Advertisment

কান দিয়ে দেখেন মুখ্যমন্ত্রী! মমতাকে বিস্ফোরক চিঠি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের

চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছ থেকে রাস্তাও ফেরত চেয়েছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Vidyut Chakraborty and Mamata Banerjee

বামদিকে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ও ডানদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

আর ভায়া গণমাধ্যম নয়। এবার সরাসরি চিঠি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যাকে তীব্র কটাক্ষ করলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে তিনি লিখেছেন, 'আপনার স্তাবকরা যা বলেন, আপনিও তা-ই বিশ্বাস করেন। আপনি এখনও কান দিয়েই দেখেন!' এর আগে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে জমি বিবাদের সময়ও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে একই কথা বলেছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। সেই সময়ও তাঁর মন্তব্য ঘিরে তীব্র বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। যার জেরে তীব্র বিতর্ক ছড়িয়েছিল। তবে, সেবার উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই কথা লিখিত আকারে বলেননি। বলেছিলেন সংবাদমাধ্যমের কাছে, মৌখিকভাবে। আর, এবার সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে 'কান দিয়ে দেখেন' বলে কটাক্ষ!

Advertisment

স্বভাবতই দলগতভাবে তৃণমূল কংগ্রেস বিষয়টা ভালোভাবে নেয়নি। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেছেন তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব। তৃণমূল নেতা তথা দলের মুখপাত্র শান্তনু সেন তাঁর প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, 'বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়কে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী যে কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন, সেটা আমরা সকলেই জানি। উনি অমর্ত্য সেনের সঙ্গে যা করেছেন, তা-ও আমাদের কারও অজানা নয়। এই উপাচার্যকে অবিলম্বে সরাতে হবে। এই ব্যাপারে কেন্দ্রের সঙ্গে যে কথা বলার, আমরা বলব।'

মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর এই সাম্প্রতিক সংঘাতের সূত্রপাত ইউনেস্কোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট ঘোষণার পর থেকে। ইউনেস্কোর স্বীকৃতির আনন্দে গোটা বাংলা যখন মশগুল, তখন বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নেতৃত্বাধীন বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ ছাতিমতলা, উপাসনাগৃহ এবং রবীন্দ্রভবনের উত্তরায়নের সামনে শ্বেতপাথরের ফলক বসিয়েছে। সেখানে লেখা আছে, 'ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট'। আর, তার নীচে লেখা আছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম। কিন্তু, ফলকের কোনও কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম নেই। তার প্রতিবাদে তৃণমূল সুপ্রিম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি বুকে নিয়ে শান্তিনিকেতনে ধরনা শুরু করেছেন স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, 'গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনে যে বিশ্ব ঐতিহ্যের ক্ষেত্র শান্তিনিকেতনকে তৈরি করেছেন, তাকে বর্তমানে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। তার স্মারক হিসেবে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ যে ফলক বসিয়েছে, তাতে উপাচার্যের নাম আছে। কিন্তু, গুরুদেবের (রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর) নামই বাদ গেছে। কেন্দ্রীয় সরকারকে বলব, অহংকারী আত্মপ্রদর্শনের নমুনা সরিয়ে দেওয়া হোক। দেশ যাতে গুরুদেবকে তাঁর প্রাপ্য সম্মান জানাতে পারে, তার ব্যবস্থা হোক।'

আরও পড়ুন- গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত খড়দা, সংঘর্ষে মৃত্যু তৃণমূলকর্মীর, দেহ রেখে থানায় বিক্ষোভ

জবাবে রবিবার পাঠানো চিঠিতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য লিখেছেন, ওই ফলক ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ বা এএসআইয়ের নির্দেশে তৈরি হচ্ছে। আর, সেই ফলকই কিছুদিনের মধ্যে সবাই দেখতে পাবেন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীকে শুধুমাত্র 'কান দিয়ে' দেখার অভিযোগ করেই ক্ষান্ত হননি বিশ্বভারতীর উপাচার্য। তিনি উপাসনাগৃহ থেকে কালীসায়র পর্যন্ত রাস্তাও ফেরত চেয়েছেন। বিশ্বভারতীর ভিতরের ওই রাস্তা ফেরত চেয়ে আগে দু'বার মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠিও লিখেছিলেন উপাচার্য। তার কোনও উত্তর রাজ্য সরকার দেয়নি। তারপর রবিবার ফের ওই রাস্তা ফেরত চাইলেন বিশ্বভারতীর কর্তা।

Visva-Bharati University Bidyut Chakraborty Mamata Banerjee
Advertisment