বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে (বিআইটিএম) খুলে গেল নতুন একটি গ্যালারি, নাম ‘ভিন্টেজ ভয়েজ’। মানব সভ্যতার জন্মলগ্ন থেকে মানব জাতির উন্নতির হাতিয়ার প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে প্রতিনিয়ত বদলে যাচ্ছে আমাদের যোগাযোগের মাধ্যম। চিঠি থেকে ইমেল, পোস্ট কার্ড থেকে ইন্সটাগ্রাম। ডায়রি লেখার বদলে এখন জায়গা নিয়েছে ফেসবুক, টুইটার। হাতের মুঠোফোনের এক আঙুলের ছোঁয়াতে সব কিছু সহজ থেকে আরও সহজতর হয়ে গিয়েছে। টেলিভিশন, টেলিফোন এসব সময়ের বিবর্তনে বদলাতে থাকা ডিভাইসের গায়ে লেখা মানব সভ্যতার উন্নতির ইতিহাস। আর সেই ইতিহাসের বিবর্তনকে এক ছাদের তলায় নিয়ে এসেছে বিআইটিএম ‘ভিন্টেজ ভয়েজ’ গ্যালারি।
এই মিউজিয়ামে রাখা রয়েছে প্রযুক্তির উদ্ভাবনের সময় থেকে ব্যবহৃত সমস্ত প্রযুক্তির মডেল। ভারতবর্ষে এই প্রথম এই ধরণের গ্যালারি তৈরি করা হয়েছে। মানুষের যোগাযোগ মাধ্যম ধাপে ধাপে কীভাবে উন্নতর হয়েছে এখানে এলে তা চোখের সামনে দেখতে পাওয়া যাবে। এখানে রাখা আছে মোর্স কোড রিডার। গোপন তথ্য আদান প্রদানের জন্যে পুরনো দিনে যুদ্ধের সময় এই যন্ত্র ব্যবহার করা হত।
খুব কম সময়ে মধ্যে এই যন্ত্র দিয়ে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সহজে খবর পাঠানো যেত। এছাড়া গ্যালারিতে সাজিয়ে রাখা টেলিফোনের বিবর্তনের ইতিহাস। এর পাশাপাশি সাজানো রেডিওর বিবর্তন। ভিন্টেজ ভয়েজ গ্যালারিতে ৭৫টিরও বেশি এরকম প্রযুক্তিগত বিবর্তনের কালেক্টিভ আইটেম রয়েছে।
গ্যালারিটিকে মোট চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রথমটি ট্রান্সমিট বিভাগ, এখানে রাখা রয়েছে মর্স কোড, টেলিগ্রাফি, ইত্যাদি। দ্বিতীয় ব্রডকাস্ট বিভাগ। বিভিন্ন ধরনের রেডিও দিয়ে সাজিয়ে তোলা হয়েছে বিভাগটি। তৃতীয় টেথার বিভাগ নানা ধরণের টেলিফোন দিয়ে সাজানো এই এটি। সব শেষে স্বদেশী কানেক্ট বিভাগ। সব থেকে মজাদার এই বিভাগ।
দর্শকরা এখানে দেখার সুযোগ পাবেন ভারতীয় প্রযুক্তির বিবর্তনের ইতিহাস। গ্রামোফোনে শুনতে পাবেন রবীন্দ্রনাথের গলায় গাওয়া গান। প্রতিটি মডেলের গায়ে রয়েছে কিউআর কোড। চাইলে এই কিউআর কোড স্কেন করে আরও বিশদে জেনে নিতে পারেন এসব ডিভাইসের পুরনো সব তথ্য।
এই গ্যালারিটির উদ্বোধন করেন ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ সায়েন্স মিউজিয়াম এবং নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যাপক অভিজিৎ চক্রবর্তী। সরকারি ছুটির দিন ছাড়াও গ্যালারিটি প্রতিদিন খোলা থাকে। প্রতি সপ্তাহের সোম থেকে শুক্র সকাল ৯.৩০ থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শনি-রবি খোলা থাকে ১০.৩০ টা থেকে রাত ৮টা।