ভেজালের বাড়বাড়ন্তর দিনে সতেজ সবজি-আনাজ কিংবা মাছ-মাংস খেতে চান? একেবারে খাঁটি। স্বাদে ও পুষ্টিগত গুণেও অতুলনীয়। জনসাধারণের জন্য এবার সেই ব্যবস্থাই করে দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। তাও আবার চাইলেই এই সতেজ, খাঁটি আনাজপাতি পৌঁছে যাবে আপনার দুয়ারে। দরকার শুধুমাত্র 'নেচারবাজার' নামে একটি অ্যাপের। তাহলে এক ক্লিকেই বাড়িতে গুণগত মানের খাদ্যসামগ্রী পেয়ে যাবেন ক্রেতারা।
সরকারি এই অ্যাপের সুবিধে অবশ্য আরও রয়েছে। আগেভাগে বরাত দিলেই জৈব চাষের সবজিপাতির সঙ্গে আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে রান্না করা খাবারও। এ যে সুবর্ণসুযোগ, তা বলাই বাহুল্য। রাজ্য পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীনস্থ সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে অনলাইনে এই পরিষেবা মিলবে আগামী ২৬ জানুয়ারি থেকে।
উল্লেখ্য, 'নেচারবাজার' নামে এই অ্যাপটি সরকারি ওয়েবসাইটে গেলেই পেয়ে যাবেন। আপাতত হাওড়ার নবান্ন থেকে পূর্ব কলকাতার ই এম বাইপাস, বিমানবন্দর, ডানলপ, সল্টলেক ছাড়াও গোটা কলকাতায় এই অ্যাপের মাধ্যমে খাদ্যসামগ্রী মিলবে। সল্টলেকের মৃত্তিকা ভবনের রান্নাঘর থেকে বিভিন্ন জেলার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের তৈরি খাবার শহরবাসীর বাড়িতে পৌঁছে যাবে। প্রসঙ্গত, অতিমারী আবহ এখনও যায়নি। উপরন্তু ওয়ার্ক ফ্রম হোম হোক কিংবা অফিস-কাছারি, এর মাঝেই কাজের চাপে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। তাই বাজারঘাট করা অনেকের পক্ষেই অসম্ভবপর হয়ে উঠেছে। বাজারে ভেজাল সবজি, মাছ-মাংসর আনাগোনাতেও বিরক্ত ভোজনরসিকরা। এমতাবস্থায় রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ যে বেজায় প্রশংসনীয়, তা বলাই বাহুল্য।
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সামগ্রিক এলাকা উন্নয়ন পর্ষদের ২২টি খামার রয়েছে। সেখানে জৈব পদ্ধতিতে বিভিন্ন সবজিপাতির চাষ হয়। বর্ধমানের ওড়গ্রাম, কালনা থেকে পুরুলিয়ায় পর্ষদের খামারে কড়কনাথ মুরগি, বনমুরগি, টার্কি এবং ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট প্রজাতির ছাগল প্রতিপালন করা হয়। পাশাপাশি পর্ষদের অধীনস্থ জলাশয়ে মাছও চাষ হচ্ছে। কলকাতাবাসীরা অ্যাপের মাধ্যমেই ওই সমস্ত খাটি আনাজ ও মাছ-মাংসের অর্ডার দিতে পারবেন।
মমতা সরকারের নয়া উদ্যোগ 'নেচারবাজার' প্রসঙ্গে পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, "করোনার সংক্রমণ থেমে নেই। তার উপরে ছোট পরিবারে বাজার করার সময় পাওয়াও সমস্যার। মানুষের সুবিধায় সারা কলকাতায় এই পরিষেবা দেওয়া হবে।" এর পাশাপাশি তিনি এও জানিয়েছেন যে, শহরের নামী রেস্তরাঁর পাচকদের দিয়ে ইতিমধ্যেই স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মেয়েদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া, মৃত্তিকা ভবনের রান্নাঘরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপরেও জোর দেওয়া হচ্ছে।