'দিদির দূত' হিসেবে নিজের এলাকায় পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। আর, সেখানে গ্রামবাসীদের চরম বিক্ষোভের মুখে পড়তে হল মুরারই বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক মোশারফ হোসেনকে। রবিবার মুরারই-১ নম্বর ব্লকের ডুমুরগ্রাম অঞ্চলে গিয়েছিলেন বিধায়ক। সেখানকার বালিয়ারা গ্রামে যেতেই বিধায়ককে ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীরা। জানাতে শুরু করেন একের পর এক অভিযোগ। 'পঞ্চায়েতের সদস্যরা চোর', 'গ্রামে একটাও কাজ হয়নি', 'আপনি কোনও কিছুই দেখেন না'- একের পর এক অভিযোগ বিধায়ককে জানাতে থাকেন গ্রামবাসীরা।
ক্রমশ তাঁদের ভাবভঙ্গি রীতিমতো আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। শান্ত মুখে স্মিত হাসিতে বাসিন্দাদের বোঝানোর চেষ্টা করেন বিধায়ক। তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করেন নিজে শান্ত থেকে। কিন্তু, গ্রামবাসীরা শান্ত হননি। যেখানেই বিধায়ক পা বাড়িয়েছেন, বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীরা ঘিরে রেখেছেন তাঁকে। স্থানীয়দের অনেকে নিজেদের তৃণমূলকর্মী বলে পরিচয় দিয়েছেন বিধায়ককে। তাঁকে বলেছেন, ডুমুরগ্রামে কোনও কাজও হয় না। আর, তাঁরা একশো দিনের কাজ পর্যন্ত পান না। এমন করলে আর এই দলটা (তৃণমূল কংগ্রেস) করবেন না।
বিধায়ক যেন ডুমুরের ফুল। গ্রামবাসীরা তাঁর খোঁজ পান না। কার্যত এই ভঙ্গিমায় গ্রামবাসীরা জানতে চান, বিধায়ককে কোথায় গেলে পাওয়া যাবে? বিধায়ক হাসিমুখে সমস্ত সমস্যা ও বিক্ষোভ এড়ানোর চেষ্টা করলে, গ্রামবাসীদের রোষ ধরা পড়ে তাঁদের শারীরিক ভঙ্গিমায়। তাঁরা বিধায়ককে রীতিমতো তিরস্কার করেন। কার্যত একসুরেই তাঁরা বিধায়ককে জানিয়ে দেন, 'পঞ্চায়েতে ব্যাপক চুরি হয়েছে। চোর হঠাও। আগের বোর্ডের কাউকে সদস্য করা যাবে না। পঞ্চায়েত নির্বাচনে একটিও চোরকে রাখা চলবে না।'
আরও পড়ুন- মুখ পুড়ল বিজেপির, আবাস যোজনায় রাজ্যের পিঠ চাপড়ে দিল মোদী সরকার
এক গ্রামবাসী বিধায়ককে বলেন, 'সরকার টাকা দেবে কেন? সরকার টাকা দেবে আর আপনি খাবেন পাঁচ হাজার? হারামের পয়সা? মাটি কাটার টাকা খাবেন, হিসাব দেবেন না? টাকার আয়-ব্যয়ের হিসাব দিলে তবেই সঠিক কাজ হবে।' গ্রামবাসীর এই সব অভিযোগের কোনও উত্তর দিতে পারেননি বিধায়ক মোশারফ হোসেন। স্থানীয় তৃণমূলকর্মী রফিকুল মোমেন বলেন, 'এখানে একশো দিনের কাজ থেকে আবাসন, পানীয় জলের টিউবওয়েল কোনও কাজ হচ্ছে না। সব টাকা খেয়ে ফেলছে পঞ্চায়েত প্রধান থেকে সদস্যরা। আমরা বিধায়ককে বললাম। এসব দুর্নীতিগ্রস্তদের টিকিট দিলে আমরা তৃণমূল করাই ছেড়ে দেব।'
ঘটনাস্থল থেকে বেরিয়ে আসার পর এই প্রসঙ্গে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হলে মোশারফ হোসেন বলেন, 'বালিয়ারা গ্রামের মানুষ রাস্তাঘাট, পানীয় জলের সমস্যার কথা বলেছেন। আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজে দুর্নীতির কথা বলেছেন। আমি ওদের বলেছি লিখিত আকারে অভিযোগ জানান। আমি সেই কাগজ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেব।'