ওড়িশার জাজপুর স্টেশন পার হতেই ঝড়ের আঘাতে থমকে গেল পুরী-হাওড়া বন্দে ভারত ট্রেনের চাকা। ঘটনার পর পুরী থেকে হাওড়ায় ফিরছিল ট্রেনটি। সেই সময়ই দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় প্রবল ঝড়ে বন্দে ভারত ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যায়। আর, তাতেই বিকল হয়ে যায় ট্রেনটি। যার জেরে সোমবার বাতিল করে দেওয়া হল হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস।
রেল সূত্রে খবর, ঘটনার সময় ওড়িশায় ঝড়-বৃষ্টি চলছিল। তারই মধ্যে বাজ পড়ে। রেলের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার জেরে ইঞ্জিন-সহ ট্রেনের কামরাগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেই ক্ষতি সারাতেই সোমবার হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত এক্সপ্রেস বাতিল করা হল। রেল সূত্রে খবর, ইঞ্জিনের পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এই ট্রেনের দুটি কামরা টি-২ এবং টি-৩ এর জানালার কাচও। বাজ পড়ার পর থেকেই ট্রেনটি লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে। ঝড়ে প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যাওয়ায় ট্রেনটির বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ হয়ে যায়। পাশাপাশি, ওই লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচলও বন্ধ হয়ে পড়ে।
ঘটনার জেরে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়ায়। কিন্তু, জাজপুর এ দীর্ঘক্ষণ ঝড়-বৃষ্টির দাপট অব্যাহত থাকায় ট্রেনটি সরাতে রেলকর্তাদের বেগ পেতে হয়। রেল সূত্রে খবর, বাজ পড়ার পর ট্রেনটি বৈতরণী নদীর লোহার ব্রিজের ওপরে ছিল। সেখানেই ট্রেনটি থেমে যায়। রেল সূত্রে খবর, প্রচণ্ড শিলাবৃষ্টি চলছিল। সেই শিলার আঘাতে ট্রেনটির বিভিন্ন কামরা ও চালকের কেবিনের কাচ ভেঙে গিয়েছে।
আরও পড়ুন- মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অলআউট যাবেন কেজরিওয়াল, মমতার সঙ্গে দেখা করতে আসছেন শহরে
বিদ্যুৎ চলে যাওয়ার পর অন্ধকারের মধ্যেই যাত্রীরা ট্রেনটিতে বসে থাকতে বাধ্য হন। ট্রেনের বিভিন্ন শৌচাগারগুলো ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এই পরিস্থিতিতে সমস্যা দেখা দেয়, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের ইঞ্জিনগুলো কামরার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায়। তার ফলে, অন্য কোনও ইঞ্জিন এনে ট্রেনটিকে টেনে নিয়ে যাওয়াও সম্ভব হয়নি। তাই বন্দে ভারতের আরপিএফ কর্মীরা রেলকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। ডেকে আনা হয় ট্রেন সারানোর ইঞ্জিন। এরপর ডিজেলচালিত ইঞ্জিন এনে ট্রেনটিকে চালানোর ব্যবস্থা করেন রেলকর্মীরা।
প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত বন্দে ভারত ট্রেনটি রবিবার দুপুর ১টা ৫০ নাগাদ পুরী স্টেশন থেকে ছাড়ে। এর কিছু পর থেকেই শুরু হয় প্রবল ঝড় ও বৃষ্টি। ঝড়ে গাছের ডাল পড়ে ট্রেনের প্যান্টোগ্রাফ ভেঙে যায়। শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কামরায় চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। এরপর রাত ৮টা ৫ নাগাদ নিয়ে আসা হয় ডিজেলচালিত ইঞ্জিন। ৮টা ২০ নাগাদ ট্রেনটি হাওড়ার পথে রওনা হয়।
বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল মাধ্যমে হাওড়া-পুরী বন্দে ভারত ট্রেনের উদ্বোধন করেছিলেন। এরপর শনিবার থেকে ট্রেনটি চালু হয়। সফরের দ্বিতীয় দিনেই ট্রেনটি প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বিপাকে পড়ল। হাওড়া থেকে সকাল ৬টা ১০-এ ছাড়ছে বন্দে ভারত। পুরী পৌঁছচ্ছে দুপুর ১২টা ৩৫ নাগাদ। আবার, দুপুর ১টা ৫০ নাগাদ পুরী থেকে ছাড়ছে। হাওড়ায় পৌঁছচ্ছে রাত ৮টা ৩০ নাগাদ। চেয়ার কারে যেতে ভাড়া লাগছে ১,২৬৫ টাকা। আর, এগজিকিউটিভ ক্লাসে লাগছে ২,৪২০ টাকা।