প্রেম করে বিয়ে করেছেন এক অষ্টাদশী। আর তাতেই ক্ষেপে আগুন গ্রামের মাতব্বরা। প্রেম করে বিয়ে করায় গ্রামের সম্মানহানি হয়েছে, যার জেরে ওই তরুণীকে ‘শাস্তি’ দিল তাঁর গ্রাম। প্রেম করে বিয়ে করার অপরাধে এক অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে ওঠবোস করার অভিযোগ উঠল এ রাজ্যের পূর্ব মেদিনীরপুর জেলায়। শুধু ওঠবোসই নয়, ওই তরুণীর পেটে লাথি মারারও অভিযোগ উঠেছে। যার জেরে তাঁর ভ্রুণ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি পরিজনদের। এবং যে ঘটনায় আবারও সালিশি সভার অত্যাচারের এক কাহিনি সামনে এল এ রাজ্যে।
পূর্ব মেদিনীপুরের উত্তর রানিচক গ্রামে সালিশি সভা বসান গ্রামের মোড়লরা। প্রেম করে বিয়ে করার সাজা দিতে ওই অন্তঃসত্ত্বা তরুণীকে সালিশি সভায় ওঠবোস করানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। ১০ বার ওঠবোস করার পর ওই তরুণী জ্ঞান হারান বলে জানা গিয়েছে। এরপর তাঁর জ্ঞান ফেরাতে পেটে লাথি মারা হয় বলে অভিযোগ। গত ২৭ নভেম্বর সালিশি সভা বসানো হয় বলে খবর। অন্যদিকে, এ ঘটনার পরই ওই তরুণীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সালিশি সভায় অত্যাচারের জেরে তাঁর ভ্রুণ নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করেছেন পরিজনরা।
আরও পড়ুন, আদিবাসী মহিলাকে গণধর্ষণ এক মাস ধরে, পুলিশের খপ্পরে ৪ অভিযুক্ত
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে গ্রামের প্রধান শেখ রবিউল মল্লিক ও সম্পাদক শেখ আশরফ আলি গত মাসের ২৭ তারিখ সালিশি সভা বসান। ওই দু’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। ওই তরুণী তিন মাস আগে প্রেম করে এক যুবককে বিয়ে করেন। যে ঘটনায় গ্রামের মাতব্বরা অসন্তুষ্ট ছিলেন। গ্রামে সালিশি সভায় তাঁদের মেয়ের উপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে তিন পাতার অভিযোগ দায়ের করেছেন পরিজনরা। মল্লিক, আশরফ ও আরও ৩ জন প্রত্যক্ষদর্শীর নাম রয়েছে অভিযোগপত্রে।
এ ঘটনা প্রসঙ্গে এসডিপিও তন্ময় মুখোপাধ্যায় ‘দ্য সানডে এক্সপ্রেস’কে বলেন, ‘‘পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। এখনও কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি।’’ পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩১৩, ৩১৪, ও ৩০৭(খুনের চেষ্টা) ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ইতিমধ্যেই নির্যাতিতার বয়ান রেকর্ড করেছে পুলিশ। তরুণীর মেডিক্যাল টেস্টও করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, এ ঘটনার নিন্দায় সরব হয়েছেন ব্লক তৃণমূল নেতা শেখ মইনুদ্দিন। তিনি বলেছেন, ‘‘এমন ঘটনা বরদাস্ত করা হবে না। অপরাধীদের গ্রেফতার করুক পুলিশ।’’
Read the full story in English