কথাতেই আছে, ভাগের মা গঙ্গা পায় না। সেই প্রবাদই যেন সত্যি হল নিয়তি দত্তের জীবনে। ভোররাত থেকেই ঘরে পড়ে রইল মায়ের নিথর দেহ, মৃত্যু নিয়ে চলল চাপানউতোর। কিন্তু সৎকার হল না। বরং চিকিৎসক না ডেকে চলতে থাকল সম্পত্তি বন্টনের কাজ। বুধবার এমনই অমানবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ।
ঘরে মৃত মা, তার মাঝেই চলছে খুঁটি পোতার কাজ। ছবি- কৌশিক সেন
ঠিক কী হয়েছে রায়গঞ্জে?
প্রতিবেশীদের দাবি, ভোররাতে নিয়তি দত্তের মৃত্যু হলেও তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া কিংবা চিকিৎসক দেখানো কোনও কাজই করেননি তাঁর ছেলেমেয়েরা। বরং মায়ের মৃত্যুর পর জমিজমা ভাগ বাটোয়ারা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিন ছেলেমেয়ে। পরবর্তীতে পুলিশ এবং পঞ্চায়েত সদস্যরা এসে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
জানা গিয়েছে, মাস সাতেক আগে মৃত্যু হয়েছে নিয়তি দত্তের স্বামী। তারপর থেকে অসুস্থ অবস্থায় মেয়ে স্বপ্না দত্তের কাছেই থাকতেন। পাশাপাশি থাকেন নিয়তী দেবীর দুই পুত্র সন্তান আশীষ ও কমল দত্ত। চিকিৎসা শাস্ত্র ও ভারতীয় আইন মোতাবেক একমাত্র লাইসেন্সপ্রাপ্ত চিকিৎসকই পারেন যে কোনো ব্যক্তিকে মৃত ঘোষণা করতে। সেই মোতাবেক কোনো পদক্ষেপ নেয়নি নিয়তী দেবীর তিন সন্তান, এমনটাই অভিযোগ। যদিও ভাইয়েদের পাল্টা অভিযোগ স্বপ্নাদেবী মাকে চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যেতে দেননি। তবে স্বপ্না জানান, একজন চিকিৎসককে খবর দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তিনি আসতে রাজি হননি।
অপরদিকে, বোন স্বপ্নার বিরুদ্ধে মাকে নির্যাতনের অভিযোগ তুললেন দাদা আশীষ দত্ত। যদিও সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারার ব্যাপারে কিছু স্বীকার করেননি তিনি। তবে মায়ের নিথর দেহের এই ভাবে পড়ে থাকায় লজ্জ্বায় মুখ ঢাকল সভ্য সমাজ।