রাজনৈতিক দলের টানাপোড়েনে রাজ্যের আদিবাসী সম্প্রদায়। শুধু তাই রান্না করে খাইয়েছিলেন বিজেপির তথকালীন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে। এবার অমিত শাহর সফরে তাঁকে চাকরি দিল মমতার সরকার। প্রায় তিন বছর আগে অমিত শাহকে নিজের হাতে রান্না করে খাইয়েছিলেন নকশালবাড়ির আদিবাসী চা শ্রমিক গীতা মাহালি। এবার সেই গীতা মাহালির কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করল রাজ্য সরকার। বাঁকুড়ায় যখন অমিত শাহ এক আদিবাসীর বাড়িতে ভোজন সারলেন তখন নকশালবাড়ি থানায় হোমগার্ডের কাজে যোগ দিলেন গীতা। সরকারি চাকরি জুটে যাওয়ায় বেজায় খুশি মাহালি পরিবার।
রাজনৈতিক নেতাদের আদিবাসী বা দলিত পরিবারে ভোজন করা রীতিমতো রেওয়াজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২০১৭ সালে ২৫ এপ্রিল উত্তরবঙ্গ সফরে রাজু মাহালির বাড়িতে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরেছিলেন বর্তমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অখ্যাত এই পরিবারের ভোজন করে চমক দিয়েছিলেন অমিত শাহ। রাজু মাহালির স্ত্রী গীতা মাহালি সেদিন তোড়জোড় করে রান্না করেছিলেন। খবরের শিরোনামে এসেছিলেন মাহালি পরিবার। অবশ্য শোনা যায় অমিত শাহ ওই আদিবাসী পরিবারে পা রাখার পর আর কোনও বিজেপি নেতা মাহালি পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি।
আরও পড়ুন ‘মমতা সরকারের মৃত্য়ুঘণ্টা বেজে গিয়েছে, দুই তৃতীয়াংশ আসনে ক্ষমতায় বিজেপি’, হুঙ্কার শাহের
হতদরিদ্র চা শ্রমিক পরিবার বিজেপির কাছ থেকে কোনও রকম সহায়তা পাননি বলে জানিয়েছিলেন। তৎকালীন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা বর্তমান পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেবের হাত ধরে গীতা ও রাজু মাহালি তৃণমূলে যোগ দেন। সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেয় তৃণমূল কংগ্রেস। রাজ্য সরকারের একাধিক প্রকল্পের সাহায্য মেলে মাহালি পরিবারের। পরবর্তীতে রাজ্য সরকারের কাছে চাকরির আবেদন করেছিলেন গীতা। তাঁর আবেদনে সাড়া দিয়ে হোমগার্ডের চাকরি দেয় রাজ্য সরকার। অমিত সফরেই বৃহস্পতিবার গীতা মাহালির বাড়িতে গিয়ে হোমগার্ডের নিয়োগপত্র তুলে দেন দার্জিলিং জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রঞ্জন সরকার। নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার পর এদিনই গীতা নকশালবাড়ি থানায় কাজে যোগ দেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধায়কে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন গীতা মাহালি। সরকারি চাকরি পেয়ে খুশি মাহালি পরিবার।
তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি রঞ্জন সরকার জানিয়েছেন, আদিবাসী সম্প্রদায়কে সামনে রেখে রাজনৈতিক ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি। অথচ তাঁদের উন্নয়ন নিয়ে কোন কাজই করছে না বিজেপি শাসিত সরকার। মাহালি পরিবারে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। অথচ কিছুই করেনি মাহালি পরিবারের জন্য। এই হতদরিদ্র মাহালি পরিবারের একজনকে চাকরি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুঝিয়ে দিয়েছেন আদিবাসীদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তাদের পাশে আছে তৃণমূল শাসিত রাজ্য সরকার।
আরও পড়ুন ‘শুভেন্দু যোগাযোগ করলে, আলোচনা করব’, বার্তা বিজেপি নেতার
এদিকে বুধবার রাতে কলকাতায় এসেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এদিন বাঁকুড়ায় আদিবাসী কেন্দ্রীক একগুচ্ছ অনুষ্ঠানে তিনি অংশ নিয়েছেন। দুপুরের খাবার খেয়েছেন আদিবাসী পরিবারে। এই সফরেই গীতা মাহালির সরকারি কাজে যোগ দেওয়ায় রাজ্য রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন