পরকীয়া নিয়ে তুমুল অশান্তি। সেই গন্ডগোল থামাতে গিয়ে ধুন্ধুমার কান্ড। এই নিয়ে পুলিশ ও গ্রামবাসীদের সংঘর্ষ ঘটল। জখম উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন। গ্রামবাসীদের হাতে বেধড়ক মার খেলেন তিন পুলিশ আধিকারিক সহ আট পুলিশকর্মী। তাঁদের মধ্যে এক পুলিশ আধিকারিকের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মল্লারপুর থানার পাথাই গ্রামে।
মল্লারপুর থানার পাথাই গ্রামের মাল পাড়ার বাসিন্দা প্রদ্যুত মালের বিয়ে হয় ৮ দিন আগে। তার পরেও তিনি পাশের পাড়ার বাসিন্দা মায়া মালকে বিয়ে করতে চান। অভিযোগ, সোমবার টোটোতে করে বাড়ি ফেরার পথে তিনি মায়াকে কুপ্রস্তাব দেন। স্যোশাল মিডিয়ায় তার সঙ্গে মায়ার ছবি পোস্ট করেন বলেও অভিযোগ। সেই ঘটনা নিয়ে শুরু হয় বচসা। বুধবার মায়া তাঁর স্বামীকে নিয়ে বিষয়টির মীমাংসা করতে প্রদ্যুতের বাড়ি যান। তখনই প্রদ্যুৎ জানান, 'মায়ার সঙ্গে তাঁর কোনও সম্পর্ক নেই'। কিন্তু পরক্ষণেই তিনি দাবি করেন, 'তিনি মায়াকে বিয়ে করতে চান'। কথা শুনে তাঁর বাড়িতে দাঁড়িয়েই সবার সামনে প্রদ্যুৎকে সপাটে চড় কষান মায়া। দুপক্ষই মল্লারপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে।
বদলা নিতে বৃহস্পতিবার সকালে মায়ার বাড়িতে হাজির হয় প্রদ্যুতের লোকজন। হাজির হয় পুলিশও। দুপক্ষকে থামাতে গেলে গ্রামবাসীরা পুলিশের উপর চড়াও হয় বলে অভিযোগ। গ্রামবাসীদের দাবি, 'মল্লারপুর থানার এক পুলিশ আধিকারিক গ্রামের এক নিরপরাধ যুবককে ইট দিয়ে তার মাথায় আঘাত করে। সেই ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে'। পাল্টা পুলিশের উপর চড়াও হয় গ্রামবাসীরা। ইটের আঘাতে জখম হন তিন পুলিশ আধিকারিক সহ, ৫ জন কনস্টেবল। একজনের মাথা ফাটে। দুজনের হাতে কোমরে গুরুতর চোট লাগে। তিন গ্রামবাসীও জখম হন।
জানা গিয়েছে, আহতদের প্রথমে মল্লারপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করা হয়। পরে বেশ কয়েকজন পুলিশ কর্মীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। গুরুতর জখম মায়া মালও। তাঁকে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়েছে। প্রদ্যুৎ ঘটনার পর থেকে ঘরছাড়া। এএসআই জনার্দন ঘোষের অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনার পর দোষীদের গ্রেফতার করতে গ্রামে বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি চালাচ্ছে মল্লারপুর থানার পুলিশ। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তল্লাশির নামে বাড়িতে ঢুকে গৃহস্থালির জিনিস পত্র ভাংচুর করছে পুলিশ। ঘটনায় ৮ জন গ্রামবাসীকে আটক করা হয়েছে।