক্ষেত্রে টীকাকরণ চলবে আগের মতোই। তবে কোভিড আবহে মেনে চলতে হবে সব নিয়ম। যেমন-

* স্যানিটাইজেশন থেকে মাস্ক, করোনাভাইরাস প্রকোপ চলাকালীন টীকাকরণের ক্ষেত্রে যা যা নিয়ম আছে তা সবই মানতে হবে।

* স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ভিড় হতে দেওয়া যাবে না।

* টীকাকরণের সেশন শুরুর আগে ১ মিটার দূরত্বে মার্ক করে দিতে হবে, সেখানেই নিয়ম মেনে দাঁড়াতে হবে।

* টীকাকরণ পরবর্তী সময়ে শিশুদের নিয়ে অপেক্ষা করার জন্য আলো বাতাস চলাচল করে এমন ঘরের বন্দোবস্ত রাখতে হবে।

* টীকাকরণ পরিষেবার জন্য সব জেলাতেই একাধিক 'সেশন' করার পন্থা অবলম্বন করা হবে।

এছাড়াও সব জোনের ক্ষেত্রেই টীকাকরণের ওষুধ যেন পর্যাপ্ত থাকে সে দিকেও লক্ষ্য রাখতে বলা হয়েছে। যিনি টীকা দেবেন তাঁকেও সার্জিকাল গ্লাভস, মাস্ক পরতে হবে। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বসার এবং তাঁদের দেখভাল করার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রাখতে হবে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যখনই কেউ ঢুকবে প্রত্যেককেই স্যানিটাইজ করে ঢোকানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে।

প্রসঙ্গত, রাজ্যে টীকাকরণ চালু রাখতে চেয়েছিলেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা। ওয়েষ্ট বেঙ্গল এএনএমআর অক্সিলিয়ারি নার্স মিডওয়াইফ রিভাইজড এমপ্লয়িজ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদিকা রেখা সাউ বলেন, “আমরাও চাইছি টীকারকরণ কর্মসূচি চালু হোক। তবে পরিকাঠামোগতভাবে ভ্যাকসিনেশনের একটা সমস্যা আছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলির ঘরগুলি ছোট ছোট। শিশুদের প্রতিষেধক দেওয়ার পর আধঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে। সেই সব কথাও ভাবতে হবে। তাছাড়া করোনা আতঙ্ক তো রয়েছেই। শিশুর সঙ্গে বাড়ির লোকও আসবেন। সর্বত্র কোভিড-১৯ পরীক্ষা হয়েছে এমনও নয়। অনেক ব্লকে বুধবার টীকার কথা বলা হয়েছে। আমরা যথেষ্ট পরিমাণে পিপিই ও হ্যান্ড স্যানিটাইজারের যোগান দিতে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে দাবি জানিয়েছি। পরিকাঠামোর সমস্যার কথাও বলেছি।” তবে এদিনের নির্দেশিকা সে সব দিক বিবেচনা করেই জারি করা হয়েছে বলে মনে করছে স্বাস্থ্যমহল।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

West Bengal coronavirus