পুরুলিয়ার ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সির তপন কান্দু খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে গেল রাজ্য সরকার। আবেদনের দ্রুত শুনানির আর্জি জানিয়েছে রাজ্য। বৃহস্পতিবারই প্রধান বিচারপতির এই আবেদনে দৃষ্টি আকর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। এর আগে ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ। সবেমাত্র এই মামলার তদন্তভার হাতে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই।
উল্লেখ্য, ঝালদার কাউন্সিলর খুনে শুরুতে তদন্ত করছিল রাজ্য পুলিশের সিট। তবে সিটের তদন্তে শুরু থেকেই অনাস্থা আনে নিহতের পরিবার। ঝালদার আইসি-র বিরুদ্ধে শুরু থেকেই এই খুনে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলেও তাতে নজর ছিল না জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্তা বা সিটের তদন্তকারী অফিসারদের। তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার আগেই ঝালদা থানার আইসি-কে ক্লিনচিট দিয়ে দিয়েছিলেন পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার নিজেই।
শেষমেশ ঝালদার কংগ্রেস কাউন্সিলর তপন কান্দু খুনে সিবিআইয়ের উপরেই ভরসা রাখে উচ্চ আদালত। মামলার শুনানিতে সিঙ্গল বেঞ্চ জানিয়েছিল, ''মানুষের মনে আস্থা ফেরাতেই এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঝালদার আইসির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ। তাও তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্ট আসার আগেই আইসি-কে ক্লিনচিট পুলিশ সুপারের।''
আরও পড়ুন- তপন কান্দু খুনে নয়া মোড়, প্রত্যক্ষদর্শীর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, মিলল সুইসাইড নোট
এবার সিঙ্গল বেঞ্চের সেই রায়ের বিরুদ্ধেই ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন রাজ্য সরকারের। বুধবারই ঝালদার কাউন্সিলর খুনে পুলিশের হাত থেকে কেস ডায়েরি ও তদন্ত সংক্রান্ত সব নথি হাতে নিয়েছে সিবিআই। সেই নথিগুলি নিয়েই এগোচ্ছে তদন্তের কাজ। এরই মধ্যে এবার সিবিআই তদন্তের নির্দেশের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আবেদন রাজ্যের।
এদিকে, কংগ্রেস কাউন্সিলর খুনে সিবিআই তদন্কতের নির্দেশের বিরুদ্ধে রাজ্যের এই পদক্ষেপ প্রসঙ্গে পুরুলিয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি নেপাল মাহাতো এদিন বলেন, ''রাজ্য সরকার যাবে হাইকোর্টে। আমরাও বসে থাকবোনা, আমরাও যাবো হাইকোর্টে।আমার বিশ্বাস সিবিআই তদন্তের পক্ষেই রায় দেবে ডিভিশন বেঞ্চ এবং গতকালের ঘটনা নিয়েও চিন্তাভাবনা করবে হাইকোর্ট।শেষ দেখা দেখে ছাড়বো।''
তপন কান্দু খুনে বুধবারই প্রত্যক্ষদর্শী নিরঞ্জন বৈষ্ণব ওরফে সেফালের রহস্যমৃত্যু হয়েছে। তপনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু সেফালের ঝুলন্ত দেহ বুধবার সকালে তাঁর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়। তপনকে খুনের সময় তাঁর সঙ্গেই ছিলেন সেফাল। খুনের একমাত্র প্রত্যক্ষদর্শীও ছিলেন তিনি। সেফালের মৃতদেহের কাছ থেকে গতকাল একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার হয়েছে। তাতে লেখা রয়েছে, চাপের মুখে নয়, মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি। যদিও এই মৃত্যু তপন কান্দু খুনে নয়া মোড় এনে দিয়েছে।