ডিএ মামলা ফের পিছল
এই নিয়ে দশবার, সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছল পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলার শুনানি। তিন মাস পর আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে আবারও এই মামলাটির শুনানি হবে শীর্ষ আদালত।
আদালতে কোন পক্ষের কী সওয়াল?
ডিএ মামলায় রাজ্যের হয়ে সওয়াল করছেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে আইনজীবী সিঙ্ঘভি জানান, আগেই আদালত জানিয়েছিল বিস্তারিত শুনানির জন্য অন্য একটি নির্দিষ্ট দিন নির্ধারিত করা হবে। আজ নয়, অন্য কোনও দিন এই মামলার শুনানি হোক।
পাল্টা মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং আইনজীবী ফিরদৌস শামিম জানান, বারে বারেই শুনানি পিছোচ্ছে। তাই যে কোনও একদিন শুনানির জন্য নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক।
আইনজীবী পিএস পাটোয়ালি লড়াই করছেন বিজেপির কর্মচারী সংগঠনের তরফে। এদিন কোর্টে তিনি জানান যে, পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের ডিএ মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে, ফলে এভাবে শুনানি যদি বারে বারেই পিছয় তাহলে ঘোর সমস্যা হবে।
সুপ্রিম নির্দেশ
সব পক্ষের সওয়াল শোনার পর বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং সঞ্জয় করলের বেঞ্চ জানিয়ে দেয় যে, আগামী বছর ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ডিএ মামলার শুনানি হবে।
হাইকোর্টের নির্দেশ
২০২২ সালের ২০ মে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করে নবান্ন। রাজ্যের যুক্তি ছিল, হাইকোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে বর্তমানে বহন করা অসম্ভব। ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দিতে গেলে রাজ্য সরকারের অন্যান্য সামাজিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলো জারি রাখা সম্ভব নয়।
২০২২ সালের ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলা দায়ের হয়। প্রথম শুনানি হয় ২৮ নভেম্বর। ৫ ডিসেম্বরেই মামলা শেষ হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। এরপরই রাজ্যের আইনজীবী বদল হয়। মুকুল রোহতগির জায়গায় ডিএ মামলায় রাজ্যের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙঘভি। এরপরই নানা কারণে ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়ে যাচ্ছে।
রাজ্য ও কেন্দ্রের ডিএ হারের ফারাক
বর্তমানে ৪৬ শতাংশ হারে ডিএ পেয়ে থাকেন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা। রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীরা পায় ৬ শতাংশ হারে ডিএ। অর্থাৎ ফারাক হল ৪০ শতাংশ। এই পার্থক্য পূরণের দাবিতেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বিভিন্ন সংগঠন সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ গড়ে ডিএ আন্দোলন চালাচ্ছেন।