ঘাসফুলের দুর্গেও এবার ফুটল পদ্ম। বিধানসভা তৃণমূলের দখলে থাকলেও পূর্ব বর্ধমানের পূর্বস্থলী ২ ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেল বিজেপি। ওই তিনটি পঞ্চায়েত হল কালেখাঁতলা-১, ঝাউডাঙা ও পাটুলি পঞ্চায়েত। বাকি ৭টা গ্রাম পঞ্চায়েতে অবশ্য ঘাসফুলেরই রমরমা। তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত হাতছড়া হওয়ার বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল নেতৃত্ব খুব একটা হেলদোল দেখাতে না চাইলেও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, এটাই তৃণমূলের শেষের শুরু ।
কালনা মহকুমার ৫টি ব্লকের মধ্যে ৪টি ব্লকেই গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের জয়জয়কার। ওই পঞ্চায়েতগুলিতে বাম বা গেরুয়া শিবির খুব একটা ফায়দা তুলতে পারেনি। তবে পূর্বস্থলী-২ ব্লকে তৃণমূলের বিজয় রথের গতি থমকেছে পদ্মের কাঁটার বাড়বাড়ন্তে। এখানকার কালেখাঁতলা-১, ঝাউডাঙা ও পাটুলি পঞ্চায়েতে বিজেপির কাছে ধরাশায়ী হয়েছে তৃণমূল। বাকি ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে কালনা ১ ব্লকে ৯টি পঞ্চায়েতই তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে ছিল।
এবারেও ওই পঞ্চায়েত গুলিতে ঘাসফুলেরই রমরমা। একই ভাবে গতবার কালনা ২ ব্লকের ১২৮টি আসনের মধ্যে তৃণমূল ১২৩টি আসনে জয়লাভ করেছিল। আর এবার কালনা ২ ব্লকের ৮টি পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১৬০টি। তার মধ্যে ১৪৫টি আসনে তৃণমূলের প্রার্থীরা জয়লাভ করেছে বলে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রণব রায় জানিয়েছেন।
আরও পড়ুন গণনার রাতেও উত্তপ্ত ভাঙড়, ব্যাপক বোমাবাজি, পুলিশ-ISF খণ্ডযুদ্ধ, গুলিবিদ্ধ পুলিশকর্তা
তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে উৎফুল্ল বিজেপি শিবির। জেলা বিজেপি সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, তৃণমূলের সন্ত্রাস এবং পুলিশ ও প্রশাসনের অসহযোগিতা, এই সবকিছু সত্ত্বেও বিজেপি পূর্বস্থলী-২ ব্লকের তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠন করতে চলেছে। পুলিশ ও প্রশাসন নিরপেক্ষ থেকে শাসক দলের সন্ত্রাস রুখে অবাধ ভোট করাত তাহলে পূর্বস্থলী ২ ব্লকে তৃণমূল সাফ হয়ে যেত। গোপালবাবু দাবি করেন, পূর্বস্থলীর পঞ্চায়েতে পদ্ম ফোটাই প্রমাণ করে দিল তৃণমূলের শেষের শুরু হয়ে গিয়েছে। লোকসভা ভোটে আরও টের পাবে তৃণমূল।
যদিও পূর্বস্থলীর তৃণমূল বিধায়ক তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, তিনটি পঞ্চায়েতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজেপির এত উৎফুল্ল হওয়ার কিছু নেই। কালনা মহকুমা সহ গোটা রাজ্যে সিংহভাগ পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে তৃণমূলই বোর্ড গঠন করবে। বিজেপি সন্ত্রাসের যে অভিযোগ তুলছে সেটা ওদের মান বাঁচানোর কৌশল। আর লোকসভা ভোট নিয়ে বিজেপি অলীক স্বপ্ন দেখছে বলে তপন চট্টোপাধ্যায় দাবি করেছেন।