চৈত্রের তীব্র দাবদাহে নাজেহাল মানুষ চাতক পাখির মত একটু বৃষ্টির অপেক্ষায় দিন গুনছে। চৈত্র পেরিয়ে বৈশাখের মাঝামাঝি হতে চলল দেখা নেই বৃষ্টির। তীব্র গরমে নাকাল সাধারণ মানুষ। পরিসংখ্যান বলছে প্রায় ৫৫ দিন পেরিয়েছে কিন্তু বৃষ্টির দেখা মেলেনি।
সাধারণত এপ্রিল মাসের তথ্য অনুসারে কলকাতায় গড়ে প্রায় ৫৮.৯ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়ে থাকে। তবে এবার একফোঁটা বৃষ্টি হয়নি এপ্রিলে। তাছাড়া এপ্রিল মাসে কলকাতাবাসী সাক্ষী থাকে ২ থেকে ৩টি কালবৈশাখীরও। তবে এবার সেই কালবৈশাখীরও কোনও দেখা মেলেনি। ২৯ এপ্রিলের পর বিপরীত ঘূর্ণাবর্তের অবস্থান পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া ক্ষীণ বদলের আশা করছেন আলিপুর আবহাওয়া দফতর। আর এই হাত ধরেই আগামী ২ মে থেকে ৫ মে'র মধ্যে কলকাতায় বৃষ্টির অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এমনটাই জানাচ্ছে আলিপুর হাওয়া অফিস।
তার আগে চলতি মাসের বাকি দিনগুলিতে বৃষ্টির আর সম্ভাবনা নেই দক্ষিণবঙ্গে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। এদিকে গরমে সতর্কতা জারি করেছে নবান্নও। ইতিমধ্যে গরম থেকে বাঁচতে স্কুলগুলিও তাদের ক্লাস সকালে পরিচালিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বেশ কিছু জেলায় তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা আম-আদমির। বিশেষজ্ঞদের দাবি জলবায়ু পরিবর্তনের ফলেই আবহাওয়ার এই খামখেয়ালি।
আরও পড়ুন অস্বস্তি বাড়িয়ে আগামী ৪৮ ঘণ্টা তাপপ্রবাহ, সোম-মঙ্গল বৃষ্টির সম্ভাবনা দক্ষিণবঙ্গে
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূমের কোথাও কোথাও ৪২-৪৩ ডিগ্রির কাছে পৌঁছেছে তাপমাত্রার পারদ। কলকাতাতেও ইতিমধ্যেই বেশ কয়েক জনের প্রচণ্ড গরমে অসুস্থ হওয়ার খবর মিলেছে। এদিকে, দক্ষিণবঙ্গে চাতকের দশা হলেও উত্তরে দিব্যি সুপ্রসন্ন বরুণদেব।
দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুর-দুয়ার, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি এই পাঁচ জেলায় গতকাল সন্ধের পর ভাল বৃষ্টি হয়েছে। কোথাও কোথাও শিলাবৃষ্টি হয়েছে। অন্যদিকে, প্রচণ্ড গরমে স্কুল যেতেও নাজেহাল দশা কচিকাঁচাদের। পরিস্থিতি বিবেচনা করে তড়িঘড়ি অফলাইন ক্লাস বন্ধের সিদ্ধান্ত সাউথ পয়েন্টের। আপাতত তিন দিন অফলাইন ক্লাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাপপ্রবাহের পরিস্থিতিতে ইতিমধ্যেই একাধিক স্কুল গরমের ছুটি এগিয়ে নিয়ে আসার পক্ষে সওয়াল করেছে।
কিন্তু কেন এই গরম, কী বলছে হাওয়া অফিস? দক্ষিণ-পূর্ব হওয়ার বদলে দক্ষিণ-পশ্চিম হাওয়া ঢুকছে রাজ্যে ৷ উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দুই বাতাসই শুষ্ক হওয়ায় এপ্রিলেই হাঁসফাঁস অবস্থা রাজ্যে৷ দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই রয়েছে তাপপ্রবাহের পূর্বাভাস। ২০১৬ এর পর এত শুষ্ক এপ্রিল দেখেনি কলকাতা। তবে তারই মধ্যে আশার কথা শুনিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। দফতর সূত্রে খবর আগামী সপ্তাহেই পরিস্থিতি বদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ২ মে থেকে ৫ মে’র মধ্যে কলকাতা সহ দক্ষিণ বঙ্গে বৃষ্টির সম্ভাবনার কথাও জানিয়েছে হাওয়া অফিস। এই মুহূর্তে আপাতত পুড়তেই হবে দক্ষিণবঙ্গকে।