Governor CV Anand Bose VS Education Minister Bratya Bose: গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে সরানো নিয়ে পরিস্থিতি জটিল হয়েছিল। এরপর লক্ষ্মীবারে রাজভবন-নবান্ন সংঘাত তুঙ্গে ওঠে। যা শুক্রবার আরও চড়েছে। বৃহস্পতিবার 'রিপোর্ট কার্ড' পেশ করেন রাজ্যপাল। সেখানেই রাজ্যপাল তথা রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যের তরফে হুঁশিয়ারির সুর ছিল। দাবি করা হয়, রাজ্যের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষমতা নবান্ন ‘কুক্ষিগত’ করতে মরিয়া। 'রিপোর্ট কার্ডে' লেখা হয়, 'রাজ্য সরকারের উচ্চশিক্ষা দফতরের বেআইনি আদেশে যে সকল উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ স্তব্ধ করে রেখেছেন, আচার্য তাঁদের সতর্ক করছেন।' রাজভবনের তরফে ওই বিবৃতিতে সুপ্রিম কোর্ট এবং হাই কোর্টের আদেশের কথা উল্লেখ করে আচার্যের ক্ষমতা 'স্মরণ' করানো হয়।
শুক্রবার সেই রাজভভনের সেই 'রিপোর্ট কার্ডে'র-ই জবাব দিয়েছে রাজ্য সরকার। নবান্নের তরফে সুপ্রিম কোর্টের পুরনো নির্দেশ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধির প্রসঙ্গ জানানো হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের অভিযোগ যে, রাজ্যের পড়ুয়াদের 'অনিয়শ্চতা'র মুখে ফেলতে চাইছেন আচার্য তথা রাজ্যপাল। উপাচার্য হিসাবে আচার্য যাঁদের নিয়োগ করছেন তাঁরা সংশ্লিষ্ট পদের জন্য অযোগ্য। ফলে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে কাঙ্ক্ষিত উন্নতি থমকে যাচ্ছে। রাজভবনকে লেখা চিঠিতে বলা হয়েছে, 'রাজ্যপাল ভুলে যাচ্ছেন যে, এই রাজ্যে এক জন নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রী রয়েছেন, যিনি বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে বেশি অবহিত থাকার কারণে উপাচার্য নিয়োগের ক্ষেত্রে বেশি দক্ষ। মন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে উপাচার্য নিয়োগ করার কথা রাজ্যপালের। কিন্তু বিধি না মেনে তিনি একাই সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।' অর্থাৎ একতরফাভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর অভিযোগ করা হয়েছে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে।
কী কারণে ফের সংঘাত?
সম্প্রতি তৃণমূলের অধ্যাপক সংগঠন ওয়েবকুপা-র সভা হয়েছিল গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। সভাপতি হিসাবে সেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সেই সভার পর পর-ই গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদ থেকে অপসারিত করা হয় রজতকিশোর দে-কে। পরে আদালত সেই অপসারণে স্থগিতাদেশ দেয়। গত সোমবার রাজ্যপালের ওই পদক্ষেপের জন্য অসন্তোষ জানিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী। দাবি করেছিলেন যে, সংগঠনের বৈঠকে কার্যকরী উপাচার্য রজতকিশোর উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু তাও রাজ্যপালের রোষে পড়লেন। যার থেকেই আচার্যের উদ্দেশে স্পষ্ট।
উপাচার্য নিয়োগ ঘিরে রাজ্যপাল-নবান্নে সংঘাত দেখা গিয়েছে। পরে যা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। সমস্যা সমাধানে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল তথা বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্যকে আলোচনায় বসার পরামর্শ দিয়েছিল। প্রথমে রাজ্যপাল ‘সুপ্রিম কোর্টের লিখিত নির্দেশ নেই’ বলে বেঁকে বসেছিলেন। যা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিল রাজ্যপালের আইনজীবীকে। তার পর রাজ্য এবং রাজভবনের মধ্যে বৈঠক হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।