বরফ কি তবে গলল? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির কালীপুজোয় যাওয়ার জন্য ‘উদগ্রিব’ রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। মুখ্যমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে কালীঘাটে মমতার বাড়ির কালীপুজোয় যাবেন বলে সংবাদসংস্থা পিটিআই-কে জানিয়েছেন রাজ্যপাল। উল্লেখ্য, ধনকড়কে ভাইফোঁটা দিতে চান মমতা, এজন্য কালীঘাটের বাড়িতে আসার জন্য রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। শুক্রবারই এ খবর প্রকাশ্যে এসেছিল। রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের আবহে মমতা-রাজ্যপালের এহেন সম্পর্কের মোড় নয়া মাত্রা এনে দিল বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
মমতার আমন্ত্রণ প্রসঙ্গে সংবাদসংস্থা পিটিআইকে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় জানিয়েছেন, ‘‘ বাড়ির কালীপুজোয় আমায় ও আমার স্ত্রীকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ওখানে যাওয়ার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি’’। রাজ্যপাল বলেন, ‘‘আমন্ত্রণ পেয়ে আমি অভিভূত’’।
আরও পড়ুন: তৃণমূল-রাজ্যপাল সংঘাতের আঁচ কালীপুজোতেও, ধনকড় আসায় পুজো ‘বয়কট’ তৃণমূল পুরপ্রধানের
এদিকে, রাজ্যপালের প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের নেতাদের ‘বিরূপ মনোভাব’ যে কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা প্রকাশ্যে এল বারাসতের পুরপ্রধানের পদক্ষেপে। রাজ্যপাল পুজোর উদ্বোধন করবেন বলে বারাসতের একটি ক্লাবের প্রধান উপদেষ্টা পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন পুরপ্রধান সুনীল মুখোপাধ্যায়। এই আবহে খোদ দলনেত্রী যেভাবে রাজ্যপালকে আমন্ত্রণ জানালেন এবং মমতার আমন্ত্রণে যেভাবে সাড়া দিলেন রাজ্যপাল তা উল্লেখযোগ্য।
আরও পড়ুন: আমায় পছন্দ না হলে ভোট দেবেন না, কিন্তু স্থানীয় দলকে দিন: মমতা
প্রসঙ্গত, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে বাবুল সুপ্রিয়র উপর ‘নিগ্রহে’র ঘটনার পর থেকেই রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল সংঘাতের সূত্রপাত। এরপর সম্প্রতি জিয়াগঞ্জে সপরিবারে শিক্ষক খুনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে সরব হন রাজ্যপাল। এ ঘটনাতেও রাজ্যপালের ভূমিকার সমালোচনা করতে মাঠে নামেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরা। কিছুদিন আগে রেড রোডে পুজো কার্নিভালে তাঁকে অপমান করা হয়েছে বলে সরব হন রাজ্যপাল। এ নিয়েও শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। অন্যদিকে, শিলিগুড়ির পর উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠক রীতিমতো ‘বয়কট’ করেন জনপ্রতিনিধি ও জেলার শীর্ষ সরকারি কর্তারা। এরপরই চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। এই প্রেক্ষাপটে বাড়ির কালীপুজোয় রাজ্যপালকে মমতার আমন্ত্রণ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই ব্যাখ্যা রাজনীতির কারবারিদের একাংশের।