Akhil Giri: এক মহিলা ফরেস্ট অফিসারকে প্রকাশ্যে ডাং দিয়ে পেটানোর হুমকি খোদ রাজ্যের কারামন্ত্রী অখিল গিরির (Akhil Giri)। সেই সঙ্গে ওই সরকারি বনাধিকারিকের চাকরিরও 'আয়ু' ঠিক করে দিলেন মন্ত্রীমশাই। 'বেয়াদপ', 'জানোয়ার' বলে সরকারি ওই মহিলা আধিকারিককে নজিরবিহীনভাবে আক্রমণ করতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ এই সদস্যকে। তাঁর মন্তব্যের প্রবল সমালোচনার সরব বিরোধীরা।
পূর্ব মেদিনীপুরের তাজপুরে (Tajpur) বনদফতরের জায়গায় দোকান বসানো নিয়ে গন্ডগোলের সূত্রপাত। তাজপুর সমুদ্র সৈকতে অবৈধভাবে দোকান বসানোয় বনদফতরের আধিকারিক-কর্মীরা এদিন সেখানে যান। খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে উপস্থিত হন রাজ্যের কারামন্ত্রী তথা এলাকার তৃণমূল বিধায়ক অখিল গিরি।
এরপরেই ফরেস্ট অফিসারকে বেনজিরভাবে আক্রমণ শুরু করেন তিনি। শুধু মন্ত্রীই নন, তাঁর সঙ্গে থাকা বেশ কয়েকজন পুরুষ ও মহিলা রীতিমতো আঙুল উঁচিয়ে হুমকি দিতে থাকেন বনদফতরের আধিকারিক-কর্মীদের। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ভিডিও ভাইরাল (Viral) হতেই বিতর্কের ঝড়। প্রবল সমালোচনায় সরব বিরোধীরা।
ঠিক কী বলেছেন অখিল গিরি?
"আপনি সবাইকে নিয়ে চলুন। বেশি দিন থাকতে পারবেন না। আপনার আয়ু সাত-আটদিন কিংবা দশ দিন। কে বিট অফিসার আমি জানি। ফরেস্টে কী কাজ হয়! কত বড় দুর্নীতি আমরা সব জানি। বিট অফিসারের বিরুদ্ধে কী আছে আমি জানি। সব ফাঁস করে দেব বিধানসভায়। আপনি আমাকে চেনেন না! আপনি এখানে থাকবেন না। ওরা থাকবে সারা বছর।"
ফরেস্ট অফিসারকে শাসানি দিয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, "উনি কারও কথা শুনবেন না, এত বড় ক্ষমতা! এই সপ্তাহে কী হয় আপনারা দেখুন। এর ভিতরে যদি আপনি আসেন, আপনি ফিরে যেতে পারবেন না। বেশি কথা বলবেন না আপনি একদম! সরকারি কর্মচারী মাথা নিচু করে কথা বলবেন। এমন বেয়াদপ, জানোয়ার রেঞ্জার আসেনি কখনও। আপনাদের ভদ্রভাবে হবে না। যে ঠাকুর যে ফুলে সন্তুষ্ট, ডাং দিয়ে পেটাব না…তখন বুঝবেন!"
আরও পড়ুন- Chandramukhi potato: থলে ভরে নকল চন্দ্রমুখী আলু কিনছেন না তো? আসল চিনবেন কীভাবে?
উল্লেখ্য, বিভিন্ন প্রান্তে বেআইনিভাবে সরকারি জায়গা দখল করে বসে থাকা হকারদের আগেই সরে যেতে আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহর কলকাতার পাশাপাশি জেলাগুলিতেও ফুটপাত ও রাস্তার ধার দখল করে বসে থাকা ছোট ছোট দোকানগুলিকে সরে যেতে আবেদন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আরও পড়ুন- Ilish: ইলিশপ্রেমীরা আহ্লাদে আটখানা হবেনই! টন টন মাছ ঢুকছে, দাম কোথায় নামতে পারে জানেন?
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ মতোই এরপর হকার উচ্ছেদ (Hawker Eviction) অভিযানে নামে রাজ্য প্রশাসন। গত কয়েকদিনে জেলায় জেলায় হকার উচ্ছেদ চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে হকার উচ্ছেদের কথা বলেছেন। তবে অধিকাংশ জায়গাতেই অভিযোগ, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই অবাধে চলছে হকার উচ্ছেদ।
এর আগেও অখিল গিরি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মূ (Droupadi Murmu) সম্পর্কে যে মন্তব্য করেছিলেন তা নিয়েও তুমুল জলঘোলা হয়েছিল। ঘরে-বাইরে বিষয়টি নিয়ে প্রবল সমালোচনার পর শেষমেষ ক্ষমা চাইতে বাধ্য হয়েছিলেন মন্ত্রী অখিল গিরি। এবার ফের একবার এক মহিলা ফরেস্ট অফিসারকে নিয়ে মন্ত্রীমশায়ের এহেন মন্তব্য ঘিরে সীমাহীন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।