প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনকে বরখাস্ত করল বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। একই সঙ্গে বরখাস্ত করা হয়েছে প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৌগত চট্টোপাধ্যায় ও ফিনান্স অফিসার শমিত রায়কেও। তাঁদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির গৃহীত সিদ্ধান্ত বদলে দেওয়ার অভিযোগ প্রমাণিত হয়। তারপরই বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে অবসর নেন অধ্যাপক স্বপন বসু। এরপর ফেব্রুয়ারির ২ তারিখ মানব সম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকের নির্দেশে বিশ্বভারতীয় উপাচার্যের ভার দেওয়া হয় সবুজকলি সেনকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনগুলির অধিকর্তাদের মধ্যে বয়ঃজ্যেষ্ঠ হওয়ার নীতিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে অধ্যাপক সেনকে এই ভার দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বিনয় ভবনের অধিকর্তা হিসাবে ফেব্রুয়ারিতেই অধ্যাপক সেনের উপাচার্য হিসাবে কার্যকালের মেয়াদ শেষের কথা ছিল। কিন্তু, ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব সামালাতে গেলে সবুজকলি সেনের অধিকর্তার মেয়াদ বৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল।
১৭ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত ছিল যে, অধ্যাপক সেনের কার্যকালের মেয়াদ বাড়ানো হবে না। সিদ্ধান্ত হয়, উপাচার্যের ভার দেওয়া হবে ভাষা ভবনের অধ্যক্ষা আশা মুখোপাধ্যায়কে। কিন্তু, কর্মসমিতির সিদ্ধান্ত বদলে বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে সবুজকলি সেনের নাম মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রকে পাঠানোর অভিযোগ ওঠে তৎকালীন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৌগত চট্টোপাধ্যায় ও ফিনান্স অফিসার শমিত রায়ের বিরুদ্ধে। যদিও, ২০১৮ সালের ৫ মার্চ মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশ ছিল মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও সবুজকলি সেন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে কাজ চালিয়ে যেতে পারবেন।
সেই থেকেই ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেন ও বিশ্বভারতীয় প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৌগত চট্টোপাধ্যায় ও ফিনান্স অফিসার শমিত রায়ের বিরুদ্ধে কর্মসমিতিতে গৃহিত সিদ্ধান্ত বদলের অভিযোগ ছিল। বিদ্যুৎ চক্রবর্তী উপাচার্যের দায়িত্ব গ্রহণের পর বেশ কয়েকজন কর্মসমিতির সদস্য প্রাক্তন ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য সবুজকলি সেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন। তার ভিত্তিতেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয় গত বছর নভেম্বরে। অভিযুক্ত চারজনকে শোকজ নোটিস দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কলকাতা হাইকোর্টে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে শৃঙ্খলারক্ষা কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি গোটা ঘটনার তদন্ত করে গত বুধবার অধ্যাপক সবুজকলি সেন, প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৌগত চট্টোপাধ্যায় ও ফিনান্স অফিসার শমিত রায়কে দোষী সাব্য়স্ত করে। তালিকায় প্রাক্তন অধ্যাপিকা সহেলি ভট্টাচার্যের নাম থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক পদক্ষেপের সুপারিশ করেননি কমিটি।
এ প্রসঙ্গে সবুজকলি সেন ও প্রাক্তন ফিনান্স অফিসার শমিত রায় কোনও মন্তব্য় করতে চাননি। তবে, প্রাক্তন ডেপুটি রেজিস্ট্রার সৌগত চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, 'ই-মেইলের মাধ্যমে বরখাস্তের চিঠি পেয়েছি। আইন মেনে পরবর্তী পদক্ষেপ করব।'
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন