অ্যাডিনো ভাইরাস নিউমোনিয়ার তাণ্ডব! চলতি বছরেই বিভিন্ন হাসপাতালে ৫৮ শিশুর মৃত্যু। ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র কলকাতার বিসিরায় শিশু হাসপাতালে ৬ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। সব মিলিয়ে রীতিমত আতঙ্কের পরিবেশ রাজ্য জুড়ে। ঘরে ঘরে জ্বর-সর্দি--কাশি! চিকিৎসক দের চেম্বারে ভিড় উপচে পড়ছে। এর মাঝেই ভেন্টিলেটর বিকল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠলো বিসিরায় শিশু হাসপাতালে। অবশেষে চিকিৎসকরা তড়িঘড়ি পরিস্থিতি সামাল দেওয়ায় এড়ানো গিয়েছে বড়সড় বিপদ। একটানা উপচে পড়া ভিড়ে টানা ভেন্টিলেটর চলাতেই কী বিকল হয়ে গিয়েছে ভেন্টিলেটর? উঠছে প্রশ্ন।
সূত্রের খবর, জ্বর, শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ৬ মাসের শিশুকন্যা। অ্যাডিনো উপসর্গ থাকায় ভেন্টিলেশনে রাখতে হয় শিশুকন্যাকে। বৃহস্পতিবার সকালে আচমকাই ভেন্টিলেটর খারাপ হয়ে যায়। তড়িঘড়ি বিশেষ উপায়ে চিকিৎসকরা প্রাণ বাঁচান শিশুটির। বিসি রায় হাসপাতালে এই ঘটনা ঘটেছে।
চিন্তা বাড়াচ্ছে অ্যাডেনোভাইরাস। শহরের হাসপাতালগুলি থেকে চিকিৎসদের চেম্বার উপচে পড়ছে ভিড়। গত কয়েকদিনেই জ্বর শ্বাসকষ্ট উপসর্গ নিয়ে ১২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে। অ্যাডিনো উদ্বেগের মধ্যেই গতকাল বিসি রায় হাসপাতালে ভেন্টিলেটর বিকল হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বিরামহীন ব্যবহারের ফলে ভেন্টিলেটরটি বিকল হয়ে গিয়েছে। চিকিৎসকদের তৎপরতায় বড়সড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে। শুধু কলকাতা নয় রাজ্যের সর্বত্রই একই ছবি। জেলায় জেলায় হাসপাতালগুলিতে উপচে পড়েছে ভিড়। বাড়ানো হচ্ছে ভেন্টিলেটরের সুবিধাও। পাশাপাশি শিশু চিকিৎসকদের ছুটি বাতিলের নির্দেশ জারি করা হয়েছে।
প্রায় ঘরে-ঘরে জ্বর-সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছে শিশুরা। শহর থেকে জেলা, এছবি এখন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় দেখা যাচ্ছে। সরকারি হাসপাতালগুলিতে জ্বর-সর্দিতে কাবু শিশুদের ভিড় ক্রমেই বাড়ছে। শিসু ভর্তির বিপুল চাপ সামাল দিতে হিমশিম দশা হচ্ছে হাসাপাতলগুলির । কোনও কোনও হাসপাতালে পর্যাপ্ত শয্যার বন্দোবস্ত না থাকায় বাধ্য হয়েই একটি বেডে ২-৩ জন শিশুকে রাখা হচ্ছে।
রাজ্যের একের পর এক হাসপাতালে শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে বাড়ছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ মনে করেন এখনই বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসা উচিত রাজ্য সরকারের। করোনাকালের কথা তুলে ধরে রাজ্য সরকারকেই এব্যাপারে নিশানা করেছেন বিজেপি নেতা। তিনি বলেন, ‘করোনার সময় লুকনোর চেষ্টা হয়। করোনা আটকানেরা চেষ্টা হয়নি। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যায়। ভুল তথ্য লেখা হতো। এখানেও সরকার একই ভুল করছে। বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বসা উচিত। কেন্দ্রীয় সরকারের সাহায্য নেওয়া উচিত রাজ্যের।’