War of independence of Bengal against the British: ব্রিটিশ ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনের যুগে বাংলা যা ভাবত, বাকি ভারত পরবর্তীতে তা-ই ভাবত। সেই বাংলার আন্দোলন অচিরেই বুঝতে পেরেছিল, অহিংসবাদে স্বাধীনতা আসবে না। সেই কারণে বাংলার আন্দোলন সহিংসতার রূপ নিয়েছিল। যার কেন্দ্রবিন্দু ছিল অনুশীলন সমিতি। বাঙালি যুবদের একজোট করে এই সমিতি ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে সহিংস আন্দোলনের পথে পরিচালিত করেছিল।
বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামে অনুশীলন সমিতি
ভারতকে ব্রিটিশের অধীনতা থেকে মুক্ত করতে সশস্ত্র বিপ্লবীরা জীবন-মরণ সংগ্রাম করেছিলেন। ব্রিটিশ বিরোধী বিপ্লবীদের গুপ্ত সংগঠন হিসেবে তাঁরা তৈরি করেছিলেন, অনুশীলন সমিতি। যারা ভারতে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের জন্য সহিংস বিপ্লবকে সমর্থন করেছিল। তাকে ভিতর থেকে নেতৃত্ব দিয়েছিল। এই সমিতির কাজ ছিল অস্ত্র সংগ্রহ। অস্ত্র প্রশিক্ষণ, শরীরচর্চা। আর, ব্রিটিশ শাসকদের হত্যার মাধ্যমে ভারতকে ব্রিটিশের অধীনতা থেকে মুক্ত করা। অনুশীলন সমিতির প্রধান কেন্দ্র ছিল সুবা বাংলার পুরনো রাজধানী ঢাকা শহর। পাশাপাশি, কলকাতাতেও তৈরি হয়েছিল এই সংগঠনের কার্যালয়।
রাইটার্স বিল্ডিং দখলের চেষ্টা
জন্মলগ্ন থেকে বিলুপ্তি পর্যন্ত এই সমিতি বোমা হামলা, গুপ্তহত্যা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতায় জড়িয়ে পড়েছিল। যার মাধ্যমে ভারতে ব্রিটিশ শাসনকে চ্যালেঞ্জ করেছিল। নিজেদের কর্মকাণ্ডকে এগিয়ে নিয়ে যেতে অনুশীলন সমিতি ভারত এবং বিদেশে অন্যান্য বিপ্লবী সংগঠনের সঙ্গেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখত। এই সমিতির অংশ হিসেবে মাস্টারদা সূর্য সেন চট্টগ্রাম স্বাধীন করার চেষ্টা করেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের বিনয়কৃষ্ণ বসু, বাদল গুপ্ত এবং দীনেশ গুপ্ত রাইটার্স বিল্ডিংয়ে সশস্ত্র হামলা চালিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- পেটকাটি-চাঁদিয়াল-মোমবাতি-বগ্গা, বিশ্বকর্মা পুজোয় দেদার উড়ুক ঘুড়ি! কী বার্তা রেলের?
ব্রিটিশের দমন
অনুশীলন সমিতি আন্দোলনকারীদের খঞ্জর এবং লাঠি চালানোর প্রশিক্ষণ দিত। পাশাপাশি গোপনে দেওয়া হত বোমা তৈরি, গুলি চালানোর প্রশিক্ষণও। ঢাকা শাখার নেতৃত্বে ছিলেন পুলিনবিহারী দাস। অনুশীলন সমিতির শাখাগুলো পূর্ববঙ্গ এবং অসমজুড়ে বিস্তৃত ছিল। পূর্ববঙ্গ এবং অসমে এর ৫০০টিরও বেশি শাখা ছিল। যা ঢাকার মূল কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত ছিল। ঢাকা ছাড়াও এর মূল শাখাকেন্দ্র ছিল যশোর, খুলনা, ফরিদপুর, রাজনগর, রাজেন্দ্রপুর, মোহনপুর, বরাকভ্যালি, বাকরগঞ্জ এবং কলকাতায়। সদস্যসংখ্যা ছিল আনুমানিক প্রায় ১৫,০০০ থেকে ২০,০০০। এই সংগঠনের বেশ কয়েকজন বিপ্লবীর গ্রেফতার। তাঁদের বন্দি করা, আর মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কয়েকজন বিপ্লবী পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মারা যান। যার জেরে অনুশীলন সমিতি কার্যত উঠে যায়।