Advertisment

শান্ত-নিরিবিলি অপূর্ব এক সমুদ্রতট, মনের ক্লান্তি কাটাতে এজায়গার জুড়ি মেলা ভার!

দিন ক'য়েকের ছুটি ম্যানেজ করুন। ব্যাগ বাঁধুন আর বেড়িয়ে পড়ুন।

author-image
Nilotpal Sil
New Update
west bengal bakkhali sea beach is a famous tourist destination

অসাধারণ এই সমুদ্র সৈকত মন কাড়বেই!

বাঙালির তো পায়ের তলায় সর্ষে। ছুটির মরশুম ছাড়াও ফাঁক পেলেই আম বাঙালি পাড়ি জমান বিভিন্ন পর্যটনকেন্দ্র গুলিতে। অনেকেই হাতে সময় নিয়ে যান তবে অনেকের আবার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। অফিসে ছুটি ম্যানেজ করাটাই ভীষণ টাফ হয়ে যায়। তবে অল্প ক'দিনের ছুটি ম্যানেজ করতে পারবেন তো? তাহলেই কেল্লা ফতে! কলকাতা থেকে খুব কাছেই বেড়িয়ে আসুন বঙ্গোপসাগরের কোল থেকে। অসাধারণ এই সমুদ্র সৈকতে বেড়ানোর অভিজ্ঞতা চিরকাল আপনার স্মৃতির পাতায় থেকে যাবে।

Advertisment

দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুর তো অনেক হল, এবার দিন দু'য়েকের ছুটি নিয়ে বেড়িয়ে আসুন বকখালি। কলকাতা লাগোয়া জেলা দক্ষিণ ২৪ পরগনার একেবারে শেষ প্রান্তে রয়েছে এই বকখালি। বঙ্গোপসাগরের পাড়ে ছোট্ট এই জনপদ রাজ্যের পর্যটন-মানচিত্রে ওপরের দিকেই রয়েছে। বিস্তৃত সমুদ্র সৈকত মন রাঙিয়ে দেয়। দিঘা-পুরীর মতো বিশাল ঢেউ না এলেও বকখালির সমুদ্র আপনাকে একটা রিল্যাক্স ফিল এনে দেবে তা হলফ করে বলাই যায়। দিন কয়েকের ছুটিতে এর চেয়ে দারুণ বেড়ানোর অভিজ্ঞতা প্রায় বিরল। কলকাতা থেকে বকখালির দূরত্ব প্রায় ১৪৫ কিলোমিটারের মতো। দক্ষিণবঙ্গের একাধিক বদ্বীপের মধ্যে বকখালি অন্যতম। এই বদ্বীপটির অধিকাংশ এলাকাই সুন্দরবনের মধ্যে পড়ে।

বকখালিতে কী দেখবেন?

বকখালির প্রধান আকর্ষণ হল এখানকার সমুদ্র সৈকত। দিঘা-পুরীর মতো ঢেউ না পেলেও ভরপুর আনন্দে খামতি থাকবে না। দিনভর সমুদ্রের ঢেউয়ের শব্দ মন কাড়বেই। বকখালির সমুদ্র তট লাগোয়া ঝাউ বনের সারি। সমুদ্র স্নানের আগে ইচ্ছে হলে একবার ঢুঁ মেরে আসতে পারেন সেদিক থেকে। দিন দু'য়েকের ছুটিতে বকখালির এই সমুদ্রতট আপনার মনকে সতেজ করে তুলবে। বকখালি থেকে টোটোয় বা ভ্যানোয় চেপে চলে যেতে পারেন হেনরি আইল্যান্ডে। দু'পাশের ম্যানগ্রোভের সারি দেওয়া এই দ্বীপে আছে একটি ওয়াচ টাওয়ার। যার উপর উঠে সুন্দরবনের গভীর জঙ্গল দেখতে পাবেন। এছাড়াও কাছেই রয়েছে ফ্রেজারগঞ্জ ফিসিং হারবার।

এখানে রয়েছে প্রচুর মাছের আড়ত। ঘুরে দেখতে পারেন সামুদ্রিক নানা মাছ। এছাড়াও সময় পেলে চলে যান বকখালি মিনি জু-তে। কুমীর, হরিণের দেখা পাবেন। বকখালির ব্রিজ ধরে বাঁদিকে সমুদ্রের তীর ধরে হেঁটে গেলে দেখতে পাবেন বনবিবিমাতার মন্দির। এই বনবিবিমাতা জঙ্গল লাগোয়া গ্রামগুলির বাসিন্দাদের অন্যতম প্রধান আরাধ্য দেবী। স্থানীয়দের বিশ্বাস এই বনবিবি অত্যন্ত জাগ্রত। সুন্দরবনের গভীর জঙ্গলে মধু সংগ্রহ করতে যাওয়ার আগে বা সুন্দরবনের খাঁড়িতে মাছ বা কাঁকড়া ধরতে যাওয়ার আগে অনেকেই এই বনবিবি মাতার মন্দিরে পুজো দিয়ে যান।

কীভাবে যাবেন বকখালি?

কলকাতার দিক থেকে গেলে আপনাকে শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখার নামখানা লোকাল ধরতে হবে। ট্রেনে নামখানা স্টেশনে নামলেই মুশকিল আসান। আগে নামখানা থেকে হাতানিয়া-দোয়ানিয়া নামে ছোট্ট একটি নদী পেরিয়ে ওপাড়ে উঠে বকখালি যাওয়ার গাড়ি ধরতে হতো। এখন সেসবের বালাই নেই। নদীর উপর দিয়ে বেশ কয়েক বছর হল ব্রিজ হয়ে গিয়েছে। এখন নামখানা স্টেশন থেকেই বকখালি যাওয়ার ছোট গাড়ি পেয়ে যাবেন। এছাড়াও কলকাতার ধর্মতলা থেকে সরাসরি বকখালি যাওয়ার বাসও পেয়ে যাবেন। প্রাইভেট গাড়িতে গেলে ১১৭ ম্বর জাতীয় সড়ক ধরে নামখানা হয়ে আপনাকে পৌঁছতে হবে বকখালিতে।

বকখালিতে থাকবেন কোথায়?

ছোট-বড় একগুচ্ছ হোটেল পেয়ে যাবেন বকখালিতে। হোটেল ভাড়াও নাগালের মধ্যেই। মোটামুটি ৭০০ টাকা থেকে হোটেলের রুম ভাড়া শুরু। এসি নন-এসি দু'রকম রুমই পেয়ে যাবেন। তবে পর্যটনের ভরা মরশুমে বকখালি যেতে চাইলে আগে থেকে হোটেল বুক করে যাওয়াই ভালো।

Tourist Spot tourism West Bengal
Advertisment