Burdwan mango news: বাংলার মাটিতেই ফলছে পাকিস্তান, আফগানিস্তান, ইন্দোনেশিয়া থেকে ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়ার মত দেশের বিভিন্ন প্রজাতির আম। পাশাপাশি প্রায় ৩০টিরও বেশি বিদেশি আম গাছের চারা বিক্রি হচ্ছে পূর্বস্থলীতে! এই সকল আম চারার চাহিদা আকাশছোঁয়া। লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের আশায় সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন রাজ্যের নানান প্রান্তের মানুষ।
কেবল দেশি আম নয়। রসনা প্রিয় বাঙালির মনে ধরেছে এখন বিশ্বের নানান দেশের সুস্বাদু সব আম। সেজন্য গত কয়েকবছর ধরে বেড়েছে বিদেশি আমের চাহিদা। অনেকেই তাই বেশি উপার্জনের আশায় সেই সব প্রজাতির আম চারা সংগ্রহ করে শুরু করেছেন তার চাষ। আর তাতেই কেল্লাফতে। চাকরির প্রয়োজন পড়ছে না। ঠিক ভাবে চাষ করলে সুযোগ থাকছে লক্ষ লক্ষ টাকা উপার্জনের।
পূর্বস্থলীর স্টেশন সংলগ্ন এলাকার এক নার্সারিতে মিলছে বিদেশি আমের এমন ৩০ থেকে ৪০ রকমের চারা। পাশাপাশি সেই নার্সারিতেই ফলন হচ্ছে একাধিক প্রজাতির বিদেশি আমের। কী নেই তালিকায়! রয়েছে আলফানসো, টমি আটকিনস, ন্যাম ডক মাই, রেড আইভরি, সিয়ন, সন অফ গোল্ড, তাইওয়ান রেড, অস্ট্রেলিয়ান কালাবাউ, অ্যাপেল ম্যাঙ্গো, চিলি ম্যাঙ্গো , ব্যানানা কিং , রসগোল্লা আম, নূর জাহান, মিয়াজাকি।
আরও পড়ুন : < Motivational News: নতুন সুযোগে বদলেছে জীবনের মানে, ‘ব্রাত্য’দের নিয়েই গড়ে উঠেছে এই ‘স্পেশ্যাল’ ক্যাফে >
কোনটি কলার মত লম্বা তো কোনটি আবার দেখতে লঙ্কার মত। আবার কোনটির ওজন চার কেজি। বিদেশি আমের এত বিপূল সম্ভার দেখতে এবং সেই সকল চারা সংগ্রহ করতে এই নার্সারিতে ফি দিনই উৎসাহী মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।
প্রায় সাত দশক ধরে বংশ পরম্পরায় বিভিন্ন ফুল ও ফলগাছ থেকে তারা যেমন কলম তৈরি করে চারা বিক্রি করেন, তেমনই সেই গাছগুলি থেকে ফুল ও ফল ফলান। দেশি ও বিদেশি মিলিয়ে প্রায় শতাধিক ধরনের আমগাছ রয়েছে এই নার্সারিতে। মালিক শংকর দত্ত জানান, “আমাদের এই নার্সারিতে ৫০-এর বেশি বিদেশি আমের চারা রয়েছে। তার মধ্যে ৩০টির কাছাকাছি বাজারে ছাড়া হয়েছে। বিদেশের আম নিয়ে বাঙালির আগ্রহ বেশ বেশি। এই সব আম খেতে যেমন সুস্বাদু, দেখতেও সুন্দর। ইন্দোনেশিয়া, ব্রিটেন, জাপানের আম হলেও সেই সব এখানকার মাটিতে ফলছে"।
দেশি আমের তুলনার বিদেশি আমচারা নিয়ে চাষ করা অনেক বেশি মুনাফার। কেন, সেই প্রশ্নে তিনি বলেছেন, " দেশি আমগাছ অনেক সময় একবার ফল দেওয়ার পর পরের বছর ফল নাও দিতে পারে। কিন্তু বিদেশি গাছের চারা ঠিকমত বড় করলে প্রতিবছর তাতে আম হয়। এর মধ্যে কোন আমের কেজি ২.৫ লক্ষ টাকা তো কোন আম দেড় লক্ষ টাকা কেজি। কুড়ি বছর ধরে এই বিদেশী গাছের চারা সংগ্রহ করছি"।
প্রথম চারা নিয়ে আসেন বাংলাদেশ থেকে। তবে এখন তাইওয়ান, চিন , জাপান, মালয়েশিয়া, আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া থেকেও গাছের চারা আসে। শঙ্করবাবু বলেন, "বিদেশি আম চারার একটা সুবিধা এই গাছ বেশি উচ্চতার হয় না। ফলে যে কেউ অল্প জায়গায় চাষ করতে পারেন। এই সকল চারা বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। রাজ্যের নানান প্রান্ত থেকে মানুষজন এখানে আসছেন পরখ করছেন। বিদেশি আমচারা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এক সময় যে সকল আমের নাম আমরা ইন্টারনেটে দেখেছিলাম সেই সব আম এখন বাড়িতেই ফলানো সম্ভব হচ্ছে"।