পুরসভার মেয়র পদে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বদলি বসাতে আইন বদলে ফেলছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ১৯৮০ সালের কলকাতা পুরসভা আইনের বদল আনার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সিনিয়র কয়েকজন তৃণমূল কংগ্রেস নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার শোভন চট্টোপাধ্যায় মন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার পরে তাঁকে মেয়র পদ থেকেও সরে দাঁড়াতে বলেছেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো।
মঙ্গলবার সন্ধেয় আবাসন ও দমকল মন্ত্রীর পদ থেকে শোভন চট্টোপাধ্যায় ইস্তফা দেওয়ার পরে নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের ওপর শোভনের ছেড়ে দেওয়া দুই দফতরের অতিরিক্ত দায়িত্ব সামলানোর ভার পড়েছে।
আরও পড়ুন: শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ইস্তফা: মন্ত্রিত্বের ইতি ও সম্পূর্ণ বৃত্ত
রাজ্য প্রশাসনের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, সাম্প্রতিক আইন অনুসারে কেবল মাত্র নির্বাচিত প্রতিনিধি অথবা কাউন্সিলররাই মেয়র পদে আসীন হতে পারেন। পিটিআই-কে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, "বিধানসভা এবং লোকসভা ভোটের সময়ে যে আইন কাজে লাগানো হয় আমরা সেটারই অনুসরণ করার কথা ভাবছি। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে নির্বাচিত পুর প্রতিনিধি বা কাউন্সিলর নন, এমন যে কাউকে মেয়র করা সম্ভব, তবে নিজের পদ ধরে রাখার জন্য তাঁকে পুর ভোটে জিতে আসতে হবে।"
বিধানসভার আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই পুর আইনে সংশোধনী আনা হবে বলে জানিয়েছেন ওই আধিকারিক। তিনি বলেছেন, "সম্ভবত এ ব্যাপারে বৃহস্পতিবারই বিধানসভায় আলোচনা হবে।" মুখ্যমন্ত্রী মঙ্গলবারই আভাস দিয়েছিলেন, আইন অনুসারে যেহেতু কেবলমাত্র নির্বাচিত কাউন্সিলররাই মেয়র পদে বসার যোগ্য, সে জন্য সরকার নতুন মেয়র নিয়োগের ব্যাপারে বিভিন্ন সম্ভাবনার দিকগুলি খতিয়ে দেখবে।
নবান্নের অন্দরের খবর, মুখ্যমন্ত্রী শহরের মেয়র পদে বসানোর জন্য একজন দক্ষ প্রশাসক চাইছেন। ওই আধিকারিক জানিয়েছেন, "এমন একজনকেই খোঁজা হচ্ছে, যিনি পুর বিষয়ক বিভিন্ন দিকগুলি সম্পর্কে যেমন বিস্তারিত জানবেন, তেমনই জানবেন প্রশাসনিক দিকগুলিও। এর ফলে কলকাতা পুরসভার কর্মপদ্ধতি মসৃণতর হবে।"
মঙ্গলবার রাতে শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের পদত্যাগের পর একটি জরুরি বৈঠক বসে পরবর্তী কর্মপদ্ধতি স্থির করার জন্য। কলকাতা পুরসভা আইনের ৩৮ নং ধারা অনুসারে মেয়রের অনুপস্থিতিতে তাঁর কর্মভার সামলানোর কথা ডেপুটি মেয়রের। উল্লেখ্য, কলকাতার ডেপুটি মেয়র হলেন সুলতান আহমেদের ভাই ইকবাল আহমেদ, যাঁর নাম এখনও জড়িয়ে রয়েছে নারদা কেলেঙ্কারির সঙ্গে, যাঁকে গত বছর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিবিআই ডেকে পাঠালে যান নি তিনি।