New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2018/08/imam-759-new.jpg)
শাহি ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি। ফাইল ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
"প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসে আমায় আমন্ত্রণপত্র পাঠাত ওরা। সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের কাছে আমার উপস্থিতি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবার প্রথমবার আমায় ডাকা হল না। এটা স্পষ্ট যে, মুসলিমদের দল হিসেবে আর থাকতে চায় না তৃণমূল।"
শাহি ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি। ফাইল ছবি: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস
টাকা দাও, ভোট দেব, কার্যত এমন বাক্যবাণই নিক্ষেপ করেছেন খোদ শাহি ইমাম নুর-উর রহমান বরকতি। শুধু তাই নয়, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা ঘনিষ্ঠ এই ইমাম তৃণমূলের স্নায়ুর চাপ বাড়িয়ে বলেছেন, বিজেপি টাকা ঢাললে, সংখ্যালঘু ভোট গেরুয়া শিবিরের পক্ষেই যাবে। ইমামের এহেন বক্তব্যে লোকসভা ভোটের আগে এ রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোট বাটোয়ারা নিয়ে নয়া সমীকরণ তৈরি হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। যে ইমাম একসময় তৃণমূলের ঘনিষ্ঠ ছিলেন, রাতারাতি তাঁর এই ভোলবদলে চমকেছেন অনেকেই।
দ্য সানডে এক্সপ্রেসকে বরকতি বলেছেন, "বড় ইমাম হল টাকা, বিজেপির টাকা রয়েছে। যদি তারা বাংলায় টাকা ঢালে, তবে দেখবেন কীভাবে মুসলিম ভোট তাদের পক্ষে যাবে। কোনও কিছুই বিনামূল্যে হয় না।" আগামী লোকসভা ভোটে দিলীপ ঘোষরা এ রাজ্যে ১০ শতাংশ মুসলিম ভোট পাবেন বলেও ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন ওই ইমাম। এ প্রসঙ্গে তাঁর আরও সংযোজন, যদি বিজেপি ৩০ শতাংশ মুসলিম ভোটই চায়, তবে তাদের টাকা দিতে হবে। এরপরই বরকতি বলেন, "বিজেপির হয়ে প্রচার করতেই পারি। সহজেই ওদের দলের প্রতি মানুষের মন টানতে পারি।"
আরও পড়ুন, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের দল বাংলা বিরোধী নয়, বললেন অমিত শাহ
গত শুক্রবার 'টাইমস নাও'-এর স্টিং অপারেশনে একটি ভিডিও তুলে ধরা হয়। যে ভিডিওতে ওই ইমামকে বলতে শোনা যায়, "টাকার বিনিময়ে মুসলিম ভোট বদলাতে পারে। বাংলার আবেগ বদলে গিয়েছে। মুসলিমরা ইতিমধ্যেই বিজেপিকে ভালবাসতে শুরু করেছে...বিজেপি ২২টি আসন জেতার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। আমার মতে ওরা ২৮টি আসনই পাবে। গত নির্বাচনে মুসলিমরা যদি ওঁকে (মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) ভোট না দিতেন, তবে উনি কী করতেন? যদি বিজেপি টাকা দেয়, আমি মুসলিমদের নিয়ে প্রচার করব।"
তৃণমূলের সঙ্গে তাঁর দূরত্ব তৈরি হওয়া নিয়েও সরব হয়েছেন এই ইমাম। এ প্রসঙ্গে বরকতি বলেন, "প্রতি বছর ২১ জুলাই শহিদ দিবসে আমায় আমন্ত্রণপত্র পাঠাত ওরা। সেসময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তৃণমূলের কাছে আমার উপস্থিতি খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। এবার প্রথমবার আমায় ডাকা হল না। এটা স্পষ্ট যে, মুসলিমদের দল হিসেবে আর থাকতে চায় না তৃণমূল। হিন্দুদের সহানুভূতি আদায় করে বিজেপিকে ভোট পাইয়ে দিতে চায় না ওরা।"
এই বরকতিই একসময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি আবার বলেন, "বাংলার আবেগ বদলে গিয়েছে। বাংলার মুসলিমরা আর বিজেপি বিরোধী নন। কাদের ভোট দেওয়া উচিৎ সেটা জানার জন্য ওঁরা ওঁদের নেতাদের পরামর্শ শোনার অপেক্ষা করছেন। যদি আমায় প্রস্তাব দেওয়া হয়, ২০১৯ সালের ভোটে বিজেপি-কে ভোট দেওয়ার জন্য ফতোয়া জারি করতে পারি, যেমনটা ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য করেছিলাম।"