একদিকে করোনা-লকডাউন, অন্যদিকে আমফান, আর এই জোড়া ধাক্কায় বিপর্যস্ত বাজার। লকডাউনের জেরে বন্ধ হয়েছে মাছের চালান। তারপর ঘূর্ণিঝড় আমফানের প্রভাবে ভেড়ির মাছ মরেছে পাল্লা দিয়ে। ফলে যোগান কম হওয়ায় হুহু করে বেড়েছে মাছের দাম। যে মাছে ভাতে বাঙালি আগে মাছ ঝুলিয়ে ফিরত সেই বাঙালিই আজ ব্যাজার মুখে বাজার থেকে ফিরছেন।
মাছের বাজারে মাছ কম, কমেছে ক্রেতাও। এক্সপ্রেস ফোটো- শশী ঘোষ
ঠিক কী কারণে মাছের এমন দামবৃদ্ধি?
উত্তর ২৪ পরগণার বারাসত বাজারের এক বিক্রেতার কথায় ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে ভেসে গেছে জমি-পুকুর-ভেড়ি। দক্ষিণবঙ্গের যেসব জেলা থেকে মাছ আসত সেখানও ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আবার লকডাউনের ফলে ভিনরাজ্য থেকে বন্ধ হয়েছে মাছের আমদানি। সমুদ্রে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা থাকায় নেই সামুদ্রিক মাছও। অতএব জোগান প্রায় নেই। এদিকে ঘরবন্দি বাঙালির মাছের চাহিদাও বেড়েছে, অতএব মাছের বাজারে আগুন।
কানকো টিপে দরাদরি আর নেই। দাম শুনে মাছ দেখেই ক্ষান্ত বাঙালি। এক্সপ্রেস ফোটো- শশী ঘোষ
দু'মাস ধরে জারি থাকা লকডাউনে ঘরবন্দি বাঙালির মাছ-ভাতেও এখন ছ্যাঁকা। মাছের দামের বহর শুনে তাজ্জব মাছ প্রিয় বঙ্গবাসী। গোটা রুই ১৮০ টাকা প্রতি কেজি থেকে ২৫০ টাকা প্রতি কেজি, ৩০০ টাকার গোটা কাতলা বিকোচ্ছে ৪০০ টাকা প্রতি কেজিতে। আর চুনোপুঁটিদের দাম তো মহার্ঘ। পুঁটি-কাচকি-মৌরলাদের পাওয়াই যাচ্ছে না। বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, "মাছের এতো দাম। কেনাই দায়। তার উপর রোজ প্রায় একই মাছ। রুই-কাতলা-চিংড়ি-পমফ্রেট ছাড়া অন্য মাছ সেরকম পাচ্ছি না। যদি বা পাই দাম শুনে মাছের দিকে না তাকিয়েই চলে আসছি।"
কমেছে ক্রেতার সংখ্যা। এক্সপ্রেস ফোটো- শশী ঘোষ
পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, জানেন না ক্রেতা-বিক্রেতা কোনও পক্ষই। লকডাউনের পঞ্চম দফায় আরও ছাড় ঘোষণা হয়েছে রাজ্যে। মাছের দামে ছাড় মিলবে না? এই একটাই প্রশ্ন এখন মাছ-ভাত প্রিয় বাঙালির।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন